গণমাধ্যম হিসেবে রেডিও তেহরানের ভূমিকা: একটি পর্যালোচনা
বিশ্বের যেসকল দেশ থেকে বাংলা ভাষায় রেডিও অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় তার মধ্যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান হতে প্রচারিত রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান উল্লেখযোগ্য। ১৯৮২ সালের ১৭ এপ্রিল রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ তার যাত্রা শুরু করে। বহিঃবিশ্ব সম্প্রচার হিসেবে একটি ভাষা বিভাগের জন্য ৩৯টি বছর সফলভাবে অতিবাহিত করা নিঃসন্দেহে একটি গর্বের বিষয়। গণমাধ্যম হিসেবে রেডিও তেহরান শ্রোতা, দর্শক ও ভিজিটরদের কাছে কেন এত জনপ্রিয়তা পেয়েছে আসুন সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
রেডিও অনুষ্ঠান: আমি রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান শুনছি ২০০১ সাল থেকে। এই দীর্ঘ ২০ বছরের একসাথে পথচলার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, রেডিও তেহরানের সংবাদ ও সংবাদ বিশ্লেষণধর্মী অনুষ্ঠান যেমন নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রচার করা হয় তেমনি ফিচারধর্মী অনুষ্ঠানগুলো অত্যন্ত তথ্যবহুল এবং জীবনঘনিষ্ঠ। প্রতিদিনের খবর, দৃষ্টিপাত, প্রিয়জন, কুরআনের আলো, স্বাস্থ্যকথা, আলাপন, আসমাউল হুসনা অনুষ্ঠানগুলো সুন্দর জীবন গঠনে সহায়ক। রেডিওতে অনুষ্ঠানের শ্রবণমানও সন্তোষজনক।
ওয়েবসাইট: রেডিও তেহরানের ওয়েব কন্টেন্ট অত্যন্ত সুসজ্জিত। বাংলা ভাষাভাষী শ্রোতাদের মধ্যে ওয়েবসাইট ভিজিট করার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান অডিও এবং লিখিত আকারে ওয়েবসাইটে পাওয়ার ফলে শ্রোতারা সুবিধাজনক সময়ে তা শুনতে ও পড়তে পারছেন। রেডিও অনুষ্ঠান ছাড়াও এতে রয়েছে সারা বিশ্বের খবর, ইরানের খবর, ইরানের বিভিন্ন সেক্টরের তথ্য, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন বিভিন্ন প্রতিবেদন যা থেকে সকলেই উপকৃত হবে। ওয়েবসাইটের পৃষ্ঠাসজ্জা এবং নেভিগেশন অত্যন্ত চমৎকার। ওয়েবসাইটেও সরাসরি অনুষ্ঠান শোনার সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া:এখন ফেইসবুকে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান লাইভ শোনা যাচ্ছে। ফলে রেডিও অনুষ্ঠান সকলের জন্য সহজলভ্য হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তি আর সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে রেডিও তেহরানও পিছিয়ে নেই। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদেরকেও পরিবর্তন করে শ্রোতাদের কাছে পৌছানোর এই অদম্য বাসনা সত্যিই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। ফেইসবুক পেজেও নিয়মিত খবরাখবর আপডেট করা হয়।
শ্রোতা সম্পর্ক: রেডিও তেহরান রেডিও অনুষ্ঠান সম্প্রচার ও ওয়েবসাইট কনটেন্ট তৈরি করেই বসে নেই। শ্রোতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা এবং শ্রোতাদের চাহিদার মূল্যায়নেও তারা সচেষ্ট। বাংলাদেশ ও ভারতে রয়েছে রেডিও তেহরানের একাধিক মনিটর, নিজস্ব সংবাদদাতা আর অগণিত ফ্যান ক্লাব। ওয়েবসাইটে ‘শ্রোতাদের মতামত’ নামে একটি ট্যাব রাখা হয়েছে যা শ্রোতাদেরকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করার একটি চমৎকার নিদর্শন বলে আমি মনে করি।
নৈতিক শিক্ষা: রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠানসমূহের মধ্যে একটি অনন্য বৈশিষ্ট লক্ষ্য করা যায়। তা হল- নৈতিক শিক্ষামূলক বার্তা। ইসলামের আদর্শ, মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতা সম্বলিত মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানগুলো শুনতে শুরু করলে পুরোটা শেষ না করে ওঠার উপায় নেই।
সব মিলিয়ে রেডিও তেহরানের সামগ্রিক অনুষ্ঠানমালা যেমন বন্তুনিষ্ট ও নিরপেক্ষ তেমনই সুন্দর জীবন গড়ার পাথেয়। রেডিও তেহরানের দীর্ধায়ু কামনা করি।
মো. সাজ্জাদ হোসেন রিজু
৪০/৮ অধ্যক্ষ করিম উদ্দিন রোড, মহিলা কলেজ পাড়া
ঝিনাইদহ-৭৩০০, বাংলাদেশ।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন