জুলাই ১২, ২০২১ ১৬:০৩ Asia/Dhaka
  • স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী
    স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী

তেহরানে নিযুক্ত স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিনা র‍্যাডিকে তলব করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইরানের ইসলামি শাসনব্যবস্থা-বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুজাহেদিনে খালক বা এমকেও গোষ্ঠীর সম্মেলনে স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জ্যানেজ জ্যানসার অংশগ্রহণ করার প্রতিবাদে ওই রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের প্রতিবাদ জানানোর জন্য রোববার বিকেলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেলকে ফোন করেন। তিনি জ্যানসা’র অগ্রহণযোগ্য বক্তব্যের ব্যাখ্যা দাবি করার পাশাপাশি তার বক্তব্যের ব্যাপারে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য ইইউ’র প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় স্লোভেনিয়ার সরকার প্রধানের বক্তব্যে দুঃখ প্রকাশ করে জারিফ বলেন, তার এ বক্তব্যে ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইইউ’র আনুষ্ঠানিক অবস্থান প্রতিফলিত হয়নি।

শনিবার আলবেনিয়ায় এমকেও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর একটি ক্যাম্পে ইরানবিরোধী বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের কয়েকজন ভাড়াটে আইনপ্রণেতা বক্তব্য রাখেন। স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এই বৈঠকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন। এসব বক্তব্যে ইরানের ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে আক্রমণ করে কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করা হয়।

স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জ্যানেজ জ্যানসা গত ১ জুলাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুজাহেদিনে খালক বা এমকেও গোষ্ঠীর সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ইরানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করেন। সম্মেলনে উপস্থিত সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইরানে হাজার হাজার মানুষকে হত্যায় ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুজাহেদিনে খালক বা এমকেও গোষ্ঠীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।

উল্লেখ্য পাশ্চাত্যের দেশগুলোর অর্থ সহায়তায় ইরান বিরোধী এ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী প্রায়ই বিভিন্ন দেশে এ ধরনের সমাবেশ আয়োজন করে। ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক পার্সা জাফারি মানবাধিকার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিমুখী নীতির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ইউরোপীয়রা শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার জন্য মানবাধিকার বিষয়টিকে অন্য দেশের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কর্মকর্তারা স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইউরোপের নীতির কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করছেন কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ইউরোপ ইরান বিরোধী মার্কিন নীতিই অনুসরণ করছে এবং তাদের এ অনুসরণ মানবাধিকার নীতিমালার লঙ্ঘন। নিজ দেশে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়া মানবাধিকার বিষয়ে দ্বিমুখী নীতির লঙ্ঘন। যুক্তরাষ্ট্রে যে বর্ণবিদ্বেষ চলছে সে ব্যাপারেও ইউরোপ নীরব রয়েছে। এমনকি ইউরোপীয় দেশগুলোতেও মুসলমানদের সাথে ধর্মীয় ক্ষেত্রে যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে তাও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এ অবস্থায় ইরানে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলা ইউরোপের মানায় না।# 

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/ ১২

ট্যাগ