ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে পশ্চিমাদের অগঠনমূলক আচরণ বন্ধের আহ্বান রায়িসির
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i124290-ইরান_বিরোধী_নিষেধাজ্ঞা_ইস্যুতে_পশ্চিমাদের_অগঠনমূলক_আচরণ_বন্ধের_আহ্বান_রায়িসির
ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি তার ফরাসি সমকক্ষ ইমানুয়েল ম্যকরনের সঙ্গে টেলিফোনালাপে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আলোচনায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অগঠনমূলক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুন ১১, ২০২৩ ১৮:৫৭ Asia/Dhaka

ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি তার ফরাসি সমকক্ষ ইমানুয়েল ম্যকরনের সঙ্গে টেলিফোনালাপে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আলোচনায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অগঠনমূলক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যকরন গতকাল সন্ধ্যায় ৯০ মিনিটের টেলিফোনালাপে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং  নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। 

টেলিফোনালাপে প্রেসিডেন্ট রায়িসি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সাথে ইরানের সহযোগিতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন এবং সংস্থার আইনি বাধ্যবাধকতার প্রতি ইরানের আনুগত্যের ধারাবাহিকতা নিয়েও কথা বলেছেন।

নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত আলোচনায় অগঠনমূলক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এড়িয়ে চলার প্রয়োজনীয়তার ওপর ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্টের জোর এমন প্রেক্ষাপটে প্রকাশ করা হয়েছে  যখন গত কয়েক সপ্তাহ আগে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ইরান ও আমেরিকার মধ্যে সমঝোতা বিষয়ে অসংখ্য জল্পনা-কল্পনা ও খবর বিভিন্ন  পশ্চিমা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিক আল সাইদের তেহরানে সাম্প্রতিক সফর এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার দুটি কথিত সুরক্ষা মামলা বন্ধ করার পাশাপাশি ইরান ও ইউরোপের মধ্যে বন্দীদের বিনিময়ের পর এই জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে।

প্রথমত, ইহুদিবাদী ইসরাইলের সংবাদপত্র "হারেৎজ" নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আলোচনার বিষয়ে একটি সংবাদ ছেপে দাবি করে যে ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু সমঝোতা বা জেসিপিও পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি। এই সংবাদপত্রটি দাবি করেছে যে "তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে গোপন আলোচনা চলছে এবং দুই দেশের মধ্যে একটি সীমিত ও প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুসারে আমেরিকা ইরানের প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড় দেবে এবং এর বিনিময়ে তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা হ্রাস করবে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ইরানের শেয়ার উত্তোলন বন্ধ করবে। এসব অর্থ ইরাক এবং দক্ষিণ কোরিয়াতে আটকে রয়েছে। এরপর সূত্রের বরাত দিয়ে ইংরেজি নিউজ সাইট ‘মিডল ইস্ট আই’ দাবি করেছে, আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে এবং দুই পক্ষ একটি ‘অস্থায়ী চুক্তি’তে পৌঁছেছে, যার বিস্তারিত তথ্য দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করা হবে। 

এদিকে, এসব খবরের প্রতিক্রিয়ায় ইরানি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মার্কিন কর্মকর্তাদের বক্তব্যে থেকে বোঝা যাচ্ছে যে "অস্থায়ী চুক্তি" সম্পর্কিত দাবিটি সত্য নয়। ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি অস্থায়ী চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এমন দাবির প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি ঘোষণা করেছেন যে জেসিপিওএ'র বিকল্প হিসেবে কোনো ধরনের অস্থায়ী চুক্তিতে পৌছা ইরানের এজেন্ডায় নেই। এদিকে,  হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের  মুখপাত্রও মিডল ইস্ট আই দাবির প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এই প্রতিবেদনটি মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর। ইরানের সাথে অন্তর্বর্তী চুক্তি সংক্রান্ত যে কোনো প্রতিবেদন মিথ্যা।"

প্রকৃত বিষয় হচ্ছে পশ্চিমা দলগুলো বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাকে জেসিপিও'র  লঙ্ঘনকারী হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং ইরানের বিরুদ্ধে অবৈধ এবং একতরফা পদক্ষেপের জন্য তেহরানকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য এখনও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি তারা এখন আলোচনার বিষয়ে মিডিয়া পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। ফলে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে এবং তথাকথিত অস্থায়ী চুক্তিতে পৌছাতে আমেরিকা একদিকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে অন্যদিকে ইরানের কাছ থেকে আরো ছাড় আদায় করতে তেহরানের ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। #

পার্সটুডে/এমবিএ/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।