নিষেধাজ্ঞার মাঝেও ইরান কী পরিমাণ প্রযুক্তিগত অগ্রগতি লাভ করেছে?
-
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে ইরান
পার্স টুডে: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দেশীয় সক্ষমতা, প্রতিরোধ ও জাতীয় আত্মনির্ভরতার ওপর ভিত্তি করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইরানকে উন্নত প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করলেও, ইরানি জনগণ তাদের প্রতিরোধ, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে। আজ ইরান শুধু প্রযুক্তিগতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, বরং পুরো অঞ্চলে প্রযুক্তি রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। ই-গভর্ন্যান্স, মহাকাশ প্রযুক্তি, ন্যানো-টেকনোলজি ও বায়োটেকনোলজি ইরানের সাফল্যের কয়েকটি দিক মাত্র। নিচে ইরানের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কিছু উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হলো।
ডিজিটাল প্রযুক্তি
নিষেধাজ্ঞার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ইরান তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অঞ্চলের অন্যতম নেতৃত্বস্থানীয় দেশে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (ITU) রিপোর্ট অনুযায়ী, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আইসিটি সূচকে ইরানের অবস্থান শীর্ষে।
জাতীয় তথ্য নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে ইরান একটি স্বতন্ত্র, নিরাপদ ও স্বনির্ভর ইন্টারনেট পরিকাঠামো তৈরি করেছে। এছাড়া, ইরানের বহু স্টার্টআপ ও প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলো কার্যত নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর করে দিয়েছে।
পারমাণবিক প্রযুক্তি
ইরান চিকিৎসা ক্ষেত্রে পারমাণবিক প্রযুক্তি ও মলিকুলার ইমেজিংয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে। মার্কিন ও পশ্চিমা চাপ সত্ত্বেও ইরান পারমাণবিক জ্বালানির সম্পূর্ণ চক্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
ইরান পারমাণবিক জ্বালানির সম্পূর্ণ চক্রে দক্ষতা অর্জন করেছে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও চিকিৎসাবিষয়ক আইসোটোপ উৎপাদনে সফল হয়েছে। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএস) বারবার ঘোষণা করেছে যে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ
মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি
SIPRI ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, সামরিক ড্রোন উৎপাদনে ইরান বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে।
'শাহেদ ১৩৬' ও 'আবাবিল'-এর মতো ড্রোন তৈরি এবং 'খাইয়াম' ও 'পার্স-১' উপগ্রহ সফলভাবে উৎক্ষেপণ, মহাকাশ ক্ষেত্রে ইরানের সক্ষমতা প্রমাণ করে।
ন্যানো ও বায়োটেকনোলজি
StatNano অনুসারে, ২০২৪ সালে ইরান ন্যানোটেকনোলজি গবেষণাপত্র প্রকাশে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে।
করোনা সংকটকালে ইরান নিজস্ব ভ্যাকসিন “বারাকাত, পাস্তুরকোভ্যাক ও ফাখরা” তৈরি করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত ব্যর্থ করে দিয়েছে ইরান।
ই-গভর্ন্যান্স ও ডিজিটাল প্রশাসন
ইরান ই-গভর্ন্যান্স বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে বড় সাফল্য অর্জন করেছে।
“সেজাম” (SEJAM) নামক ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে শত শত সরকারি সেবা ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে।
অনলাইন ট্যাক্স সিস্টেম, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, পাসপোর্ট আবেদন ও বিচার বিভাগীয় সেবা এখন পুরোটাই ডিজিটাল।
“ইরানকোড” ইলেকট্রনিক আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে স্মার্ট গভর্নেন্সের দিকে এগোচ্ছে দেশটি।
পানি প্রযুক্তি
ইরানের প্রেসিডেন্সিয়াল অফিস ফর সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির জলবায়ু ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হাম্মাত জানিয়েছেন, পানি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ইরান এখন বিশ্বের ৬ষ্ঠ স্থানের অধিকারী।#
পার্সটুডে/এমএআর/৯