মিডিয়া যুদ্ধের যুগে ফার্সি কবিতা একটি অনন্য এবং শক্তিশালী মাধ্যম: সর্বোচ্চ নেতা
(last modified Tue, 26 Mar 2024 11:48:59 GMT )
মার্চ ২৬, ২০২৪ ১৭:৪৮ Asia/Dhaka
  • আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী
    আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন: মিডিয়া যুদ্ধের যুগে ফার্সি কবিতা একটি অনন্য এবং শক্তিশালী মাধ্যম। গত সোমবার রাতে একদল কবি এবং ফার্সি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে এক বৈঠকে এ কথা বলেন আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।

এই বৈঠকে সর্বোচ্চ নেতা ফারসি কবিতার ক্রম অগ্রগতি এবং শিখরে অবস্থান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মিডিয়া যুদ্ধের যুগে কবিতাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী মাধ্যম হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন: এই ক্ষেত্রে আমাদের ফারসি কবিতার বিরল ঐতিহ্যকে ব্যবহার করা উচিত। ফার্সি সাহিত্য একটি অনুপ্রবেশকারী শক্তিশালী ও কার্যকর একটি মাধ্যম। সাহিত্যের মাধ্যমে ধর্ম, সভ্যতা, ইরানি ঐতিহ্য, মর্যাদা এবং সাহসের বাণী বিশ্ব জনমতের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিত।

অবশ্য কবিতার মাধ্যমটির কার্যকর প্রভাব ফেলার শর্ত হল এর শৈল্পিক গুণ। আর কবিতার শৈল্পিক গুণ নির্ভর করে দৃঢ় এবং সুস্থিত শব্দ, বিষয়গত অনন্যতা এবং প্রকাশভঙ্গির অপূর্ব শৈলীর ওপর।

সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে ফারসি সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং একদল কবির সাক্ষাৎ

হযরত আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী উপযুক্ত এবং উত্তম বার্তা নির্বাচনকে কবিতার কার্যকারিতা ও স্থায়িত্বের আরেকটি শর্ত বলে উল্লেখ করেছেন। কবিতার মতো শিল্প মাধ্যমকে ধর্ম ও নৈতিকতা, ইরানি সভ্যতা এবং ইরানি সংস্কৃতির বার্তাবাহী হওয়া উচিত।

বিশেষ করে বিশ্ব মোড়লদের অত্যাচার এবং বলদর্পিতার বিরুদ্ধে ইরানি জাতির সাহসী অবস্থানের বার্তা কবিতার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। আমেরিকা ও ইহুদিবাদী জালেমদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে ইরানের সুস্পষ্ট বার্তা কবিতায় তুলে ধরা উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। এটা সকল দেশের জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের রাষ্ট্রপতিগণ যখন সফরে যান এবং জনসমাবেশে বক্তৃতা দেন তখন বলদর্পি শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থানকে জনগণ যেভাবে স্বাগত জানায় তা ওই গুরুত্বের উদাহরণ।

কবি সাহিত্যিকদের উদ্দেশে তিনি বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা দেন। প্রথমেই তিনি ফার্সি কবিতার রূপান্তর কিংবা অনুবাদের দুর্বলতার প্রতি ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন: ভালো কবিতা বিশ্ব জনমতের কাছে গৃহীত হতে হবে। সে কারণে অনুবাদের একটা আদর্শ তৈরি হওয়া দরকার। যাতে কবিতাগুলো অন্যদের কাছে কাব্যিক এবং ছন্দময় গদ্যে অভিব্যক্ত হয়।

ইরানের একদল নারী কবি

মানুষের সাহিত্যিক স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করা এবং যথাস্থানে কবিতার সঠিক ব্যবহারে তরুণদের মনকে সৃজনশীল করে তোলা দরকার।  এ লক্ষ্যে বিশিষ্ট কবিদের কাব্য বেশি বেশি পড়া এবং শিক্ষা গ্রহণের ওপর জোর দেন সর্বোচ্চ নেতা। এ বিষয়টি বাস্তবায়নে আরও দুটি পরামর্শ দেন তিনি।

বিদেশী শব্দের আক্রমণে ফার্সি ভাষার নিপীড়িত হওয়ার ব্যাপারে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। অপর পরামর্শটি হলো উন্নয়ন ও সম্প্রসারণযোগ্য ফার্সি ভাষার মৌলিকত্ব সংরক্ষণ করা। তিনি বলেন: বিদেশি শব্দের আক্রমণের মুখে ফার্সি সমতুল্য শব্দগুলোকে ব্যবহার করতে হবে। এগুলোর ব্যবহার কঠিন নয়। বিদেশী শব্দ ব্যবহার কমালে ফার্সি ভাষার বিশুদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

কবিদের এই সমাবেশের শুরুতে একদল কবি তাদের প্রকাশিত কবিতার বই সম্পর্কে সর্বোচ্চ নেতাকে অবহিত করেন এবং নিজেদের কবিতা পাঠ করেন। যেসব বিষয়ে কবিগণ তাদের কবিতা পাঠ করেন তার মধ্যে ছিল ইমাম হাসান মুজতাবা (আ), ইমাম মাহদি (আ), গাজার নারী-শিশু ও মজলুম মনতা, বাবা-মা'র প্রশংসা এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক বিচিত্র বিষয়।

সমাবেশের শুরুতে সর্বোচ্চ নেতার ইমামতিতে মাগরেব এবং এশার নামাজ আদায় করা হয়।#

পার্সটুডে/এনএম/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ