কথাবার্তা: কৃষক আন্দোলন- বরফ গলেনি, মোদিকে পাল্টা চিঠি কৃষকদের
(last modified Sun, 20 Dec 2020 10:58:02 GMT )
ডিসেম্বর ২০, ২০২০ ১৬:৫৮ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ । আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২০ ডিসেম্বর রোববারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • সেতু নির্মাণ প্রকল্প, আন্দাজের মাশুল-২,৫৩১ কোটি টাকা-প্রথম আলো
  • সীমান্তে হত্যা নিয়ে মন্ত্রীদের বক্তব্য স্বাধীনতাবিরোধী-বিএনপি-দৈনিক যুগান্তর
  • বঙ্গবন্ধুর ভাবনা ছিল সকল মানুষকে নিয়ে ভালো থাকা-স্থানীয় সরকার মন্ত্রী- দৈনিক ইত্তেফাক
  • নদী সুরক্ষা-দখলমুক্তিই শেষ কথা নয় -সমকাল
  • রাজধানীর সড়কে রোজ ক্ষতি ১৫৩ কোটি টাকা-কালের কণ্ঠ
  • শিশু সামিউল হত্যা: প্রেমিকসহ মায়ের মৃত্যুদণ্ড-দৈনিক মানবজমিন
  • পিকে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে-দুদক-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:    

  • আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের যোগ নেই' মোদিকে পালটা চিঠি কৃষকদের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
  • হাওয়ায় ভোট জেতা যাবে না, সংগঠনই মূল, অমিত-পরামর্শ -দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • একজন শুভেন্দুকে নিয়েই ২৫০–র বেশি আসনের দাবি’, সাংবাদিক সম্মেলনে কটাক্ষ তৃণমূলের -দৈনিক আজকাল

পাঠক/শ্রোতা ! এবারে চলুন, বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। 

করোনায় সব দেশের প্রবৃদ্ধি মাইনাস, বাংলাদেশ প্লাসে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী-দৈনিক যুগান্তর/সমকাল

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের অর্থনীতিক প্রবৃদ্ধি মাইনাসে চলে গেছে। অথচ করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় আমাদের দেশের অর্থনীতি পরিস্থিতি ভালো। বাংলাদেশের অর্থনীতি সূচক এখনও ৫ পার্সেন্ট প্লাসে আছে। আর  স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন,বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকলে দেশের দরিদ্রতার হার যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও কম হবে।

সেতু নির্মাণ প্রকল্প-আন্দাজের মাশুল ২,৫৩১ কোটি টাকা জনপ্রতিনিধিদের চাপে সমীক্ষা ছাড়া সেতু অনুমোদন, এখন পরিবর্তন করতে হচ্ছে সেতুর দৈর্ঘ্য, বাড়াতে হচ্ছে উচ্চতা।-দৈনিক প্রথম আলোর খবরটিতে আরও লেখা হয়েছে,

প্রায় চার বছর আগে সমীক্ষা ছাড়াই অনুমোদন দেওয়া ৯৪টি সেতুর কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। সে সময় একেকটি সেতুর দৈর্ঘ্য ঠিক করা হয়েছিল অনুমানের ওপর ভর করে। আর খরচ ধরা হয়েছিল ধারণার ওপর ভিত্তি করে। এখন আর কোনো কিছুই মিলছে না। নদীর অবস্থানগত কারণে কোনো কোনো সেতুর উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে, উচ্চতা বাড়াতে গেলে সেতুর দৈর্ঘ্য বাড়ছে এবং তাতে খরচও বাড়ছে।

আগামী বছরের জুনের মধ্যে এসব সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা ছিল। অনুমান ও ধারণা না মেলায় এখন সেতুগুলোর কাঠামো পরিবর্তন করতে হচ্ছে। ফলে ৩ হাজার ৯২৬ কোটি টাকার প্রকল্পটির বর্তমান ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাড়তি খরচ হবে ২ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। এতে আগামী ২০২৪ সালের মধ্যেও কাজ শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

আইন-আদালত বিষয়ক দুটি খবর:

ইন্টারপোলে পি কে হালদারের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা-দৈনিক মানবজমিন

পিকে হালদারের টাকা পাচার

বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো হয়েছে। ৭০-৮০ জন নারীর একাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করেছেন পি কে হালদার। আজ রোববার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান একথা জানান।

খুরশীদ আলম খান জানান, পিকে হালদারকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে রুল জারির পর তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের বিষয়ে আমার কাছে আরও কিছু তথ্য এসেছে। তথ্যে জানতে পেরেছি, তিনি অবিবাহিত। অবিবাহিত থাকার সুবাদে পাচারের কোটি কোটি টাকা পিকে হালদার তার কিছু গার্লফ্রেন্ডের একাউন্টে পাঠিয়েছেন। এর সংখ্যা ৭০ থেকে ৮০ জন হতে পারে। এগুলো দুদকের তদন্ত কর্মকর্তাকে দেবো অনুসন্ধানের জন্য।

প্রশান্ত কুমার হালদার ব্যাংক পাড়ায় যিনি পরিচিত পি কে হালদার নামে। শুধু নিজ প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১৫শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। গণমাধ্যমে একের পর এক অনিয়মের ফর্দ প্রকাশের পর থেকেই লাপাত্ত পিকে হালদার। বলা হচ্ছে, তল্পিতল্পা গুটিয়ে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন বেশ আগেই। পিপলস লিজিংসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে।

গত ৮ই জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। মামলার এজাহারে ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা পাচারেরও অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। গত ২৫শে অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা ছিল। বিমানবন্দরে অবতরণ করামাত্রই তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

শিশু সামিউল হত্যায় পরকীয়া প্রেমিকসহ মায়ের প্রাণদণ্ড-দৈনিক আমাদের সময়

রাজধানীর আদাবরে চাঞ্চল্যকর শিশু খন্দকার সামিউল আজিম ওয়াফি (৫) হত্যা মামলায় পরকীয়া প্রেমিকসহ মা আয়েশা হুমায়রা এশার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি এশার কথিত প্রেমিক শামসুজ্জামান আরিফ ওরফে বাক্কু। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৪–এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন।

সীমান্ত হত্যা নিয়ে মন্ত্রীদের বক্তব্য স্বাধীনতাবিরোধী: বিএনপি-দৈনিক যুগান্তর

সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হত্যাকাণ্ড নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বক্তব্য স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ববিরোধী বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।  

রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ মন্তব্য করেন। বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, কিছু দিন আগে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন– ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কাঁটাতারের বেড়া কেটে গরু আনতে গিয়ে ইন্ডিয়ার গুলি খেয়ে মারা যায়, তার জন্য দায়দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নেবে না।’

সীমান্ত হত্যার দায় বাংলাদেশ সরকারও এড়াতে পারে না উল্লেখ করে রিজভী বলেন, যারা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশিদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা, উল্টো পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে দেশের মানুষকে হত্যা করারই ন্যায্যতা দান করছে। এ দুই মন্ত্রীর বক্তব্য দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী। তিনি বলেন, নতজানু মিডনাইট অটো সরকারের মন্ত্রীদের এসব বক্তব্য শুনলে মনে হয়, তারা স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রী নন, তারা অন্য কোনো দেশের প্রতিনিধি।

সীমান্তবাসী সচেতন হলে কমতে পারে সীমান্ত হত্যা : বিজিবি ডিজি-দৈনিক ইত্তেফাক

সীমান্তের জনগণকে সচেতন এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারলে সীমান্ত হত্যা কমবে বলে মনে করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। বিজিবি দিবস-২০২০ উপলক্ষে রবিবার সকালে রাজধানীর পিলখানায় স্মৃতিস্তম্ভ ‘সীমান্ত গৌরবে’পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিজিবির ডিজি বলেন, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিজিবি সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে।

নদী সুরক্ষা-দখলমুক্তিই শেষ কথা নয়-দৈনিক সমকালের সম্পাদকীয়

এতে লেখা হয়েছে,দেশে প্রবাহিত চার শতাধিক নদনদী দখলে জড়িত কমবেশি অর্ধলাখ ব্যক্তির যে তালিকা জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন জনপরিসরে প্রকাশ এবং সরকারের কাছে উপস্থাপন করেছে- সেখানে কারা আছে এই প্রশ্ন অবান্তর। বরং প্রশ্ন করা যেতে পারে যে, কারা নেই? শনিবার সমকালে প্রকাশিত এক শীর্ষ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রভাবশালীরা ছাড়াও জনপ্রতিনিধি ও আমলারাও জড়িত নদী দখলের সঙ্গে। আমরা জানি, নদী সুরক্ষার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে এভাবে তালিকা প্রকাশের গুরুত্ব অপরিসীম। বস্তুত এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে আমরা অনেক দিন ধরেই এই পরামর্শ দিয়ে আসছিলাম। এভাবে জনসমক্ষে তালিকা প্রকাশ হলে এর যে 'সামাজিক চাপ' তৈরি হয়- তাতে আর কিছু না হোক, দখলদারের অন্তত 'চক্ষুলজ্জা' হওয়ার কথা। কিন্তু এ কথাও সত্য যে, চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনি। তালিকাটি এমন সময় প্রকাশ হয়েছিল, যখন ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো নগরসংলগ্ন নদীগুলোতে দখল উচ্ছেদ অভিযানও চলছিল। অতীতের মতো স্থানবিশেষে নয়, বরং নদীর সমান্তরালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হওয়ায় আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, এবারের উদ্ধারপর্ব টেকসই হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, অনেক এলাকাই পুনর্দখল হয়ে গেছে। ফলে সমকালের আলোচ্য প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রকাশিত পরিবেশকর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের এই বক্তব্য যথার্থ যে, দখলমুক্তির পর উদ্ধারকৃত জায়গা সংরক্ষণেও সমান মনোযোগী হতে হবে। অস্বীকার করা যাবে না যে, নগরসংশ্নিষ্ট নদীগুলো দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার সহজ নয়। তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা ছাড়াও দীর্ঘদিনের ঔদাসীন্যে তৈরি হয়েছে নানা আইনি জটিলতাও। দখলকৃত অনেক এলাকায় কেবল স্থাপনাই তৈরি হয়নি; সেগুলোর 'বৈধ' দলিলপত্রও অনুমোদন করেছে খোদ সরকারের ভূমিবিষয়ক সংস্থাগুলো।

মালিকানাও একাধিকবার হাতবদল হয়েছে। পাশাপশি এই বিপুল এলাকায় ভাঙচুর ও উচ্ছেদ অভিযানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়াও মনে রাখতে হয়। তারপরও কঠিনেরে ভালোবাসার বিকল্প নেই। যে কোনো মূল্যে দখল উচ্ছেদ করতেই হবে। একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, নদীর দখলমুক্তিই শেষ কথা নয়। দখলমুক্তির মাধ্যমে নদীকে দৈহিকভাবে উদ্ধারের পাশাপাশি দূষণমুক্তির মাধ্যমে জৈবিকভাবেও উদ্ধার করতে হবে। আমাদের স্বচ্ছতোয়া নদীগুলো ক্রমেই সুপেয় পানি, সেচকাজ, গৃহস্থালি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বিনষ্ট হচ্ছে মৎস্যসম্পদ, নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে রোগব্যাধি। নির্মম পরিহাসের বিষয়, যে শিল্পদূষণে নদনদীর পানি ও জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট হচ্ছে, সেই প্রবাহ শিল্প উৎপাদনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নদীর পানি দূষিত হওয়ায় তা শিল্পের জন্যও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ফলে চাপ বাড়ছে ভূগর্ভস্থ জলস্তরে। আর তার সুদূরপ্রসারী ক্ষতির কথা আমরা জানি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আশা করি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোও দূষণবিরোধী আইন ও বিধির যথার্থ প্রয়োগে উদ্যোগী হবে। একই সঙ্গে আমাদের শিল্পপতিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও জরুরি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্প উদ্যোগের যে ভূমিকা, নদীদূষণ বন্ধের মাধ্যমে তা যে আরও গৌরবোজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে, তাদের বোঝাতে হবে। শিল্পদূষণের পাশাপাশি নাগরিকদূষণও বন্ধ করার বিকল্প নেই।

আমরা গভীর হতাশা ও উদ্বেগের সঙ্গে দেখি যে, প্রায় সব নগর ও শহরে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত শোধনাগার নেই। নাগরিক বর্জ্যের একটি বড় অংশ সরাসরি নদীতে ফেলা হয়। নগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি সংস্থাই যদি এভাবে নদীদূষণ করে, তারচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে? আমরা মনে করি, নদনদীর অন্যান্য সংকট মোচনেও এখনই নজর দিতে হবে। আমরা জানি, প্রাকৃতিক ভাঙন রোধে আগের তুলনায় মনোযোগ, বরাদ্দ, বাস্তবায়নে দক্ষতা ও নজরদারি বাড়লেও দেশের প্রায় সর্বত্র নির্বিচার বালু উত্তোলন মনুষ্যসৃষ্ট ভাঙনের ঝুঁকি আগের তুলনায় বাড়িয়ে দিয়েছে। ওদিকে ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীগুলোতে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠারও বিকল্প নেই। এখন সময় এসেছে নদী সংকটের সামগ্রিক সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার। একটি সংকটে বেশি মনোযোগ দিয়ে অপরাপর সংকটে ঔদাসীন্য কাঙ্ক্ষিত সুফল নিয়ে আসবে না।

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত: 

আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের যোগ নেই’, মোদিকে পালটা চিঠি কৃষকদের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

কৃষক আন্দোলন

চিঠির পালটা চিঠি দিলেন কৃষকরা। তাঁদের আন্দোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের সেই অভিযোগ উড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিলেন আন্দোলনরত কৃষকরা (Farmer’s Protest)।

রবিবার ২৪ দিনে পা দিল দিল্লি সীমানায় কৃষক আন্দোলন। শুক্রবার তাঁদের উদ্দেশে খোলা চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। সেই চিঠি পড়ে দেখতে হাতজোড় করে অনুরোধ করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। তারপরেও বরফ গলেনি। বরং সেই চিঠি কৌশলকেই এবার হাতিয়ার করলেন আন্দোলনকারীরা।

শনিবার রাতে সরকারকে একটি চিঠি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। লিখেছেন, “আমাদের দাবিগুলি খতিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন এই আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের যোগ নেই। বারবার প্রধানমন্ত্রীও এই অভিযোগ করেছেন। কিন্তচু আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কোনও যোগাযোগ নেই।” তাঁদের আরও অভিযোগ, কৃষিমন্ত্রী লেখা চিঠির সঙ্গে আসল আইনের কোনও মিলই নেই। সরকারের চিঠিতে দাবি করা হয়ছিল, এই আইন কার্যকর হলে কৃষকদের জমি কেউ কেড়ে নেবে না। অথচ চুক্তি-২০২০ অন্য কথা বলছে।

উল্লেখ্য, হিন্দিতে লেখা আট পাতার ওই চিঠিতে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, ‘দেশের কৃষিমন্ত্রী হিসেবে আমার উচিত প্রতিটি কৃষকের ভুল ধারণা ভেঙে তাঁদের চিন্তামুক্ত রাখা। তাই কেন্দ্র ও কৃষকদের মধ্যে বিভাজনের দেওয়াল তৈরি করার যে ষড়যন্ত্র চলছে তার পর্দা ফাঁস করা আমার কর্তব্য বলে মনে করি। কিছু মানুষ নতুন আইন নিয়ে মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে। কৃষকদের উত্তেজিত করার জন্য এমএসপি থাকবে না বলে প্রচার করছে। কিন্তু, এই খবর ভিত্তিহীন। কোনওভাবেই এই ধরনের গুজবে কান দেবেন না। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার এবিষয়ে লিখিত আকারে প্রতিশ্রুতি দিতেও রাজি রয়েছে।’এদিন এর পালটা চিঠি দিলেন কৃষকরা।

কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকেও কাটল না জট, তিন IPS অফিসারকে ডেপুটেশনের বিরোধিতায় অনড় রাজ্য-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

তিন আইপিএস অফিসারকে (IPS Officer) ডেপুটেশনে চেয়েছে কেন্দ্র। তবে এই সিদ্ধান্তে সহমত নয় রাজ্য। এই ইস্যু নিয়ে তোলপাড় রাজনীতির আঙিনা। এ বিষয়ে আলোচনায় শুক্রবার ভারচুয়াল বৈঠকে বসে কেন্দ্র ও রাজ্য। তবে সেই বৈঠকে মিলল না সমাধানসূত্র। পরিবর্তে ঝুলেই রইল জেপি নাড্ডার সফরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিন আইপিএস অফিসারের ডেপুটেশন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত।

দৈনিক আনন্দবাজার এ সম্পর্কে লিখেছে, দিন দু’য়েক আগে কৃষকদের খোলা চিঠি লিখেছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। চিঠিতে কৃষি আইন নিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর পাশাপাশি আন্দোলনে বিরোধী দলগুলির ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছিল। এ বার কেন্দ্র সরকারকেই পাল্টা খোলা চিঠি লিখল কৃষক সংগঠনগুলো। চিঠিতে তারা জানিয়েছে, এটা সম্পূর্ণ কৃষকদের আন্দোলন। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। কেউ তাঁদের ইন্ধনও দিচ্ছে না। রাজনৈতিক ইন্ধনের যে অভিযোগ উঠছে সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। 

কেন্দ্রকে উদ্দেশ করে এই চিঠিতে তারা বলেছে, ‘আপনারা যদি আমাদের দাবিগুলো ভাল ভাবে খতিয়ে দেখেন, তা হলে বুঝতে পারবেন যে, এই দাবিগুলোর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই।

একজন শুভেন্দুকে নিয়েই ২৫০–র বেশি আসনের দাবি’, সাংবাদিক সম্মেলনে কটাক্ষ তৃণমূলের-দৈনিক আজকাল

শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলে তাঁরা অবাক হননি। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে একথাই জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি বলেন, ‘শুভেন্দুর দলবদলের কিছু কিছু সংবাদ আমাদের কাছে আগেও ছিল। তাই আমরা তাতে হতবাক হয়ে যাইনি। কেউ কেউ গেল গেল রব তুলেছেন। আমরা সেটা মনে করি না। আমাদের একজন নেত্রী আছেন, যার নাম মমতা ব্যানার্জি। মমতার জনপ্রিয়তাই আমাদের শক্তি। আর আমাদের দল না হয় সরকারে আছে। কিন্তু সরকারে নেই দীর্ঘদিন কংগ্রেস এবং সিপিএম। তাদের দল থেকেও কয়েকজন চলে গিয়েছেন। এটা একটা রাজনৈতিক অসুখ। একটা শুভেন্দুকে নিলে কোনও ক্ষতি হবে না। একজন শুভেন্দুকে নিয়েই ২৫০–র বেশি আসন পাবে বলছে। ভাগ্যিস ৩০০ বলে দেয়নি। আমরা বলি আমরা জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা। ইতিহাস সত্যি হলে ওরা বড় জায়গায় আসতে পারবে না। আমরা এটাকে রাজনৈতিক চলে যাওয়া নয়, বলি বিশ্বাসঘাতকতা। এই বিশ্বাসঘাতকদের দলকে বাংলার মানুষ চিনে নেবে। মানুষের পাশে দাঁড়ানো হয়েছে ১০ বছর।’

হাওয়ায় ভোট জেতা যাবে না, সংগঠনই মূল, অমিত-পরামর্শ-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে বিজেপির পক্ষে হাওয়া থাকলেও তার উপরে নির্ভর করে বসে থাকলে চলবে না। জোর দিতে হবে বুথ স্তরের সংগঠনে। শনিবার নির্বাচনী কৌশল নিয়ে বৈঠকে বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বকে এমনই বার্তা দিয়ে গেলেন অমিত শাহ। অমিতের নির্দেশ, আরও বেশি করে চালিয়ে যেতে হবে জনসংযোগ কর্মসূচি, যেতে হবে বাড়ি বাড়ি। বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্যে যে বিজেপির পক্ষে একটা হাওয়া তৈরি হয়েছে তা মেনে নিয়েছেন অমিত। কিন্তু সেই সঙ্গে সতর্ক করেছেন, মজবুত সংগঠন না থাকলে হাওয়া যতই থাক তা কাজে লাগানো যাবে না। মজবুত সংগঠনের পাশাপাশি, সংগঠন পরিচালনার জন্য সঠিক কৌশল মেনে চলার উপরও অমিত গুরুত্ব দিতে বলেছেন বৈঠকে উপস্থিত দলীয় নেতাদের। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে রাতের এই বৈঠকে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। ছিলেন বাংলার দায়িত্ব থাকা ভিনরাজ্যের নেতারাও।

রাজনীতির হাওয়া মোরগ সব সময় ঠিক কথা বলে না। পোড়খাওয়া রাজনীতিক অমিত সেটা ভালভাবেই জানেন। আর সেটাই অমিত স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত রাজ্য বিজেপির এক নেতা। বুথ স্তরের সংগঠনের উপরে জোর দেওয়ার কথা এই প্রথম নয়, আগেও বলেছেন অমিত।

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
 

ট্যাগ