ইহুদিবাদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ঐক্য; অনুষ্ঠিত হলো ইরানি ধর্মগুরুদের জাতীয় সম্মেলন
-
অনুষ্ঠিত হলো ইরানি ধর্মগুরুদের জাতীয় সম্মেলন
পার্সটুডে- ঐশী ধর্মগুলোর বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের অংশগ্রহণে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইহুদিবাদী ইসরাইল ও আমেরিকার আগ্রাসন বিষয়ক একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ইরানে বসবাসরত বিভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রেখেছেন।
ট্রাম্পের আচরণের বিরুদ্ধে খ্রিস্টান পণ্ডিতদের সোচ্চার হওয়া উচিৎ
আহলে বাইত (আ.) বিশ্ব পরিষদের সুপ্রিম কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আখতারি এই সম্মেলনে বলেছেন, বর্তমানে এমন কোনও বিশ্লেষক বা আইনজীবী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না যিনি ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের ওপর ইসরাইলি ও মার্কিন আক্রমণের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেন। প্রতিটি ধর্মের আলেম ও ধর্মগুরুরা এ বিষয়ে একমত যে, প্রত্যেক মানুষের জন্যই তার নিজেকে ও পরিবারকে রক্ষা, তার বাসস্থান রক্ষা এবং তার দেশকে রক্ষা করা অবশ্যপালনীয় কর্তব্য। যে ট্রাম্প ইরানে আক্রমণ করলেন তিনি নিজেকে একজন খ্রিস্টান বলে দাবি করছেন। বিশ্বের খ্রিস্টানদের পক্ষ থেকে এখন এই ঘোষণা দেওয়া উচিৎ যে, ট্রাম্পের দাবি মিথ্যা এবং তিনি খ্রিস্টধর্মের অনুসারী নন। মুসলিম বিশ্বে আল-আজহারের আলেমরা হামলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং জাতিসংঘে সদস্য দেশগুলোকে এ বিষয়ে সক্রিয় করতে ধর্মগুরুদের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নিতে হবে, মানুষকে সংগঠিত করতে হবে।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের শয়তানি ইরানিদের ঐক্যবদ্ধ করেছে
আর্মেনীয় আর্চবিশপের সহকারি আরাকেল কাদেহচিয়ান এই সম্মেলনে বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল তার আচরণের মাধ্যমে সমস্ত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। তিনি সাম্প্রতিক যুদ্ধ এবং ইরানিদের ঐক্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের শয়তানি ইরানিদেরকে আগের চেয়েও বেশি ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠা শহীদদের প্রতি গোটা জাতি সম্মান জানাচ্ছে।
ইরানের পারমাণবিক বোমার প্রয়োজন নেই
প্রাচ্যের অ্যাসিরিয়ানদের চার্চের আর্চবিশপ মার নারসাই বেনিয়ামিন এই সম্মেলনে এক বক্তৃতায় বলেন, শাহাদাৎ সকল ধর্মেই অভিন্ন ও স্বীকৃত বিষয়। যারা আমাদের নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করে তারা অবশ্যই মূল্যবান। আমাদের শহীদরা চলে গেছেন, কিন্তু শহীদদের নাম রয়ে যাবে। তিনি জাতিসংঘের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, জাতিসংঘের দায়িত্ব কী?! দায়িত্বটা কি কেবল দুঃখ প্রকাশ করা? নিরাপত্তা পরিষদের কি বিশ্বে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত নয়? আসলে এটি একটি অ-নিরাপত্তা পরিষদ যা কেবল কিছু সরকারের স্বার্থ নিশ্চিত করে?! প্রাচ্যের অ্যাসিরিয়ান চার্চের আর্চবিশপ আরও বলেন, আমাদের শত্রুদের বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের পারমাণবিক বোমার প্রয়োজন নেই। আমাদের বোমা হলো জনগণ। ইরানের জনগণ এই ৪৭ বছর ধরে সব সময় সরকার ও রাষ্ট্রকে সমর্থন দিয়ে এসেছে।
এই সম্মেলনে আরও অনেক আলেম ও ধর্মগুরু উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ইরানি ইহুদিদের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।#
পার্সটুডে/এসএ/১১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।