জুন ১৬, ২০২৪ ২০:৪৬ Asia/Dhaka
  • হামিদ নুরি
    হামিদ নুরি

পার্সটুডে- সুইডেনে বেআইনিভাবে গ্রেফতার হওয়া ইরানের বিচার বিভাগের কর্মকর্তা হামিদ নুরি মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। হামিদ নুরিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় আটক করেছিল সুইডেন। তিনি সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ১,৬৮০ দিন সুইডেনের কারাগারে আটক থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর ব্যক্তিগত কাজে সুইডেন সফরে গেলে তাকে আটক করা হয়েছিল। মুক্তি পাওয়ার পর চলতি ২০২৪ সালের ১০ জুন তিনি ইরানে ফিরে এসেছেন। সুইডেনে তাঁর তথাকথিত বিচার ঘিরে ঘটেছে নানা ঘটনা।

হামিদ নুরি

 

পার্সটুডে'র এই নিবন্ধে এ সংক্রান্ত ১০টি পয়েন্ট তুলে ধরা হলো।

১-বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সময়ের নির্জন কারাবাসী

হামিদ নুরি সুইডিশ কারাগারে ১,৬৮০ দিন বন্দী ছিলেন। এই সময়টাকে ঘণ্টায় হিসেব করলে দাঁড়ায় ৪০ হাজার ৩২০ ঘণ্টা। এ কারণে এটাকে বিশ্বের দীর্ঘতম নির্জন কারাবাস হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

 

২-কোনো খবরই জানতে দেওয়া হয়নি

গ্রেপ্তারের মুহূর্ত থেকে পরবর্তী আট মাস ধরে পরিবারের কোনো খোঁজ-খবর দেওয়া হয়নি নুরিকে। বিশ্বে যারা দীর্ঘ সময় ধরে পরিবারের খবর জানতে পারেননি তাদের একজন হলেন হামিদ নুরি।

 

৩-সবচেয়ে অবরুদ্ধ বন্দী

সুইডেনে ৫৬ মাসের কারাবাসের সময় নুরিকে কখনই ফোন কল করতে বা তার পরিবারের সাথে নিয়মিত দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাকে কোনো দোভাষীর সহযোগিতা নেওয়ারও সুযোগ দেওয়া হয়নি।

 

৪-বিশ্বের সবচেয়ে চিকিৎসা-বঞ্চিত বন্দী

প্রায় পাঁচ বছর ধরে হামিদ নুরিকে একটি সাধারণ চক্ষু পরীক্ষারও সুযোগ দেওয়া হয়নি। যদিও তিনি জেলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তাঁর পা ভেঙ্গে গিয়েছিল!

 

৫-বিশ্বের সবচেয়ে একতরফা আদালত

হামিদ নুরির বিরুদ্ধে মামলায় ৯০ বারেরও বেশি আদালত বসেছে। সেখানে ইরানবিরোধী সন্ত্রাসী মুনাফিকিন গোষ্ঠী এমকেইউ'র ৬৫ জন সদস্য হামিদ নুরির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন, কিন্তু আদালত তাকে একজন সাক্ষী হাজির করারও সুযোগ দেয়নি।

 

৬-সবচেয়ে অপ্রাসঙ্গিক বিচারিক রায়

সেখানে ইরানবিরোধী সন্ত্রাসী মুনাফিকিন গোষ্ঠী এমকেইউ'র বেশ কয়েকজন সদস্য ইংল্যান্ডে অভিযোগ দায়ের ও মামলার প্রস্তুতি নেয়। অভিযোগের বিষয় ছিল ইরানের ঘটনা এবং একজন ইরানি। পরে সুইডেন ইংল্যান্ডে করা অভিযোগ আমলে নিয়ে হামিদ নুরিকে কারাদণ্ড দেয়।

 

৭- সবচেয়ে হিংস্র পুলিশ

এক রাতে নুরি মামলার অভিযোগপত্র অধ্যয়ন করছিলেন যাতে পরের দিন আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারেন। কিন্তু সুইডিশ পুলিশ জোর করে তার কাছ থেকে অভিযোগপত্র কেড়ে নেয় এবং তাকে প্রচণ্ড মারধর করে। এর ফলে হামিদ নুরির একটি কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

৮- সবচেয়ে প্রতারণামূলক বিচারিক পদক্ষেপ

নুরিকে গ্রেপ্তারের পর সুইডিশ পুলিশ ইরানি বংশোদ্ভূত একজন অফিসারকে নিয়ে আসে যাতে নুরির সঙ্গে ফার্সি ভাষায় কথা বলতে পারে। এ সময় নুরি ইরানি বংশোদ্ভূত পুলিশের সাথে নিজের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। পুলিশ আদালতে ঐ বক্তব্যকেও প্রমাণ হিসাবে অপব্যবহার করেছে।

 

৯- বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভুত বিচারিক দলিল

আদালতের এক শুনানিতে সুইডিশ প্রসিকিউটর ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির নববর্ষের অভিনন্দন বার্তাকে দলিল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট সাধারণত বিশেষ উপলক্ষে সব ইরানি নাগরিকের কাছে এসএমএসের মাধ্যমে অভিনন্দনবার্তা পাঠান। প্রযুক্তির সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই বার্তা পাঠানো হয়। আদালতে এমন দলিল উপস্থাপন বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনা।

 

১০- মামলাকারীরা এখন সবচেয়ে হতাশাগ্রস্ত মানুষ

এই মামলায় যারা যাবতীয় বিনিয়োগ ও খরচ করেছে তারা এখন সবচেয়ে হতাশাগ্রস্ত মানুষ। নুরি মুক্তি পাওয়ার পর তারা হতাশ হয়ে পড়েছে। মামলার মূল হোতা ইরাজ মেসদাকি-কে এই মুহূর্তে এই মামলার সাথে জড়িত সবচেয়ে হতাশ মানুষ বলা যেতে পারে।

 

পার্সটুডে/এসএ/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ