সীমান্ত এলাকায় গোলযোগ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে ইরানের গোয়েন্দা বাহিনী
(last modified Wed, 28 Jul 2021 11:26:58 GMT )
জুলাই ২৮, ২০২১ ১৭:২৬ Asia/Dhaka

ইহুদিবাদী ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের কয়েকজন এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা।

ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক জানান, 'ইসরাইলি এজেন্টদের আটকের পর তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এসব এজেন্ট ইরানের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা সৃষ্টি এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছিল।' তিনি আরো বলেছেন, 'সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ও ইসরাইল তাদের অনুচরদের মাধ্যমে ইরানের বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড পরিচালনার চেষ্টা করে। কিন্তু সময়মতো ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রচেষ্টার কারণে শত্রুর ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যায়।' ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আরো বলেন, সম্প্রতি উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে পিস্তল, গ্রেনেড, উইনচেস্টার শটগান, কালাশনিকভ রাইফেল এবং প্রচুর পরিমাণ গুলি। তিনি জানান, এসমস্ত অস্ত্রের কিছু কিছু দাঙ্গা সৃষ্টির কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, ইরানে ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর বিপ্লবী সরকার উৎখাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, দখলদার ইসরাইল ও এ অঞ্চলে তাদের আরব মিত্ররা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছে। ঠিক একই লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইসরাইল কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে ওইসব দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইরানের  বেশ ক'জন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে যাতে ইরান জ্ঞান বিজ্ঞানে পিছিয়ে থাকে।

ইসরাইলের সামরিক বিশেষজ্ঞ ইউঅফ লিম্যুর দৈনিক ইসরাইল হাইয়্যুমে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ইরানের খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরি যাদেহকে হত্যাসহ ইরানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পেছনে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, 'মোসাদ দুবাইয়ের এক হোটেলে হামাস নেতা মাহমুদ আল মাবহুকে হত্যার এক দশক পর এখন তারা ঝুঁকি এড়ানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে এখন থেকে তারা আর সরাসরি অংশ নেবে না বরং স্থানীয় অনুচরদেরকে ব্যবহার করবে।' ইসরাইলের এই সমর বিশেষজ্ঞ তার নিবন্ধে আরো বলেছেন, 'মার্কিন সরকারের সরাসরি সমর্থন ছাড়া ইসরাইল এ ধরণের হত্যাকাণ্ড কিংবা নাশকতামূলক কাজ করতে পারে না।'

বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ এবং ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের সীমান্ত এলাকাগুলোতে জাতিগত ও ধর্মীয় বিভেদ উস্কানি দিয়ে গোলযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে তারা ইরানের ব্যাপারে নিজেদের লক্ষ্য হাসিলের চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন গ্রুপকে আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং মনস্তাত্বিক যুদ্ধ জোরদার করার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে ইরানের পশ্চিম সীমান্ত এলাকায় পানি সংকটকে কেন্দ্র করে শত্রুরা গোলযোগ বাধানোর চেষ্টা করলেও নিরাপত্তা বাহিনীর পদক্ষেপের কারণে তাদের সে চেষ্টা ভেস্তে যায় এবং অস্ত্রসহ মোসাদের কিছু এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৮