ইউরোপে পণ্য পরিবহনের জন্য সহজ পথ হতে পারে ইরানের করিডোর
(last modified Mon, 29 Mar 2021 10:22:03 GMT )
মার্চ ২৯, ২০২১ ১৬:২২ Asia/Dhaka

এশিয়া থেকে ইউরোপে পণ্য পরিবহনের জন্য সুয়েজ খালের তুলনায় প্রস্তাবিত ইরানের নর্থ-সাউথ করিডোর বা এনএসটিসি রুটের ঝুঁকি অনেক কম এবং অনেক বেশি লাভজনক। এনএসটিসি ভারত থেকে ইউরোপে পণ্য পরিবহনের সময় ২০ দিন এবং খরচ শতকরা অন্তত ৩০ ভাগ কমাতে পারবে। মস্কোয় নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালি এক টুইটার বার্তায় এ কথা বলেছেন।

সুয়েজ খালে একটি বিশাল জাহাজ আড়াআড়িভাবে আটকে পড়ার কারণে গত কয়েকদিন ধরে সেখানে অসংখ্য জাহাজের জট বেধেছে এবং এর ফলে প্রতিদিন শত শত কোটি ডলারের ক্ষতি হচ্ছে। ফলে সমুদ্র বাণিজ্যরে নিরাপত্তা ও বিকল্প পথ নিয়ে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাশিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালি সুয়েজ খালে সৃষ্ট এ বিপর্যয় সম্পর্কে বলেন, 'কম ঝুঁকিপূর্ণ ও কম সময়ে পণ্য পরিবহনের জন্য বিকল্প পথ দেখা উচিত এবং এ ক্ষেত্রে ইরানের নর্থ-সাউথ করিডোর বা এনএসটিসি রুট ও শ্রেষ্ঠ ও বিকল্প পথ হতে পারে।'

গত ২৩ মার্চ থেকে জাপানি মালিকানার বিশাল মালবাহী জাহাজ এভারগ্রিন সুয়েজ খালে আড়াআড়িভাবে আটকে পড়ায় মালবাহী জাহাজ চলাচলে তৈরি হয়েছে বিশাল সমস্যা। লোহিত সাগরে ৩২০’র বেশি জাহাজের বিশাল জট তৈরি হয়েছে। সুয়েজ খাল ভূমধ্য সাগর ও লোহিত সাগরকে সংযুক্ত করায় এশিয়া ও ইউরোপের দূরত্ব অনেকটাই কমে গেছে। সমুদ্র পথে বিশ্বের ১২ শতাংশ বাণিজ্যিক জাহাজ এ পথ দিয়েই চলাচল করে। স্বল্প সময় ও নিরাপদ রুটের কারণে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের জন্য এ অঞ্চলটি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুটে পরিণত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাণিজ্য পণ্য পরিবহনের জন্য স্বল্প সময়, সহজ উপায় এবং নিরাপত্তা এ তিনটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় চবাহার ও ম্যাকরন সমুদ্র বন্দর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট হতে পারে। কারণ এ রুটে কম খরচে ও কম সময়ে পণ্য পরিবহন করার সুযোগ রয়েছে। ইরানের এই নর্থ-সাউথ করিডোরের দৈর্ঘ্য ৭২০০ কিলোমিটার। সুয়েজ খালের রুটের চেয়ে ইরানের এই রুট ব্যবহারের অন্যতম একটি সুবিধা হচ্ছে অর্ধেক সময় বেঁচে যাবে। ইরানের চবাহার মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের মহাপরিচালক আব্দুর রহিম কুরদি এ ব্যাপারে বলেছেন, বর্তমানের বাজার অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ তাই খরচ ও স্বল্প সময়ের দিক থেকে ইরানের এ রুট খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে চীনের উদ্যোগে ঐতিহাসিক সিল্ক রোড চালু করার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে খুব সহজে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পণ্য পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর-পূর্ব ইউরোপে সরবরাহ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই ইরানের উত্তর-দক্ষিণ করিডোরের গুরুত্ব আরো বেড়ে যাবে। ইরানের চবাহার সমুদ্র বন্দর হয়ে রেল ও লরির মাধ্যমে দ্রুত সময়ে এশিয়ার পণ্য ইউরোপে সরবরাহ করা যাবে এবং এটি সুয়েজ খালের বিকল্প হতে পারে। #         

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৯

ট্যাগ