নৈরাজ্যকামীদের উৎসাহ দিতে ইরানের বিরুদ্ধে আবারও নিষেধাজ্ঞার মার্কিন অস্ত্র-প্রয়োগ!
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i114202-নৈরাজ্যকামীদের_উৎসাহ_দিতে_ইরানের_বিরুদ্ধে_আবারও_নিষেধাজ্ঞার_মার্কিন_অস্ত্র_প্রয়োগ!
ইরানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী কথিত প্রতিবাদীদের ওপর দমন অভিযানে ও ইরানিদের জন্য ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন রাখায় ভূমিকা রাখার অজুহাতে মার্কিন অর্থ-বিভাগ ইসলামী ইরানের স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রীসহ সাতজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। 
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
অক্টোবর ০৭, ২০২২ ২০:২৬ Asia/Dhaka
  • নৈরাজ্যকামীদের উৎসাহ দিতে ইরানের বিরুদ্ধে আবারও নিষেধাজ্ঞার মার্কিন অস্ত্র-প্রয়োগ!

ইরানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী কথিত প্রতিবাদীদের ওপর দমন অভিযানে ও ইরানিদের জন্য ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন রাখায় ভূমিকা রাখার অজুহাতে মার্কিন অর্থ-বিভাগ ইসলামী ইরানের স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রীসহ সাতজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। 

গতকালের (বৃহস্পতিবার) এই নতুন নিষেধাজ্ঞার আগে মার্কিন অর্থ বিভাগ ইরানের নৈতিক পুলিশ বাহিনী ও আরও কয়েকজন কর্মকর্তার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। মাহসা আমিনি নামের এক ইরানি কুর্দি যুবতির সাম্প্রতিক মৃত্যুর অজুহাতে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পক্ষে নেয়া এইসব পদক্ষেপ ইরানের ঘরোয়া বিষয়ে অবৈধ হস্তক্ষেপের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।

কথিত প্রতিবাদীদের সহায়তার নামে মার্কিন সরকার দেশে দেশে হস্তক্ষেপ করে দেশগুলোর সার্বভৈৗমত্ব ও আন্তর্জাতিক আইনও

লঙ্ঘন করে আসছে। মার্কিন সরকার দাবি করছে যে এই সরকার শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও তথ্য বিনিময়ের অবাধ প্রবাহের অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। অথচ ২০২১ সালে মার্কিন কংগ্রেসে হামলার ঘটনায় আমরা দেখেছি সে সময় মার্কিন জনগণের ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকার কেড়ে নিয়ে বহু দিন ইন্টারনেট-সেবা বন্ধ রাখা হয় এবং এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত একাউন্টও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার যুক্তি দেখিয়ে!

বাইডেন প্রশাসনসহ মার্কিন সরকারগুলো ইরানের ইসলামী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত নয় বলে মাঝে মধ্যে দাবি করে আসলেও এবং ইরানের ব্যাপারে কূটনৈতিক পন্থা ব্যবহারে বিশ্বাসী বলে উল্লেখ করে আসলেও বাস্তবে ইরানের ঘরোয়া বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে আসছে। বাইডেন সরকার সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে আগ্রহী বলে বেশ কয়েকবার জোরালো বার্তা দেয়ার পাশাপাশি ইরানে সরকার বিরোধী নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদেরও উস্কানি দিয়ে এসেছে। 

আসলে বিগত প্রায় পাঁচ দশকে ও তারও আগে এবং বিশেষ করে ইসলামী বিপ্লবের পর থেকেই ইরানের ইসলামী বিপ্লব ও বিপ্লবী জাতির বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারসহ পশ্চিমা সরকারগুলোর প্রাণপণ শত্রুতা আর বিষয়টি সুস্পষ্ট। মার্কিন সরকার ইসলামী বিপ্লবের পর থেকেই এ পর্যন্ত ইরানের ইসলামী সরকারের ওপর অসংখ্য একতরফা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এসেছে ভিত্তিহীন নানা বানোয়াট অভিযোগ তথা অজুহাতের ভিত্তিতে।  সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো ইরানের ওপর নজিরবিহীন ও সর্বোচ্চ মাত্রার নিষেধাজ্ঞার চাপ প্রয়োগের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও অবৈধ ও অযৌক্তিক দাবির কাছে নতজানু হয়নি ইরানের বিপ্লবী জাতি ও সরকার। খোদ্ বাইডেন সরকার ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতির ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে। অবশ্য বাইডেন সরকারও সেই একই নীতি প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে ইরানের বিরুদ্ধে প্রায়ই নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে। 

মার্কিন সরকার তার দাবি অনুযায়ী যদি ইরানি জাতির প্রতি সত্যিই সহানুভূতিশীল হত তাহলে ইরানে করোনা ভাইরাসের ব্যাপক প্রকোপের সময় ইরানে ওষুধ সামগ্রী পাঠাতে বাধা দিত না এবং ইরানে অনেক জটিল রোগের চিকিৎসার ওষুধ সামগ্রী পাঠানোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখত না। এইসব নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার পাশাপাশি মার্কিন সরকার যেসব বিদেশী কোম্পানি ও ব্যাংক ইরানের সঙ্গে লেনদেন করছে সেসব কোম্পানি ও ব্যাংকের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলোর প্রভাব ম্লান হয়ে আসায় বাইডেন সরকার ইরানের কথিত প্রতিবাদী জনগণকে সহায়তার নামে আসলে নিষেধাজ্ঞার অস্ত্রকে আবারও ধারালো করতে চায়। কিন্তু ইরানের অতীত প্রতিরোধের ইতিহাস থেকে এটা স্পষ্ট যে ইসলামী এই দেশের বিরুদ্ধে নতুন মার্কিন ষড়যন্ত্র ও চাপগুলোও ব্যর্থ হবে।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/৭