সৌদি-মার্কিন সাজানো নাটকে গুতেরেসের সম্ভাব্য অভিনয়ের রহস্য!
(last modified Sun, 14 Jun 2020 14:24:57 GMT )
জুন ১৪, ২০২০ ২০:২৪ Asia/Dhaka
  • সৌদি আরামকো স্থাপনায় ইয়েমেনি হামলা (ফাইল ফটো)
    সৌদি আরামকো স্থাপনায় ইয়েমেনি হামলা (ফাইল ফটো)

সৌদি আরবের দু’টি তেল স্থাপনায় হামলার কাজে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ‘ইরানি ছিল’ বলে জাতিসংঘ যে রিপোর্ট দিয়েছে সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, দুঃখজনকভাবে জাতিসংঘের সচিবালয় মার্কিন হুমকির কাছে নত হয়েছে।

গত বছর ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ যোদ্ধারা সৌদি আরবের দু’টি তেল শোধনাগারে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। হামলার পরপরই সৌদি ও মার্কিন সরকার দাবি করে, ওই হামলার পাশাপাশি তার আগের কয়েকটি হামলায় ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইরানে তৈরি এবং ইরানই এগুলো হুথি যোদ্ধাদের দিয়েছে। 

গত শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও  গুতেরেস  দাবি করেছেন , সৌদি তেল স্থাপনা ও দেশটির আবহা বিমানবন্দর এবং তার আগের অন্তত দু’টি হামলায় ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের উৎস ইরান। ফলে ইরানের পরমাণু বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবটির লঙ্ঘন হয়ে থাকতে পারে তেহরানের মাধ্যমে!

ইরানের ওপর জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মার্কিন প্রচেষ্টা ও তোড়জোড়ের পাশাপাশি জাতিসংঘ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে ইরান-বিদ্বেষী রিপোর্ট তৈরির বিষয়টিকে এক সূত্রে গাঁথা বিষয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ এর আগে জাতিসংঘ বলেছিল সৌদি তেল-স্থাপনায় ইয়েমেনি হামলার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক থাকার কোনো প্রমাণ দেখা যায়নি। 

কিন্তু এখন জাতিসংঘ বলছে সম্পূর্ণ উল্টো কথা! এর কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালের ৮ মে অবৈধভাবে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নবায়নের আশা করছে!  

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নবায়নের যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মার্কিন সরকার তাতে সরাসরি শরিক হচ্ছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ সচিবালয় যে ভিত্তিহীন প্রতিবেদন তৈরি করেছে তা নিরাপত্তা পরিষদে তোলা হলে তাতে কেবল জাতিসংঘেরই সম্মানহানি ঘটবে এবং এ ধরনের রাজনৈতিক খেলা বিশ্ব সমাজ মেনে নেবে না। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধিও গুতেরেসের রিপোর্টকে মার্কিন সরকারের নির্দেশে তৈরি করা বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন:  ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুতার দীর্ঘ ইতিহাস নিয়ে আমেরিকা চালকের আসনে বসেছে যাতে জাতিসংঘের মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করে দেয়া যায়।

আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জাতিসংঘ মার্কিন সরকার ও তার মিত্রদের হাতের পুতুল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ইয়েমেনের বিপুল সংখ্যক শিশু হত্যায় সৌদি রেকর্ডের কারণে জাতিসংঘ সৌদি সরকারকেও শিশু-ঘাতক সরকারগুলোর কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল। কিন্তু সৌদি সরকার জাতিসংঘকে চাঁদা ও সাহায্য দেয়া বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়ায় জাতিসংঘ শিশু-ঘাতক সরকারগুলোর তালিকা থেকে সৌদি সরকারের নাম প্রত্যাহার করে নেয়। একই ধরনের কারণে জাতিসংঘ দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলকেও শিশু-ঘাতক সরকারগুলোর তালিকাভুক্ত করতে সাহস করছে না।    

তাই জাতিসংঘকে প্রকৃত জাতিসংঘে পরিণত করা এখন বিশ্ব সমাজের অন্যতম প্রধান দাবি। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৪

ট্যাগ