অসমে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের হুমকি, কমান্ডো বাহিনীর টহলদারি
(last modified Sat, 02 Mar 2024 12:00:37 GMT )
মার্চ ০২, ২০২৪ ১৮:০০ Asia/Dhaka
  • অসমে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের হুমকি, কমান্ডো বাহিনীর টহলদারি

ভারতে বহুলালোচিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ/ক্যা)-এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেই ‘সিএএ’ বাস্তবায়ন করার কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ওই ইস্যুতে তৎপরতার মধ্যে বিজেপিশাসিত অসমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) থেকে অসমের গুয়াহাটি শহরকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। সকালে দিসপুরে টহল দিয়েছে নবনিযুক্ত কমান্ডো বাহিনী।

পুলিশের মহাপরিচালক জিপি সিংহ এক বার্তায় ২০১৯ সালে সিএএ বিরোধী আন্দোলনে ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ২০১৯ সালের পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া হবে না। গুয়াহাটিবাসীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। জেকনো পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখতে পুলিশ অঙ্গীকারবদ্ধ।

অন্যদিকে, অসম জাতীয় পরিষদের সভাপতি লুরিনজ্যোতি গগৈ বলেছেন, তারা একটা যুদ্ধে নেমেছেন। দেশের গণতন্ত্র ও জাতির স্বাভিমান রক্ষার যুদ্ধ। তাই পুলিশের কোনো চাপেই দলীয় নেতা-কর্মীরা বিচলিত হবেন না। প্রসঙ্গত, ‘আসু’ এবং অসম জাতীয় পরিষদের দাবি- তাদের নেতা-কর্মীদের থানায় ডেকে পাঠিয়ে তারা আন্দোলন করবেন না বলে মুচলেকায় সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা অবশ্য বলেছেন, ওই আইনে আপত্তি থাকলে রাজ্যে ক্যা-বিরোধী আন্দোলন না করে সংশ্লিষ্ট পক্ষ সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন। কিন্তু ক্যা-বিরোধীরা এতে কান না দিয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন।   

গতকাল (শুক্রবার) ক্যা’র বিরুদ্ধে অসমের কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি এবং ছাত্র মুক্তি সংগ্রাম সমিতি যৌথভাবে গোলাঘাটে মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। ছাত্র মুক্তি সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পিন্টু গগৈ বলেছেন, কোনভাবেই অসমে ক্যা কার্যকর করতে দেওয়া হবে না।   

গত বৃহস্পতিবার অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু) ও ৩০টি উপজাতীয় সংগঠন গুয়াহাটিতে এক বৈঠক করেছে।

পরবর্তীতে এক সংবাদ সম্মেলন তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই আইন তারা মানবে না৷ এ সময়ে ‘আসু’র প্রধান উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য, সভাপতি উৎপল শর্মা ও সাধারণ সম্পাদক শঙ্করজ্যোতি বড়ুয়াসহ ৩০টি আদিবাসী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, সিএএ প্রয়োগের বিরুদ্ধে ৪ মার্চ রাজ্যজুড়ে মোটরবাইক মিছিল করা হবে। একইভাবে  যেদিন 'সিএএ' কার্যকর হবে, সেই বিধির অনুলিপি পোড়ানো হবে। ‘সিএএ’ বিধি  কার্যকর হওয়ার পরের দিন জেলা সদরে মশাল মিছিল বের করা হবে।      এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, আগামী ৮ মার্চ অসমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কর্মসূচি রয়েছে৷ তার আগে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত পাঁচজনের স্মরণে কর্মসূচি নেওয়া হবে৷ ৯ মার্চ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত পালিত হবে ১২ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি।

‘আসু’র প্রধান উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য বলেছেন, তারা ‘সিএএ’ মানবেন না। অবৈধ বাংলাদেশীদের রক্ষাকারী, অসাংবিধানিক, সাম্প্রদায়িক, আদিবাসী বিরোধী, অসম চুক্তি লঙ্ঘনকারী 'সিএএ'-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন আগেও ছিল এবং ভবিষ্যতেও চলবে বলেও মন্তব্য করেছেন সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য। অন্যদিকে, ‘অসম বিরোধী এবং অসমীয়া বিরোধী আইন কোনও কারণেই মেনে নেওয়া হবে না। অসম কোনও অবস্থাতেই বিদেশিদের বোঝা নেবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন, ‘আসু’ সভাপতি উৎপল শর্মা এবং সাধারণ সম্পাদক শঙ্করজ্যোতি বড়ুয়া। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমআরএইচ/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।           

   

ট্যাগ