ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টিতে
পারস্য উপসাগরীয় আরব সরকারগুলোর কৌশলগত ত্রুটির পুনরাবৃত্তি
আরব দেশগুলো এরকম একটি বদ্ধমূল ধারণা পোষণ করে যে তারা ইহুদিবাদীদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে। ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জাওয়াদ জারিফ ওই মন্তব্য করেন।
ইরানের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী 'পারস্য উপসাগরীয় ভূ-রাজনীতি' সম্মেলনে ফিলিস্তিন যুদ্ধকে ঘিরে কিছু ঘটনা বিশ্লেষণ করেছেন।
জারিফ বলেন নিরাপত্তা কেনাবেচার বিষয় নয়। পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সরকারের ভুল হলো যে তারা সেই প্রাচীনকালের ধারণা নিয়ে এখনো বসে আছে। তারা ভাবে নিরাপত্তা কেনা যায়। সে কারণে তারা সাদ্দামের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে তাকে সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু সাদ্দাম না তাদের সুরক্ষা দিতে পেরেছে বরং সে সৌদিআরব এবং কুয়েতে হামলা করেছে।
তিনি আরও বলেন:
ইসরাইল এবং সৌদিআরব যে পরমাণু সমঝোতার বিরোধিতা করেছিল তার কারণ এটাই। তারা চেয়েছিল আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে তাদের সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখুক।
সাদ্দামের পর আরবরা আমেরিকার কাছ থেকে তাদের নিরাপত্তা কিনতে চেয়েছিল উল্লেখ করে ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: বাস্তবতা হচ্ছে চীনের বৈশ্বিক প্রভাবের কারণে আমেরিকা আর মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে চায় না। তারা ইসরাইলিদের কাছে তাদের উপস্থিতির আউটসোর্স করতে চায় এবং এই কারণে আরব দেশগুলোর এই বদ্ধমূল ধারনা তৈরি হয়েছে যে তারা ইহুদিবাদীদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তাদের কাছ থেকে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা কিনতে পারবে, যদিও ইসরাইলিরা কাউকে সাহায্য করেছে-এরকম কোনো ইতিহাস নেই।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে ৬ দিনের যুদ্ধে আরব সরকারগুলোর ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে জারিফ বলেন:
কিন্তু ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং তাদের মিত্ররা বিগত ৭ মাস ধরে গাজার প্রতিরোধকামী জনগণের প্রতিরোধের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারে নি। আজ তারা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আন্তর্জাতিক মহলে এখন আর কেউ হামাসের ধ্বংসের কথা বলছে না কিংবা গাজার জনগণকে অন্য দেশে স্থানান্তর করার কথাও বলছে না। বিশ্ব জনমত শুধু ইসরাইলেরই নিন্দা করছে না বরং বিশ্ববাসী গাজা যুদ্ধে এখন ফিলিস্তিনী জনগণের প্রতিরোধের পক্ষে মোড় নিচ্ছে।
সূত্র: মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের বক্তব্যের অনলাইন ডাটাবেস
পার্সটুডে/এনএম/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।