মার্চ ০৭, ২০২৪ ১২:৪৯ Asia/Dhaka

মার্কিন অমানবিক নিষেধাজ্ঞার কারণে বিরল চর্ম রোগে আক্রান্ত রোগীদের দায়ের করা মামলার রায়ের জের ধরে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ৫০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের তেলবাহী একটি মার্কিন কার্গো জাহাজ আটক করেছে।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে একটি সুইডিশ কোম্পানিকে ইরানের কাছে ওষুধ বিক্রিতে বাধা দিয়েছে। এতে বিরল চর্ম রোগে আক্রান্ত রোগীরা গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির মুখে পড়েছে এর ফলে এপিডার্মোলাইসিস বুলোসা বা ইবি আক্রান্ত রোগীরা তাদের ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের  বিরুদ্ধে তেহরানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আইন আদালতে মামলা দায়ের করে। ইরানের আদালত এপিডার্মোলাইসিস বুলোসা বা ইবি আক্রান্ত রোগীদের পক্ষে ক্ষতিপূরণের জন্য রায় দেয় এবং তার জের ধরে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী মার্কিন তেলবাহী কার্গো জাহাজটি আটক করা হয়। তেলবাহী এই জাহাজটিতে ৫০ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ডলার মূল্যের তেল রয়েছে বলে জানা গেছে।

ইরানের মানবাধিকার কর্মী এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মার্কিন সরকারের একতরফা এবং অবৈধ নিষেধাজ্ঞাকে ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে একটি নীরব এবং গোপন অপরাধ বলে মনে করেন। সাম্প্রতিক সময়ে এসব অন্যায় নিষেধজ্ঞা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ  করে  ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর ক্ষেত্রে অব্যাহত থাকার কারণে রোগীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে ।

এর আগ জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক আলেনা দোহান আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। ইরানের ওপর পাশ্চাত্যের নিষেধাজ্ঞা বিরল রোগে আক্রান্ত রোগীদের ওষুধ সরবরাহ মারাত্মক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে বলে তিনি তার প্রতিবেদনে তুলে ধরেছিলেন। আলেনা দোহানের প্রতিবেদনে এটিও উল্লেখ করা হয়েছিল যে নিষেধাজ্ঞাগুলো কিছু নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার, থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া, মাহিয়াক রোগ, এমএস, ইবি রোগ, অটিজম এবং নির্দিষ্ট ধরণের ডায়াবেটিস সহ বিরল রোগের উপর  বড় ধরনের  প্রভাব ফেলেছে।"

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এবং ছয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ২০১৫ সালে পরমাণু সমঝোতা সইয়ের পর তেহরানের বিরুদ্ধে কিছু নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হলেও ২০১৮ সালের মে মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেই চুক্তি বাতিল করে দেন এবং ইরানের বিরুদ্ধে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন

পরিশেষে এটা বলা যেতে পারে যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইরানের বিশেষ রোগীদেরকে ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক লক্ষ্য ও আকাঙ্ক্ষার কাছে "জিম্মি" করে তুলেছিল। যেখানে মানবাধিকার সনদের সার্বজনীন ঘোষণার ২৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ব্যক্তির নিজের এবং তার পরিবারের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিশেষ করে খাদ্য এবং পোশাক নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত জীবনযাত্রার মান পাওয়ার অধিকার রয়েছে সেখানে ইরানি নাগরিকদের তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।#

পার্সটুডে/এমবিএ/৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ