‘রেডি তেহরান যেভাবে একজন আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে’
প্রিয় মহোদয়, রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের সকল কলাকুশলী ও শ্রোতৃবৃন্দকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই। আশা করি সকলে ভালো ও সুস্থ আছেন। আমি রেডিও তেহরানের একজন নিয়মিত ও গুণমুগ্ধ শ্রোতা। আমার কাছে রেডিও তেহরান একজন আদর্শ শিক্ষক ও আমি তার অনুগত ছাত্র।
আসলে একজন শিক্ষকের কাছে ছাত্র যা জানতে চায়, শিখতে চায়, বুঝতে চায় তার সবটুকুই আমি পাই রেডিও তেহরান থেকে। জীবনের পথে এগিয়ে চলতে একজন আদর্শ শিক্ষকের মতোই বন্ধু, দার্শনিক ও পথপ্রদর্শক হিসেবে পাশে পাই রেডিও তেহরানকে। কীভাবে এই গণমাধ্যমটি একজন আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে তা একটু বিশ্লেষণ করা যাক।
আদর্শ শিক্ষকের দায়িত্ব ও রেডিও তেহরান :
১. শিক্ষার্থীকে সারা বিশ্বে চলমান ঘটনাবলি সম্পর্কে অবগত করানো একজন আদর্শ শিক্ষকের দায়িত্ব। শিক্ষার্থীদের কাছে সংবাদ পৌঁছে দেওয়া শিক্ষকের কর্তব্য। তেমনি রেডিও তেহরান 'বিশ্বসংবাদ', 'ভারত ও বাংলাদেশের খবর' প্রচার করে শ্রোতাদের কাছে সঠিক, বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ পৌঁছে দিচ্ছে। এছাড়া 'কথাবার্তা' অনুষ্ঠানে ভারত ও বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকাগুলোর শিরোনাম ও খবর পরিবেশন করে থাকে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা ধরে তরতাজা, দুর্লভ সংবাদগুলোকে নিয়মিতভাবে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এবং মুসলিম বিশ্বের সঠিক খবর পেতে শ্রোতাদের একমাত্র ভরসা রেডিও তেহরান। গোটা বিশ্বের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের দুর্দশার সংবাদ সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ করে আজ রেডিও তেহরান মজলুম মানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছে।
২. শিক্ষকের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল কোনো বিষয়কে শিক্ষার্থীদের কাছে সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করা, যাতে করে শিক্ষার্থীদের ভাবনার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়। তেমনভাবেই রেডিও তেহরান 'দৃষ্টিপাত', 'আলাপন', 'দর্পন' অনুষ্ঠানে গোটা বিশ্বে চলমান ঘটনাবলির ওপর যুক্তিনিষ্ঠ পর্যালোচনা উপস্থাপিত করে। খবরের ভেতরের খবরকে প্রকাশ করে। কোনো ঘটনার পেছনে প্রকৃত কারণ ও ঘটনার সুদূরপ্রসারী ফলাফলকে শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরে। ফলে শ্রোতাদের মধ্যে বিষয়টি উপলব্ধি করতে অনেক সহজ হয় এবং শ্রোতাদের মধ্যে একটি জনমত গড়ে ওঠে।
৩. শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টির নিপুণ কারিগর হলেন শিক্ষক। ঠিক তেমন করেই রেডিও তেহরান 'আসমাউল হুসনা', 'কুরআনের আলো', 'আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল', 'গল্প ও প্রবাদের গল্প', 'রংধনু' প্রভৃতি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রোতাদের মধ্যে নীতি- নৈতিকতা, আদর্শ, মূল্যবোধ, মানবিকতা, সততা ইত্যাদি গুণাবলির শিক্ষা দিয়ে থাকে। শ্রোতাদের জীবনকে সত্পথে পরিচালিত করার দিকনির্দেশনা দান করে থাকে।
৪. শিক্ষকের দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কল্যাণকর সামাজিক কাজে যুক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করা। তার মধ্যে মানবপ্রেম জাগিয়ে তোলা। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা। একইভাবে রেডিও তেহরান বিভিন্ন শ্রোতাক্লাবকে সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে। এর জন্য প্রতিযোগিতারও আয়োজন করেছে। ক্লাব কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে সবচেয়ে কর্মমুখর তিনটি ক্লাবকে পুরস্কৃত করা হবে।
৫. শিক্ষকের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব থাকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তোলা। কারণ আমরা জানি স্বাস্থ্যই সম্পদ। রেডিও তেহরান একইরকম ভাবে শ্রোতাদের জন্য 'স্বাস্থ্যকথা' অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা সুচিন্তিত পরামর্শদানের ব্যবস্থা করে ।যা শুনে শ্রোতারা স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে দূরে থাকতে পারে।
৬. শিক্ষকের আর একটি কাজ হল শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা। কারণ মূল্যায়নের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের অর্জন ও অগ্রসরতা যাচাই করা যায়। অনুরূপে রেডিও তেহরান শ্রোতাদের জন্য 'মাসিক শ্রেষ্ঠ শ্রোতা প্রতিযোগিতা', 'বার্ষিক শ্রেষ্ঠ শ্রোতা প্রতিযোগিতা', 'সর্বাধিক শেয়ারার প্রতিযোগিতা', 'রেডিও তেহরান সহযোগী পুরস্কার', পূর্বের 'কুইজ প্রতিযোগিতা' ইত্যাদির মাধ্যমে শ্রোতাদের যথার্থ মূল্যায়নের ব্যবস্থা করে থাকে। এছাড়া শ্রোতাদের পাঠানো গঠনমূলক চিঠি বা মেইলগুলিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে নিয়মিত।
৭. শিক্ষকের অন্যতম প্রধান দায়িত্বের মধ্যে পড়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ও তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা। একইপ্রকারে রেডিও তেহরান শ্রোতাদের সঙ্গে ফেসবুক গ্রুপ, ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ, 'প্রিয়জন' অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের চিঠিপত্র পাঠ ও সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে যায়। নিজস্ব ওয়েবসাইটে ২৪ ঘণ্টাজুড়ে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করে শ্রোতাদের সঙ্গে সর্বক্ষণের আত্মিক যোগাযোগ রেখে চলে একজন আদর্শ শিক্ষকের মতোই।
রেডিও তেহরানের সান্ধ্য অধিবেশনের একটি ঘণ্টা আমার কাছে জ্ঞান আহরণের ও আত্তীকরণের এক ঘণ্টা। এই অনুষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত সংবাদ, তথ্য ও বিনোদন আমার অর্জন, আমার পথ চলার পাথেয়। রেডিও তেহরানের মার্গ দর্শনেই এগিয়ে চলতে চাই আমার জীবনের পথে। আর সেই পথযাত্রা হোক জ্ঞানময়, কৌতুহলজনক, কল্যাণময় ও মাধুর্যময়। এই কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদান্তে,
ভাস্কর পাল
মহেন্দ্রনগর অগ্রগামী ক্লাব
পোস্ট: নাটাগড় (সোদপুর), জেলা: উত্তর ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৩০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।