বিচারিক সংস্কার বিলের বিরুদ্ধে
ব্যাপক রাজনৈতিক চাপ এবং বিক্ষোভের জের: হাসপাতালে ভর্তি হলেন নেতানিয়াহু!
ইহুদিবাদী ইসরাইলের সংবাদ মাধ্যম গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে যে এই অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে তেল আবিবের কাছে তেল হাশোমার এলাকায় অবস্থিত "শেবা" চিকিৎসা কেন্দ্রের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
ওয়াল্লা নিউজের মতে, নেতানিয়াহু তার বাড়িতে অবস্থানকালে স্বল্প সময়ের জন্য জ্ঞান হারানোর পর তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। একই সময়ে ইহুদিবাদী টিভি চ্যানেল-১২ জানিয়েছে যে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শেবা তেল হাশোমির হাসপাতালের হৃদরোগ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকবেনএবং এ কারণে রোববারের সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠক বাতিল করা হয়েছে এবং সোমবার পর্যন্ত তা স্থগিত করা হয়েছে।
যাইহোক, নেতানিয়াহু হাসপাতাল থেকে একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন যে তিনি গতকাল টুপি ছাড়া এবং সূর্যের নীচে পানি ছাড়াই কাটিয়েছেন। সে কারণেই তিনি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। নেতানিয়াহুর অসুস্থতা যে কারণে সংবাদে এসেছে তা মূলত নেতানিয়াহুর নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর অধিকৃত ফিলিস্তিনকে নিয়ে বিশেষ এবং নজিরবিহীন রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সংকটের কারণে।মূলত অধিকৃত ফিলিস্তিন ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও তেল আবিবের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন সংকট তৈরি করেছে। আর এ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই নেতানিয়াহুর ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করেছে যদিও তিনি তা নিজের ওপর না আনার চেষ্টা করছেন বা তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
নেতানিয়াহুর নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আগে থেকেই দেশটিতে নজিরবিহীন অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ চলে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দখলকৃত অঞ্চলের কয়েক হাজার অধিবাসী নেতানিয়াহু সরকার এবং তার চরমপন্থী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসে।
তেল আবিবের প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ এবং ইসরাইলের অন্যান্য শহরে প্রায় ২ লাখ মানুষ বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উগ্র-ডানপন্থী মন্ত্রিসভার বিতর্কিত বিচারিক সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ জানিয়েছে।
শনিবারের বিক্ষোভগুলো নেতানিয়াহুর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের টানা ২৪ তম সপ্তাহ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায় তাতে ইহুদিবাদী শাসকের বিচার ব্যবস্থার ক্ষমতা হ্রাস করা হবে এবং নির্বাহী ও আইন বিভাগের ক্ষমতা ও অবস্থানকে শক্তিশালী করা হবে। এই পরিকল্পনায় এই শাসনব্যবস্থার বিচার ব্যবস্থাকে দুর্বল করবে। একইসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ এবং রাজনৈতিক দলগুলো দলীয় সদস্য ও রাজনীতিবিদদের নিয়োগ দিয়ে আদালতে বিচারক নির্বাচন কমিটিকে নিয়ন্ত্রণ করার এবং বিচারকদের এই কমিটির সদস্য হতে বাধা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
অন্যদিকে নেতানিয়াহুর সরকার দাবি করে আসছে যে এই সংস্কারগুলো সংসদ এবং বিচারিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বলে আসছেন যে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা হ্রাস করবে এবং রাজনীতিবিদদের বিচারক বাছাইয়ে আরও বেশি কর্তৃত্ব পাবে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন যে নেতানিয়াহু বিচার বিভাগকে দুর্বল করে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। তারা আরো অভিযোগ করেছেন যে নেতানিয়াহুর প্রস্তাবিত সংস্কার দুর্নীতির মামলায় তার বিরুদ্ধে মামলা এড়াতে সহজ করতে পারে।প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার মেয়াদকালে নেতানিয়াহু ঘুষ, জালিয়াতি এবং জনগণের বিশ্বাস ভঙ্গসহ অসংখ্য দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন।#
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।