মার্কিন অর্থনৈতিক যুদ্ধের অবসান আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনের একমাত্র উপায়: জারিফ
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i71131
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের একমাত্র পথ হচ্ছে তার দেশের বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন অর্থনৈতিক যুদ্ধের অবসান ঘটানো।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
জুন ১১, ২০১৯ ১৯:৫৬ Asia/Dhaka
  • মার্কিন অর্থনৈতিক যুদ্ধের অবসান আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনের একমাত্র উপায়: জারিফ

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের একমাত্র পথ হচ্ছে তার দেশের বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন অর্থনৈতিক যুদ্ধের অবসান ঘটানো।

তিনি গতকাল তেহরানে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাসের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন। জাওয়াদ জারিফ ইরান বিরোধী মার্কিন অর্থনৈতিক যুদ্ধকে সারা বিশ্বের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক অভিহিত করে বলেছেন, যারা অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেছে তারাও এর ক্ষতির প্রভাব থেকে নিরাপদ থাকতে পারবে এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাসও বাইরের দেশগুলোর অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রধান কারণ উল্লেখ করে বলেছেন, এ অঞ্চলে চলমান উত্তেজনা অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিণতি ডেকে আনবে।

বর্তমানে ইরানের শত্রুরা যাদের শীর্ষে রয়েছে আমেরিকা তারা ইরানি জাতির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু এ অর্থনৈতিক যুদ্ধের উদ্দেশ্য কি সেটাই এখন প্রশ্ন।

পাশ্চাত্যের মনস্তাত্বিক যুদ্ধ ও বিভিন্ন অপপ্রচার থেকে দুটি  উদ্দেশ্য বোঝা যায়। প্রথমত আমেরিকা অর্থনৈতিক যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের সরকার ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এমনকি তারা নিষেধাজ্ঞার অজুহাতে ইরানের বন্যাপীড়িত মানুষের জন্য বৈদেশিক সাহায্য আসার পথেও বাধা সৃষ্টি করেছে। অর্থনৈতিক যুদ্ধের দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইরানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করা।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে আমেরিকা তার অভ্যন্তরীণ আইন অন্য দেশকেও মেনে চলতে বাধ্য করার চেষ্টা চালাচ্ছে যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী কোনো সরকার নিজস্ব আইনকে অন্য কাউকে মানতে বাধ্য করতে পারে না। জাতিসংঘের সাত নম্বর অনুচ্ছেদের ২ নম্বর ধারায় এটাও বলা হয়েছে এক দেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এতে ইরান বিরোধী জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি মেনে নিতে বলা হয় সবাইকে।

এ কারণে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়া ও ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে মার্কিন পদক্ষেপ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন। আমেরিকার এ স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং বহুকেন্দ্রীক বিশ্বব্যবস্থায় আঘাত। নিঃসন্দেহে, আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে যে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তা বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। এ অবস্থায় এখন মাত্র দুটি পথ খোলা রয়েছে। প্রথমত, হয় মার্কিন বলদর্পিতার কাছে মাথা নত করতে হবে যার ফলে সব দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিশ্বে নিরাপত্তা ও উত্তেজনা তৈরি হবে। আর দ্বিতীয় পথ হচ্ছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সব দেশের অধিকার রক্ষায় প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া এবং আমেরিকার অন্যায় নীতিকে প্রত্যাখ্যান করা। এ কারণে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেয়া সাক্ষাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি ও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এ অঞ্চলে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

এ অবস্থায় পরমাণু সমঝোতা রক্ষা এবং ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় ইউরোপ কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।#  

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১১