ফার্সি ভাষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে যৌথ কমিটি গঠনের আহ্বান ইরান ও তাজিকিস্তানের
-
ইরান ও তাজিকিস্তানের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদলের যৌথ বৈঠকে ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ
পার্সটুডে: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ ইরান ও তাজিকিস্তানের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও ভাষাগত বন্ধনকে গুরুত্ব দিয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। তার প্রস্তাবে উভয় দেশের সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের যৌথ কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে, যা পারস্য ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতা নিয়ে কাজ করবে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমের খবরের বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ গতকাল (বৃহস্পতিবার) তাজিকিস্তানের দুশানবে শহরে ইরান ও তাজিকিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের মধ্যে এক বৈঠকে গভীর সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও ভাষাগত সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, "পারস্য ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতা নিয়ে একটি যৌথ উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে উভয় দেশের সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাবিদরা অংশগ্রহণ করবেন। এটি পরিচয় বিলোপের প্রবণতা রোধ করার পাশাপাশি ইরান ও তাজিকিস্তানের জনগণ এবং বিশ্বজুড়ে পারস্য সংস্কৃতির অনুরাগীদের সক্ষমতাকে সংগঠিত ও শক্তিশালী করবে।"
ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, "তাজিকিস্তান ইরানের জন্য একটি দ্বিতীয় মাতৃভূমির মতো।" তিনি আরও যোগ করেন, "ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ও তাজিকিস্তানের সম্পর্কের একটি বড় সুবিধা হল ভৌগোলিক নৈকট্য এবং একটি একক সাংস্কৃতিক অঞ্চলে অবস্থান, যা গত তিন দশক ধরে দুদেশের সম্পর্ক সহজতর ও সম্প্রসারিত করেছে।"
আরেফ তাজিকিস্তানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ইরান সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, "ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সাম্প্রতিক তাজিকিস্তান সফরে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি বাণিজ্যিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং দুই দেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের ১৩টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।"
ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিসা শর্ত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কথাও উল্লেখ করে বলেন, "এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পর দুই দেশের মধ্যে পর্যটন ভ্রমণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।"
ওই বৈঠকে তাজিকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কাহহার রাসুলজাদা ইরানের প্রেসিডেন্টের সফরে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা বাস্তবায়নে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, "ইরানের পক্ষ থেকে তাজিকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য সুদৃঢ় সদিচ্ছা ও সংকল্প বিদ্যমান, যা দুই দেশের ভ্রাতৃপ্রতিম, আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক।"
তিনি উভয় দেশের মধ্যে যৌথ সহযোগিতা কমিশনের আয়োজন এবং ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের ১৩টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে বলেন, "বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে আগ্রহী এবং এ ক্ষেত্রে ভিসা শর্ত প্রত্যাহার বেসরকারি খাতের সহযোগিতা ও পর্যটন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।"
তাজিকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আরও জোর দিয়ে বলেন, ইরান ও তাজিকিস্তানের জনগণকে মিলিত করেছে তাদের অভিন্ন সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও ঐতিহাসিক মূল্যবোধ, যা দুই দেশের সম্পর্কের বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি হতে পারে।#
পার্সটুডে/এমএআর/৩০