মে ২৬, ২০২৪ ২১:১৮ Asia/Dhaka
  • নানা জাতির মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উন্নয়নে পবিত্র কুরআনের একটি নির্দেশ: ছিদ্রন্বেষণ ও উপহাস বা পরিহাস থেকে দূরে থাক
    নানা জাতির মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উন্নয়নে পবিত্র কুরআনের একটি নির্দেশ: ছিদ্রন্বেষণ ও উপহাস বা পরিহাস থেকে দূরে থাক

ইরানের বিশ্বখ্যাত কবি মাওলানা রুমি মহানবীর (সা) একটি হাদিস ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এক শ্রেণীর মানুষ প্রকাশ্যে অন্যদের দোষ-ত্রুটির কথা বলে বেড়ায় অথচ নিজেদের দোষ-ত্রুটির ব্যাপারে তারা অন্ধ।

পবিত্র কুরআনে সুরা হুজুরাতের ১১ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন:

মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কারণ, সে উপহাসকারিণীর চেয়ে শ্রেয় হতে পারে। তোমরা একে অন্যের ওপর দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ ঈমান আনলে তথা বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা করে না তারাই যালিম।

 

একে অন্যকে উপহাস করা এক শ্রেণীর মানুষের মজ্জাগত কুস্বভাব। কখনও এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে এবং কখনওবা একটি জাতি অন্য জাতিকে বা এক গোত্র অন্য গোত্র বা সম্প্রদায়কেও পরিহাস করে। এইসব মানুষ সাধারণত নিজেদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে এবং কেবল অন্যদের দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। আসলে এই শ্রেণীর মানুষ ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় নিজেদের দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখতে এইসব কাজ করে। আসলে যেসব ত্রুটির কথা তারা বলে সেসব ত্রুটি নয় বরং সেসবই হচ্ছে ব্যক্তিগত বা জাতিগত পার্থক্য। আর এই পার্থক্যকে শ্রেষ্ঠত্ব বা ক্ষুদ্রত্ব বলা যায় না। তাই কারো গায়ের রংয়ের জন্য কাউকে অপমান করার কোনো যুক্তি নেই। যার গায়ের রং অনুজ্জ্বল সে হয়তো নানা দিক থেকে বেশি গুণের অধিকারী বা খোদাভীরুতার কারণে সে আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানের অধিকারী।

 

আর কাউকে উপহাস করা আরও বেশি মন্দ কাজ। কোনো বিষয় নিয়ে কাউকে হেয় করা অপ্রিয় বিষয়। কিন্তু উপহাস করা মানে তার গোটা সত্ত্বাকে নিয়ে তামাশা করা।

মহান আল্লাহ ছিদ্রান্বেষণ করতেও নিষেধ করেছেন। মহানবী (সা) বলেছেন, সুখি তারা যারা নিজেকে অন্যের ছিদ্রান্বেষণ থেকে বিরত রাখে

 

ইরানের বিশ্বখ্যাত কবি মাওলানা রুমি মহানবীর (সা) একটি হাদিস ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এক শ্রেণীর মানুষ প্রকাশ্যে অন্যদের দোষ-ত্রুটির কথা বলে বেড়ায় অথচ নিজেদের দোষ-ত্রুটির ব্যাপারে তারা অন্ধ।

ইরানি কবি নিজামিও বলেছেন যত বেশি সম্ভব সৌন্দর্য ও নেক বা কল্যাণকর বিষয়ের অনুসন্ধানী হতে যাতে আমরা সৌন্দর্য ও শিল্প অর্জন করতে পারি।

 

কোনো মুমিনকে মন্দ নামে ডাকতে নিষেধ করেছেন মহান আল্লাহ। কারণ যে আল্লাহর দাস সে পবিত্র নামের অধিকারী।

আয়াতের শেষাংশে আল্লাহ তাদের তওবা করতে বলেছেন যারা তাদের পাপাচারের বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। তা না হলে তারা হবে যালিম বা অবিচারক। পাপ বা যুলুমের ওপর অবিচল থাকলে মানুষের ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। তাই পাপাচার মানে ঈমানহীনতা (সুরা বাকারা-২৫৪)।  

আজকাল মানুষ যেসব হাসি-ঠাট্টা করে বেশিরভাগ সময়ই তাতে থাকে অন্যকে উপহাস করা বা অন্যের, বিশেষ করে অন্যান্য জাতি বা গোত্রের লোকদের দোষ তুলে ধরার প্রবণতা যা করতে মহান আল্লাহ নিষেধ করেছেন। ঠাট্টা বা রসিকতা যেন অন্যদের প্রতি বা বিশেষ করে কোনো জাতি বা কোনো ব্যক্তির প্রতি অপমানজনক না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলেছে ইসলাম। যেমন, জাপানিরা এমন বা আফ্রিকানরা অমন! এ ধরনের বক্তব্য শত্রুতা সৃষ্টি করে।

 

মহান আল্লাহ কোনো কোনো জাতি বা ব্যক্তির নিন্দা করেছেন এই উদ্দেশ্যে যে তারা যেন ওইসব ত্রুটি বা বদ স্বভাব থেকে দুরে থাকে, তাদের অপমান বা তাদের ছিদ্রান্বেষণের জন্য তা তিনি করেননি। #

পার্সটুডে

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।    

 

ট্যাগ