ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ওয়াশিংটন সবসময় নয়াদিল্লির পাশে থাকবে: মাইক পম্পেও
ভারত ও চীনের মধ্যে চলমান সীমান্ত সংঘাত ও উত্তেজনার আবহে ওয়াশিংটন ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবসময়ই নয়াদিল্লির পাশে থাকবে বলে জানিয়ে দিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। আজ (মঙ্গলবার) নয়াদিল্লিতে তিনি এ সংক্রান্ত মন্তব্য করেন।
গতকাল (সোমবার) প্রতিরক্ষা ও সামরিক ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা বাড়াতে নয়াদিল্লিতে বিশেষ বৈঠকে যোগ দিতে মাইক পম্পেওর সঙ্গে এসেছেন সেদেশের প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক টি এসপার।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মাইক পম্পেও বলেন, ‘সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় আমেরিকা সবসময় ভারতের পাশে থাকবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের পারস্পারিক দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্ক প্রসারিত করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাব।’
চীনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা ও জনসাধারণ জানে যে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, স্বচ্ছতা, স্বাধীনতা, উন্নয়ন এসবের বন্ধু নয় চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি)। আমি খুশি যে, সিসিপি থেকে সমস্ত রকম বিপদের বিরুদ্ধে আমরা একযোগে কাজ করছি।’
সম্প্রতি গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সেনাদের মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। দিল্লিতে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে গিয়ে গালওয়ানে নিহত ২০ ভারতীয় সেনা জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানান মাইক পম্পেও ও মার্ক টি এসপার।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক টি এসপার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও সাক্ষাত করেছেন। এসময়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা চুক্তি, উপগ্রহ চিত্র, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, চীনা সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, লাদাখের পরিস্থিতি, দক্ষিণ চীন সাগরে যুদ্ধের সম্ভাবনা, চীনের বিরুদ্ধে কোয়াড গোষ্ঠীর সামরিক পদক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক টি এসপার। দু’দেশের নেতাদের মধ্যে বৈঠকে বেসিক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কোঅপারেশন চুক্তি বা ‘বিইসিএ’ চুক্তি সই করেছে দুই দেশ। ওই চুক্তির বিষয়ে আলোচনার ভিত্তিতে দুইদেশ একমত হওয়ার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ বলেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানে এই চুক্তি নতুনমাত্রা উন্মুক্ত করবে। ওই চুক্তির ফলে আমেরিকা ও ভারতের সামরিক বাহিনী নিজেদের মধ্যে উচ্চ সামরিক প্রযুক্তি, রসদ এবং ভূ-স্থানিক মানচিত্র ও সংবেদনশীল ভৌগোলিক এলাকার তাৎক্ষণিক তথ্য ভাগ করে নিতে পারবে বলে জানা গেছে।
গণমাধ্যমের একটি সূত্রে প্রকাশ, ‘বিইসিএ’ চুক্তি ভারতের পক্ষে মার্কিন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কিত প্রযুক্তি পাওয়ার পথকে সহজতর করবে। একই সাথে আমেরিকা থেকে ভারত সংবেদনশীল স্যাটেলাইটের ডেটাও নিতে সক্ষম হবে, যাতে শত্রু দেশগুলোর সমস্ত কার্যকলাপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/২৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।