অক্টোবর ০৪, ২০২২ ১৯:৩৩ Asia/Dhaka

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী গতকাল (সোমবার) ইমাম হাসান আল মুজতাবা (আ.) ইউনিভার্সিটি অব অফিসার অ্যান্ড পুলিশ ট্রেনিং-এ যৌথ শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে মাহসা আমিনির মৃত্যুর অজুহাতে দেশটির সাম্প্রতিক সহিংসতা ও নৈরাজ্যের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন।

পরিকল্পিতভাবে এই নৈরাজ্য ও সহিংসতা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও তারা অন্য অজুহাত সৃষ্টি করত যাতে ফার্সি পহেলা মেহের (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশে অনিরাপত্তা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়। তিনি আরও বলেন, আমেরিকা ও ইসরাইলের এই পরিকল্পনায় তাদের বেতনভোগীরা এবং বিদেশে বসবাসরত কিছু বিশ্বাসঘাতক ইরানি সহযোগিতা করেছে। আয়াতুল্লাহ খামেনি এ সময় জোর দিয়ে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেবল ইসলামী প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধেই নয় বরং তারা একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন ইরানের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাহলভী যুগের ইরানকে খুঁজছে যারা তাদের আদেশ পালন করতো দুগ্ধদানকারী গাভীর মতো।

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের প্রতি মার্কিন নেতৃত্বাধীন বলদর্পী শক্তিগুলোর সমর্থন এবং তারা যাতে আরো বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে তার জন্য তাদের সার্বিক প্রস্তুতির ঘোষণা এবং পদক্ষেপ যেমন ইরানের ওপর থেকে আমেরিকার ইন্টারনেট সুবিধা তুলে নেয়া থেকে বোঝা যায় এসব পরিকল্পনা বিদেশ থেকে করা হয়েছে। 

প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমা বিশ্বের নেতা হিসাবে পরিচিত আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমল থেকে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগেের নীতি হিসেবে তেহরানের ওপর কেবল সব ধরনের নিষেধাজ্ঞাই আরোপ করা হয় নি বরং এখানে দারিদ্র্য ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া, ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য শত্রুরা ইরানের আভ্যন্তরীন নানা ইস্যুকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। যেমন পেট্রলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ২০১৮ সালের সহিংসতা এবং ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা ও  দাঙ্গাকে উসকে দিতে পাশ্চাত্য শক্তি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। 

তাছাড়া, ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী যারা ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের গুপ্ত হত্যা করে এবং দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় নাশকতা করে ইরানি জাতির সাথে প্রকাশ্য শত্রুুতা দেখিয়েছে তারাও আমেরিকার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইরানে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। এই অবৈধ শাসক গোষ্ঠী মাহসা আমিনির মৃত্যুর অজুহাতে ইরানে দাঙ্গা ও ফ্যাসাত ছড়িয়ে দিতে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে তারা তাদের অভ্যন্তরীণ অনুচর বিশেষ করে বিপ্লববিরোধী গোষ্ঠীর সাহায্য নিচ্ছে। এছাড়া এর আগেও ইরানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিদেশী শত্রু এবং তাদের সহযোগী অনুচরদের যোগসাজশ থাকার অনেক প্রমাণ রয়েছে।#

পার্সটুডে/এমবিএ/৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ