ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩ ১৮:৫৩ Asia/Dhaka
  • জম্মু-কাশ্মীরে চলতি বছরে গেরিলাদের সাথে সংঘর্ষে ৩১ সেনা জওয়ান নিহত

জম্মু-কাশ্মীরে চলতি বছরে গেরিলাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩১ জন সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জন সেনা নিহত হয় টহলদারি চালানোর সময়ে। এছাড়া জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষে প্রাণ হারায় ২৮ জন সেনা জওয়ান।

এদিকে, সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চে গেরিলা হামলায় ৫ সেনা জওয়ান নিহত হয়। আহত হয় আরও ২ জওয়ান। ওই ঘটনার জেরে তল্লাশি অভিযানে নেমে বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময়ে সেনা হেফাজতে সাফির হুসেন (৩৭), মুহাম্মদ শওকত (২৬) এবং শাবির আহমদ (৩২) নামে  তিন জন বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সেখানে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, পুঞ্চ এবং রাজৌরি এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার স্তরের এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি, নিহত তিন গ্রামবাসীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও নিকটাত্মীয়কে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে আজই পুঞ্চ গেছেন সেনা প্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে।

অন্যদিকে, পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) অভিযোগ করেছে, (জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি সভানেত্রী) মেহবুবা মুফতিকে গৃহবন্দি করা হয়েছে  এবং বাড়ির বাইরে তালা দেওয়া হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেহবুবা মুফতি পুঞ্চের নিহত বেসামরিক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।

এক পরিসংখ্যানে প্রকাশ, চলতি বছরে  জম্মু-কাশ্মীরে অনেকগুলো সংঘর্ষ হয়েছে,  তবে ৯টি সংঘর্ষ এমন ছিল যাতে সেনা জওয়ানরা নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি সংঘর্ষ হয়েছে জম্মু বিভাগে এবং ৩টি কাশ্মীর উপত্যকায়। চলতি বছরে, জম্মুর পুঞ্চ এবং রাজৌরিতে সংঘর্ষে ২১ সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। যেখানে উপত্যকায় অভিযান চলাকালে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ সেনা জওয়ান।

চলতি বছরের মার্চ, জুন, জুলাই ও অক্টোবরে কোনো সেনা প্রাণ হারাননি। ফেব্রুয়ারি মাসে একজন সেনা শহীদ হন। একই সময়ে এপ্রিল, মে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ৫ জন করে সেনা নিহত হয়েছে। এছাড়া সেপ্টেম্বরে চারজন এবং আগস্টে তিনজন সেনা নিহত হয়েছেন। একই সময়ে, এ বছরের জানুয়ারিতে, উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়াড়ায় একটি রুটিন তল্লাশি অভিযান চলাকালীন, গভীর খাদে পড়ে একজন জেসিও র‍্যাঙ্কের কর্মকর্তা এবং দুই সেনার মৃত্যু হয়েছিল।

গত ফেব্রুয়ারিতে, পুলওয়ামার অবন্তিপোরায় সংঘর্ষে হিমাচল প্রদেশের এক জওয়ান নিহত হন। ৫ এপ্রিল পুঞ্চের ভাট্টা ধুরিয়ানে গেরিলা হামলায় ৫ সেনার মৃত্যু হয়। গেরিলারা সেনাবাহিনীর গাড়িতে গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালায়। মে মাসে রাজৌরিতে ‘আইইডি’ বিস্ফোরণে নিহত হয় ৫ সেনা। এই সেনারা রাজৌরির জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল। আগস্টে কুলগামে গেরিলাদের সাথে সংঘর্ষে ৩ জন জওয়ান  নিহত হয়। সেপ্টেম্বরে রাজৌরির নারলা গ্রামে একটি সংঘর্ষে একজন সেনা এবং একটি সেনা কুকুর নিহত হয়েছিল। এছাড়াও দক্ষিণ কাশ্মীরের কোকেরনাগে গেরিলাদের সাথে সংঘর্ষে একজন কর্নেল এবং একজন মেজরসহ তিন জওয়ান  নিহত হয়।

নভেম্বরে রাজৌরির কালাকোটে ৩০ ঘন্টার সংঘর্ষে দুই ক্যাপ্টেনসহ ৫ সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়। চলতি ডিসেম্বরে পুঞ্চে একটি অতর্কিত হামলায় গেরিলারা দুটি সেনা গাড়িকে টার্গেট করে। এতে ৫ জওয়ান নিহত এবং ২ জন আহত হয়েছে। এই সেনারা তল্লাশি অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছিল। সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পুঞ্চ সফর করছেন সেনা প্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে।#    

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/২৫             

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ