মার্কিন 'পরশ্রীকাতর-মন্ত্রী'র গর্জন! ইরানি সিংহকে নিয়ে আতঙ্কে বুড়ো বাঘ!
(last modified Sun, 19 Jul 2020 14:11:21 GMT )
জুলাই ১৯, ২০২০ ২০:১১ Asia/Dhaka
  • ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানি
    ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানি

ইরানের মোকাবেলায় পরাজয় ও ব্যর্থতা স্বীকার করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান।

ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানি মার্কিন নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, বোকামিপূর্ণ আস্ফালন বাদ দিয়ে ইরানের কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এক টুইটার বার্তায় তিনি গতকাল (শনিবার) এ কথা বলেছেন।

সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইরানের মতো দেশের মোকাবেলায় কেবল শক্তিই কাজে আসে, সহিষ্ণুতা নয়। তাই বর্তমান ট্রাম্প সরকার ইরানের ব্যাপারে নতুন নীতি বাস্তবায়ন করছে বলে দাবি করেন পম্পেও। 

এর জবাবে ইরানের নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আরও বলেছেন, ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইরানের পরাজয় ঘটাতে সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু তারা আজও সফল হতে পারেনি। এ অবস্থায় ভিত্তিহীন দম্ভোক্তি না করে পরাজয় মেনে নেয়াই আমেরিকার জন্য মঙ্গলজনক।

চরম বিদ্বেষী হওয়ার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরণের আলোচনায় বসবে না বলে এর আগে ইরান ঘোষণা করেছে। এই দুই দেশের মধ্যে ৪০ বছর ধরে সম্পর্ক ছিন্ন রয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর জাওয়াদ জারিফ সম্প্রতি পম্পেওকে 'পরশ্রীকাতর-মন্ত্রী' বা ঘৃণার মন্ত্রী বলে উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প সরকারের সর্বোচ্চ চাপের নীতির প্রভাব ইরানের ওপর পড়ছে বলে তিনি দাবি করেছেন এবং ইরানের জেনারেল সোলাইমানিকে সন্ত্রাসী কায়দায় হত্যা করার বিষয়টিকে গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন! অথচ গত সপ্তা'য় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক ওই হত্যাকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক নীতির লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন।

পম্পেওকে মার্কিন পরশ্রীকাতর-মন্ত্রী বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর জারিফ

ইসলামী ইরান কখনও আগ বাড়িয়ে কারো সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত হয়নি। কিন্তু দেশটি যে যে কোনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও এমনকি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদেরও আগ্রাসী থাবা অকার্যকর করতে সক্ষম তা বার বার প্রমাণ করেছে। 

এন্টোনিও কুর্ডসম্যানের মত কোনো কোনো মার্কিন বিশ্লেষকও এটা স্বীকার করছেন যে ইরানের বিরুদ্ধে কোনো হঠকারী পদক্ষেপ নিতে গেলে তেহরান গোটা অঞ্চলে মারাত্মক ভূমিকম্প সৃষ্টি করবে এবং এ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থগুলোতে আঘাত হানার মত অনেক পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছে ইরান।

ইরানের কর্মকর্তারা মনে করেন মার্কিন সরকার এখন এক এমন এক বৃদ্ধ বাঘ বা কাগুজে বাঘ যে শক্তিহীন হয়ে পড়েছে, কিন্তু গর্জন করার স্বভাব এখনও রয়ে গেছে! কথায় বলে যে কুকুর বেশি ঘেউ ঘেউ করে তা কামড়ায় খুব কম। বুড়ো সাম্রাজ্যবাদী বাঘের গর্জনে এখন আর কেউ ভয় পায় না। অন্যদের ওপর কর্তৃত্বকামী ও একপেশে মার্কিন নীতি চাপিয়ে দেয়ার দিন শেষ হয়ে গেছে। 

মার্কিন সরকার ইরানের অপ্রতিরোধ্য প্রতিরক্ষা ও বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র শক্তির বিষয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে ইসলামী এই দেশটির আন্তর্জাতিক সুনাম ও শান্তিকামী অবস্থানকে প্রশ্নের মুখোমুখি করতে চায়। মার্কিন জনমত ও নির্বাচনে প্রভাব ফেলাও ইরান-আতঙ্ক ছড়ানোর অন্যতম উদ্দেশ্য বলে একটি মার্কিন সামরিক মিডিয়ার সম্পাদক উল্লেখ করেছেন। 

আসলে ট্রাম্পের ইরান-নীতি যতটা না মূর্খতাপূর্ণ এ বিষয়ে সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা পম্পেওসহ ট্রাম্পের মন্ত্রী, সঙ্গী ও পরামর্শদাতাদের বক্তব্য তার চেয়েও অনেক বেশি অবাস্তব ও আকাশ-কুসুমধর্মী! # 

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।  

 

 

ট্যাগ