বাহরাইনের রাজার রিয়াদ সফর: সৌদি সেনা প্রেরণ ১২ বছরে পড়লো
আর মাত্র দশ দিন পর বাহরাইনে সৌদি সেনা প্রেরণের ঘটনা ১২তম বছরে প্রবেশ করবে। এরই মধ্যে বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ইসা আলে খলিফা রিয়াদ সফরে গিয়ে সৌদি রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজের সাথে সাক্ষাত করেছেন। বাহরাইনের রাজা গতকাল ৩ মার্চ ওই সাক্ষাতে মিলিত হন এবং দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়টি ছাড়াও আঞ্চলিক বিষয়াদি নিয়েও কথাবার্তা বলেছেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাহরাইন ও সৌদি আরবের মধ্যকার সম্পর্ক কোনো স্বাধীন দেশের সম্পর্ক নয় বরং এ সম্পর্ক প্রভু ও প্রজার সম্পর্কের মতো। অর্থাৎ সৌদি আরব বাহরাইনকে তাদের ওপর নির্ভরশীল একটি তাবেদার সরকার মনে করে। ২০১১ সালে বাহরাইনে স্বৈরসরকার বিরোধী গণআন্দোলন শুরু হয় এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। বাহরাইনের জনগণ সরকারের অত্যাচার, নির্যাতন, জুলুম, অবিচার, জনসংখ্যার কাঠামোয় পরিবর্তনের চেষ্টা প্রভৃতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। জনগণের তীব্র প্রতিবাদ এবং সরকারের পতন ঠেকানোর লক্ষ্যে আলে খলিফা সরকার গণআন্দোলন দমনের জন্য সৌদি আরবের হস্তক্ষেপ কামনা করে।
বাহরাইনে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরুর পর আলে খলিফা সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ২০১১ সালে ১৪ মার্চ সৌদি আরব মানামায় সেনা পাঠায়। এখন পর্যন্ত বাহরাইনের গণআন্দোলন দমনে সৌদি সেনারা বিরাট ভূমিকা রাখছে। সৌদি আরব সেনা পাঠানোর পর ২০১১ সাল থেকে বাহরাইন পুরোপুরি সৌদি আরবের সেবাদাসে পরিণত হয়েছে এবং এ অঞ্চলের যে কোনো ঘটনাবলীতে তারা রিয়াদের অন্ধ অনুসরণ করছে।
বাহরাইনের রাজার সৌদি আরব সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা দেখানো যে রিয়াদের প্রতি তাদের পূর্ণ আনুগত্য বহাল রয়েছে। আজকের সাক্ষাতে উভয় নেতা বাহরাইনের নিরাপত্তা ও সামরিক ক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। যদিও বাহরাইনের জনগণ বিশ্বাস করে যে সৌদি আরব একটি আগ্রাসী দেশ।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটনে ইসরাইল ও বাহরাইনের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে চুক্তি সই হয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ওই চুক্তি হয়েছিল। ধারণা করা হয় বাহরাইন সৌদি আরবের সমর্থন ছাড়া কোনো কাজই করতে পারে না এবং ইসরাইলের সাথে বাহরাইনের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পেছনে সৌদি আরবের উস্কানি রয়েছে। অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথেও ইসরাইলের সম্পর্ক উন্নয়নে সৌদি আরবের ভূমিকা ছিল এবং এর ফলে এ অঞ্চলে ইসরাইল আরো বেশি প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে। এ অবস্থায় বাহরাইনের রাজার সৌদি আরব সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।