ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর আমিরাত সফর মধ্যপ্রাচ্যের জন্য অশনি সংকেত
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i101210
ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাওয়ার পর সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। আবুধাবি পৌঁছে নাফতালি বেনেত আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হন।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
ডিসেম্বর ১৩, ২০২১ ১৯:৫৯ Asia/Dhaka

ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাওয়ার পর সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। আবুধাবি পৌঁছে নাফতালি বেনেত আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হন।

আবুধাবি ও তেলআবিবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তারের অংশ হিসেবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী সেদেশ সফরে গেলেন। অবশ্য গত বছর সেপ্টেম্বর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকেই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চলে আসছে এবং দু পক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগও অব্যাহত রয়েছে। এরপর গত জুনে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ের লাপিদ সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যান। দখলদার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর এটাই ছিল প্রথম আমিরাত সফর।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও ইসরাইল ও আমিরাতের কর্মকর্তাদের মধ্যে সফর বিনিময় অব্যাহত রয়েছে। এ অঞ্চলের আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের পথে এখনো যেসব বাধা রয়ে গেছে ইসরাইল চায় সেইসব বাধা দূর করতে। এ ক্ষেত্রে ইসরাইল ও আমিরাতের কর্মকর্তারা পরস্পরকে সহযোগিতা করছে। ইসরাইল কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে আমিরাতও ইসরাইলকে সহযোগিতা দেয়ার মাধ্যমে এ অঞ্চলে নিজের অবস্থান শক্তি শক্তিশালী করতে পারবে বলে ধারণা করছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ সিরিয়া সফর করেছেন এবং এর কিছু দিন পর আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তাহনুন বিন জায়েদ ইরান সফরে আসেন। এ থেকে বোঝা যায় আমিরাত  এ অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার নীতি নিয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টার তেহরান সফরের পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর আমিরাত সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এ সফরকালে ইসরাইল ও আমিরাত নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করেছে। এদিকে, ইসরাইলের গণমাধ্যমগুলো ইরানের সঙ্গে আমিরাতের ঘনিষ্ঠতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। লন্ডন ভিত্তিক মিডিলইস্ট আই অন লাইন পত্রিকা লিখেছে ইসরাইলি কর্মকর্তারা মনে করেন ইরানের সঙ্গে আমিরাতের সুসম্পর্ককে কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

যাইহোক, ভিয়েনায় যখন  চার যোগ এক গ্রুপের সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনা চলছে ঠিক তখন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর আমিরাত সফর তাৎপর্যপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। ইসরাইল পরমাণু সমঝোতার তীব্র বিরোধী কিন্তু আমিরাত ইরানের পরমাণু কর্মসূচীর ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে। তাই এ বিষয়টি আমিরাতের সঙ্গে  ইসরাইলের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের বৈঠক শুরুর প্রাক্কালে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী আমিরাত সফরে গেলেন। আগামীকাল রিয়াদে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তাই বৈঠককে সামনে রেখে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বার্তা বহন করে আনতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর আমিরাত সফরের ফলে সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথও খুলে যাবে এবং ক্রমান্বয়ে এই সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসবে।

যাইহোক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইসরাইলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর ঘনিষ্ঠতার ফলে ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে এবং এটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্য অশনি সংকেত। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।