ইসরাইলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপের প্রতি ইরানি খ্রিষ্টান ও জরাথ্রুস্ত্রদের সমর্থন
(last modified Wed, 23 Oct 2024 12:39:20 GMT )
অক্টোবর ২৩, ২০২৪ ১৮:৩৯ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপের প্রতি ইরানি খ্রিষ্টান ও জরাথ্রুস্ত্রদের সমর্থন

পার্সটুডে- ইরানের অ্যাসিরীয় খ্রিষ্টান চার্চের আর্চবিশপ মার্নারসাই বেনিয়ামিন বলেছেন, ইরানের মাটি পবিত্র এবং এখানে আক্রমণের সাহস করা কারো উচিত হবে না।  গত মঙ্গলবার তেহরানের সেন্ট সার্কিস ক্যাথেড্রলে ইরানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং একত্ববাদী ধর্মগুলোর প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এই সম্মেলনে ইরানের অ্যাসিরিয়ান চার্চ অব ইস্টের আর্চবিশপ মার্নারসাই বেনিয়ামিন ইহুদিবাদী ইসরাইলের নানা কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা তিনি বলেন, সবার সামনে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করা হলেও সবাই নীরব রয়েছে। ইরানের আর্মেনিয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মযাজক বলেন, ইসরাইল সমগ্র অঞ্চলকে অশান্ত করে তুলেছে এবং এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে দিয়েছে। ইহুদিবাদী ইসরাইল শিশুদের হত্যার মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে চায় যা সম্ভব হবে না। 

তেহরান জরাথ্রুস্ত্র অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মোবেদ পেদরাম সুরুশপুর বলেছেন, ইরানি সংস্কৃতির একটি ভিত্তি হলো ঐক্য ও শান্তি। দৃঢ়তা ও শক্তিমত্তার ভিত্তিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বিশ্বাস করে ইরান। 

ইরানের ক্যালেডিয়ান ক্যাথলিক খ্রিষ্টান চার্চের আর্চবিশপ এমাদ খোশাবেহ জরগিসিও ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছেন এবং ইরানের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইহুদিবাদীরা তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড দখল করবে এবং ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করে দেবে তা হতে পারে না।

তেহরানের আর্মেনিয় খ্রিষ্টানদের খিলাফত কাউন্সিলের সদস্য সাহাক খোসরাভিয়ান বলেন, আমরা অসহায় মানুষদের পাশে আছি। আশাকরি সেখানে শান্তি ফিরে আসবে।

তেহরানের অ্যাসিরীয় ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান চার্চের প্রধান নিনোস মুকাদ্দাসনিয়া বলেছেন, আয়রন ডোমসহ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেও হিজবুল্লাহ এবং হামাসের সাথে পেরে উঠছে না ইহুদিবাদী ইসরাইল। প্রতিরোধ সংগ্রাম করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তারা প্রথম থেকেই শাহাদাতের লক্ষ্য নিয়েই অগ্রসর হয়েছেন। কাজেই তাদের শাহাদাত কখনোই ইসরাইলের বিজয় হিসেবে গণ্য হবে না।

ক্যালেডিয়ান খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শার্লি এনউয়ে তাকিয়া বলেছেন, গাজা ও লেবাননে যা ঘটছে এবং যে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে তা নৈতিকতা, আইন ও মানবতার জন্য এক ঐতিহাসিক লজ্জা। সেখানে প্রকাশ্য দিবালোকে শিশু হত্যা করা হচ্ছে, নারীদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।

ইরানের জরাথ্রুস্ত্রদের পক্ষ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য বেহশিদ বারখুরদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপকর্মের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের পদক্ষেপ ন্যায্য। তিনি বলেন, ইরান কখনোই যুদ্ধের সূচনা করে না বরং সব সময়  শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জাতিসংঘকে নীরবতা ভেঙে ইসরাইলি অপরাধের বিরদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

ইসফাহানের আর্মেনীয়দের প্রতিনিধি গগার্ড মানসুরিয়ান বলেন, ফিলিস্তিন ও গাজার জনগণকে সমর্থন দিতে ইরান কখনোই পিছপা হবে না।

সংসদে তেহরান ও উত্তর ইরানের আর্মেনীয় খ্রিষ্টানদের প্রতিনিধি আরা শাভারদিয়ান ঐ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গোটা বিশ্বই আজ ফিলিস্তিন ও লেবাননের অসহায় মানুষ এবং হাসপাতালগুলোর ওপর হামলা প্রত্যক্ষ করছে। ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের পক্ষে প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নিতে ইরান দ্বিধা করবে না বলে তিনি জানান।

সংবাদ সম্মেলন শেষে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের নিন্দা জানিয়ে এবং দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জবাবের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন।#  

পার্সটুডে/এসএ/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ