ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ব্যর্থ মার্কিন চেষ্টার মূল রহস্য
(last modified Wed, 15 Jul 2020 12:28:02 GMT )
জুলাই ১৫, ২০২০ ১৮:২৮ Asia/Dhaka
  • ইরানের ওপর  অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ব্যর্থ মার্কিন চেষ্টার মূল রহস্য

মার্কিন সরকার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকিসহ নানা ধরনের হুমকির অজুহাত দেখিয়ে ইসলামী এ দেশটির ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী ওই নিষেধাজ্ঞা আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে উঠে যাওয়ার কথা রয়েছে।

ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মার্কিন অপচেষ্টার প্রেক্ষাপটে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী   ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হ'তামি গতকাল (মঙ্গলবার) বলেছেন, মার্কিন সরকারের এ প্রচেষ্টা সফল হবে না। 

ইরানে ইসলামী বিপ্লব সফল হওয়ার পর থেকেই ইসলামী এ দেশটি নানা ধরনের মার্কিন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে। প্রেসিডেন্ট কার্টার, রিগান ও সিনিয়র বুশ থেকে শুরু করে সব মার্কিন প্রেসিডেন্টই ইরানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কোনো অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছেন। পারমাণবিক নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপও ২০০৭ সাল থেকে ইরানের কাছে অস্ত্র কেনা ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু ক্ষেত্রে সমঝোতার চুক্তি স্বাক্ষর সত্ত্বেও মার্কিন কংগ্রেস ২০১৭ সালে ইরানে অস্ত্র সামগ্রী রপ্তানি ও সরবরাহ নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত বিল পাস করে। কিন্তু ইরান বিগত ৪১ বছর ধরে প্রতিরক্ষা ও সমরাস্ত্র ক্ষেত্রে ঘরোয়া সামর্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এ ক্ষেত্রে প্রায় পুরোপুরি স্বনির্ভরতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।  

মার্কিন আটলান্টিক কাউন্সিল সম্প্রতি ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা অবসানের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেছে, ইরান ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ প্রতিরক্ষার নানা সিস্টেমে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। ফলে খুব দামি অস্ত্র আমদানি করার চাহিদা কমে গেছে ইরানের জন্য। 

ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নির্মাণে ব্যাপক সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। কাসেম সুলায়মানির ওপর মার্কিন হামলার পর ইরাকে মার্কিন সেনা-ঘাঁটিতে অত্যন্ত নিখুঁত মানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইরান তার সামরিক শক্তির ব্যাপক অগ্রগতির বিষয়টি প্রমাণ করেছে। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভাষায় তার দেশের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী মার্কিন সরকারের ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্বের দম্ভ চুরমার করেছে এবং ইরানের সামরিক শক্তি-সামর্থ্য বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। 

ইরান এখন নিজেই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের কৌশলগত সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করছে। সিরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত তেহরান-দামেস্ক চুক্তি প্রমাণ করেছে যে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকলেও তা ইসলামী এ দেশটির সামরিক ও রাজনৈতিক সক্ষমতা ও কর্তৃত্বে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। ইরান সিরিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি স্বাক্ষর করে দেশটির ওপর মার্কিন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাকে প্রকাশ্যেই অকার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে। 

বর্তমান মার্কিন সরকার ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার চেষ্টার মাধ্যমে দেশটির আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করছে। 

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনে করেন ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার অবৈধ মার্কিন চেষ্টা বিশ্ব-সমাজের সমর্থন পাবে না এবং বিশ্বের দেশগুলো এক্ষেত্রে মার্কিন সরকারকে সহযোগিতা করবে না। #  

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৫