আগস্ট ০৪, ২০২৩ ১৭:২০ Asia/Dhaka
  • তালেবান সরকার হিরমান্দ নদীর পানি থেকে বঞ্চিত করায় ইরানের প্রতিবাদ

আফগানিস্তানের তালেবান সরকার একাধিকবার হিরমান্দ নদীর পানির ওপর ইরানের অধিকারের কথা স্বীকার করলেও ইরানের পরিবেশ সংস্থার প্রধান আলী সেলাজকে জানিয়েছেন ইরানের বছরে ৮২ কোটি লিটার পানি পাওয়ার কথা থাকলেও তালেবান সরকার মাত্র এক কোটি ৫০ লাখ লিটার পানি দিচ্ছে।

অভিন্ন হিরমান্দ নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ১৯৭২ সালে ইরান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।  মাস ও ঋতুর পরিবর্তনের সাথে মিল রেখে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি ইরানকে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই চুক্তি মানা হচ্ছে না। তালেবানরা দুই বছর আগে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে এসে বহুবার ইরানকে তার ন্যায্য পানি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত তারা তা বাস্তবায়ন করেনি এবং সময়ের অপচয় করে তারা এক ধরনের রাজনৈতিক খেলায়ে মেতে উঠেছে। অথচ এই চুক্তি বাস্তবায়ন না করার ফলে ইরান ও আফগানিস্তান উভয় দেশের পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

ইরানের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আমিন ফারজাদ বলেছেন, 'পানির অভাবের কারণে শুধু যে ইরানের সিস্তান ও বেলুচিস্তানে খরা এবং আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছাকাছি ইরানের ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে তাই নয়, একই সাথে খোদ আফগানিস্তানের সীমান্ত এলাকা ও দেশটির অভ্যন্তরের ভূ-প্রকৃতিও নিরাপদ থাকবে না।  তাই তালেবান সরকারের এটা বোঝা উচিত যে ইরানের অধিকার মেনে না চললে সমগ্র এই অঞ্চল বিরাট পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।' 

আফগানিস্তানের পূর্ববর্তী সরকার নিমরোজ প্রদেশে হিরমান্দ নদীর উপর 'কামাল খান' বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার পানিচুক্তি বাস্তবায়নে কার্যত বাধা সৃষ্টি করে। এই বাধ নির্মাণের ফলে হিরমান্দ নদীর অববাহিকায় মানব, প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনচক্রের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে ইরানের সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে বিশাল এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। হিরমান্দ থেকে ইরানের পানির ন্যায্য অধিকার আদায় নিয়ে বৈঠক করার অনুরোধও তালেবান বেশ কয়েকবার প্রত্যাখ্যান করেছে। সম্প্রতি ওই এলাকার বৃষ্টিপাতের পানি হিরমান্দ নদীতে গিয়ে পড়লেও এবং পানির অভাব না থাকলেও চুক্তি বাস্তবায়নে তালেবানের কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

ইরানের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পির মোহাম্মদ মোল্লাযেহি বলেছেন, পানির অভাবে ইরানের  হামুন নদী একেবারে শুকিয়ে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকার ধুলোবালি সীমান্ত মুছে দেবে এবং উভয় দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই তালেবানের উচিত রাজনৈতিকভাবে এ প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।

আফগানিস্তান দেশটি ভৌগোলিকভাবে অবরুদ্ধ। তাদের পণ্য আমদানি রপ্তানি করার জন্য ইরানের ভূমি ও বন্দর ব্যবহার করতে হয়। পাকিস্তানের সাথে তাদের সমস্যা থাকায় তালেবান সরকারের কাছে ইরানের গুরুত্ব অনেক বেশি। এ কারণে তারা ইরানের চবাহার বন্দর ব্যবহার করে। তাই দুদেশের পানি বন্টন নিয়ে বিরোধের অবসান ঘটানো সবার জন্যই জরুরি বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।# 

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ