মার্কিন স্বেচ্ছাচারী নীতি সারা বিশ্বে জন্য হুমকি: জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে নিযুক্ত ইরানের প্রতিনিধি মোহাম্মদ যারাঈয়ান বলেছেন, কয়েকটি দেশের নীতি সারা বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে যা মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের পথে বড় বাধা। তিনি ওই কিমিটির বৈঠকে আরো বলেছেন, এমনকি করোনা পরিস্থিতিতেও ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে বেআইনি একতরফা পদক্ষেপ নেয়া অব্যাহত রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে তার বিদ্বেষের চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি শুধু যে ইরানের জনগণকে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন তাই নয় একইসঙ্গে সারা বিশ্বের নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছেন। ২০১৮ সালে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতেও তিনি দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছেন। ইরান যাতে বাইরে থেকে ওষুধ আমদানি করতে না পারে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ১৮টি ব্যাংক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইরানের রেডক্রস সোসাইটির পক্ষ থেকে ২০ লাখ ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন আমদানির ওপর মার্কিন বিধিনিষেধ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা থেকে বোঝা যায় মার্কিন সরকার ইরানের জনগণকে টার্গেট করেছে এবং এ আচরণের অর্থ হচ্ছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ। জেনেভায় জাতিসংঘ দফতরে ইরানের প্রতিনিধি ইসমাইল বাকাইয়া হামানে ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার একতরফা নিষেধাজ্ঞাকে মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, এই অন্যায় আচরণের ব্যাপারে ইউরোপের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিন্দনীয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজ বিশেষ করে ইউরোপের নিষ্ক্রিয় অবস্থানের কোনো ব্যাখ্যা থাকতে পারে না এবং এ ধারা অব্যাহত থাকলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মৌলিক অধিকার থেকে ইরানের জনগণকে বঞ্চিত করার চেষ্টা মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রাথমিক নীতিমালা ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতির লঙ্ঘন। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে চলা ও এর প্রতি সম্মান দেখানো বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সমাজ আশা করে মার্কিন স্বেচ্ছাচারী নীতির ব্যাপারে কেউ যেন নিষ্ক্রিয় না থাক।
এ ব্যাপারে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক অধিকার বিষয়ক সচিব মোহসেন বাহরেবান্দ মনে করেন বিশ্বের সব দেশের উচিত মার্কিন স্বেচ্ছাচারী আচরণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়া। স্বাধীন দেশ হিসেবে ইসলামি ইরান সরকার নিজ দেশের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য মার্কিন সরকারের অমানবিক আচরণ রোধে আন্তর্জাতিক সমাজের দ্বারস্থ হয়েছে। যেমন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে ক্ষতি আদায়ের চেষ্টা করছে।
এছাড়া, ইরানের মানবাধিকার বিষয়ক দফতর ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সঙ্গে জড়িত আমেরিকার ৪৫ ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবযাদেহ বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি অবশ্যই আদায় করা হবে।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৫