ইরানের প্রাচ্যনীতি রাজনৈতিকভাবে দেশটিকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i81756
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি বলেছেন, ইরান ইউরেশিয়া এবং পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুপ্রতীম ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
জুলাই ২৬, ২০২০ ১৫:৫৮ Asia/Dhaka

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি বলেছেন, ইরান ইউরেশিয়া এবং পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুপ্রতীম ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।

মুসাভি বলেন, ইউরেশিয়া অঞ্চল এবং পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার সকল শক্তির সঙ্গে ইরান দীর্ঘকাল ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে এসেছে। এর প্রমাণ হিসেবে তিনি চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি শক্তিশালী চুক্তি এবং চবাহার বন্দরে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করেন। ইরানের মন্ত্রিসভা গত ২১ জুন চীনের সঙ্গে ২৫ বছরের কৌশলগত চুক্তির খসড়া অনুমোদন করেছে। এ ছাড়া, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ সম্প্রতি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শিগগিরই তার দেশের ২০ বছর মেয়াদি চুক্তি নবায়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় চবাহার বন্দর থেকে এশিয়ার পণ্য বিশেষ করে ভারতীয় পণ্য ইউরোপে পৌঁছে দেয়ার জন্য ইরান, ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি রয়েছে। ভারত এই বন্দর উন্নয়নে পুঁজি বিনিয়োগ করেছে। এ ছাড়া, ইউরেশিয়া অর্থনৈতিক ইউনিয়নের সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত বাণিজ্যিক চুক্তি ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউরেশিয়া ও প্রাচ্যের সঙ্গে ইরানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের উদ্যোগ কয়েকটি দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, ইরান মনে করে বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের জন্য বিরাজমান সুযোগ সুবিধাগুলোকে কাজে লাগানো উচিত। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, দীর্ঘ মেয়াদে একক কিংবা কেবল দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর নির্ভরশীলতা আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আধিপত্যকামী শক্তির  ওপর নির্ভরশীল করে দেয়। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহু দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার শক্তিশালী রাজনৈতিক অবস্থানেরও বার্তা বহন করে।

তাই বলা যায়, বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে একদিকে যেমন আর্থ-রাজনৈতিক হুমকি মোকাবেলা করা সম্ভব অন্যদিকে পররাষ্ট্র ক্ষেত্রেও নিজেদের কৌশলগত স্বার্থ টিকিয়ে রাখার সুযোগ তৈরি হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসলামি ইরান ইউরেশিয়া এবং দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা বিস্তারের উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে ইরান বিশেষ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া দেশটি বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারী। এ অবস্থায় সবার সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে ইরানের পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে অনেকে মনে করছেন। এরফলে আমেরিকার মতো আধিপত্যকামী শক্তির থাবা থেকেও নিজেদের রক্ষার সুযোগ তৈরি হবে। এ কারণেই ইরান বহুদিন ধরে বহুপক্ষীয় বিশ্ব ব্যবস্থার কথা বলে আসছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, এশিয়ার দেশগুলো বর্তমানে আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হচ্ছে। আর এ বিষয়টিকে ওয়াশিংটন কিছুতে অস্বীকার করতে পারে না। আমেরিকাকে এটা মেনে নিতে হবে অর্থনৈতিকসহ সব ক্ষেত্রে তাদের একক আধিপত্যের দিন শেষ হয়ে আসছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরেশিয়া এবং পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুপ্রতীম ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে ইরানের পদক্ষেপ জ্বালানি ও পরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরানে ব্যাপক বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তৈরি হবে যা ইরানকে রাজনৈতিকভাবেও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৬