নভেম্বর ১৫, ২০২২ ১৮:৫০ Asia/Dhaka

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ব্রিটেন ইরানের ২৯ কর্মকর্তা ও ২৪ ঘণ্টার ইংরেজি নিউজ চ্যানেল প্রেস টিভিসহ তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ। এদের মধ্যে ইরানের যোগাযোগমন্ত্রী ঈসা জরেপুরও রয়েছেন। স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানে বিদেশি উস্কানিতে সৃষ্ট সাম্প্রতিক সহিংসতার সময় কথিত ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ওয়াহিদি, সাইবার পুলিশ বিষয়ক প্রধান ওয়াহিদ মাজিদ, আমিনিকে গ্রেফতারকারী চার পুলিশ সদস্য এবং ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির স্থলবাহিনীর প্রধান কিয়ামার্স হায়দারিসহ কিছু আঞ্চলিক পদস্থ কর্মকর্তা।এছাড়া, প্রেস টিভির বিরুদ্ধে সহিংসতার সময় আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে কথিত ‘জবরদস্তিমূলক স্বীকারোক্তি’ আদায়ের খবর প্রচার করার  অভিযোগ এনেছে ইইউ।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ এবং ব্রিটেনের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তিদের ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পদ জব্দ হওয়ার পাশাপাশি কোনো ইউরোপীয় কোম্পানি এবং নাগরিক এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে কথিত মানবাধিকার ইস্যুতে ব্রাসেলসলের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ইরানী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে  দাঁড়াবে ১২৬ ব্যক্তি এবং ১১ প্রতিষ্ঠান। 

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুল্টজ ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপকামী নীতি ও অবস্থানের সঙ্গে মিল রেখে ইরানে অস্থিরত সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। এমনকি দাঙ্গাবাজদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডকে একটি "সাহসী সংগ্রাম" হিসাবে আখ্যায়িত করে তিনি দাবি করেন, নিষেধাজ্ঞাগুলো এমন সব উপায় যার মাধ্যমে আমরা  ইরানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছি।”

ইরানের বিরুদ্ধে নতুন ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞাগুলো মধ্যে যেটি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তা হলো ইংরেজি ভাষার স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রেস টিভির উপর নিষেধাজ্ঞা। এই নিউজ নেটওয়ার্ক বহু বছর ধরে পশ্চিমা মিডিয়ার একচেটিয়া প্রভাবকে ভেঙে স্বাধীনভাবে সংবাদ এবং প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। প্রেস টিভির এসব স্বাধীন সংবাদ পরিবেশনা পশ্চিমা সরকারগুলোর ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই বিভিন্ন সময় তারা ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম এর মতো ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কগুলিতে প্রেস টিভিকে ব্লক করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে এবং একই সাথে চাপ প্রয়োগ করে তারা বারবার প্রেস টিভির সম্প্রচার বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। পরিশেষে বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার শ্লোগানের বিপরীতে গিয়ে আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারের ধারাবাহিকতা রোধ করার চিন্তাভাবনা নিয়ে বিশেষ করে ইরানে দাঙ্গা ও গোলযোগ  এবং এ ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের উসকানি ও ভূমিকা সম্পর্কে মানুষ যেনো অবগত না হতে পারে সেজন্য তারা প্রেস টিভিকে নিষেঘজ্ঞার আওতায় এনেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। #

পার্সটুডে/এমবিএ/১৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ