ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিভাগের প্রধান
গাজায় ইসরাইলিদের শিশু হত্যা নজিরবিহীন: ইউনিসেফের প্রতিবেদন
২০২৩ সাল ছিল পশ্চিম তীরের শিশুদের জন্য সবচেয়ে প্রাণহানীকর বছর। এই মন্তব্য জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের। এই বিশ্ব সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিভাগের প্রধান আদেল খাদার গতকাল (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে ওই ঘোষণা দেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে পূর্ব বায়তুল মোকাদ্দাসসহ পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি শিশুদের শহীদের সংখ্যা নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আদেল খাদার বলেছেন: গত বারো সপ্তায় সামরিক অভিযান বৃদ্ধির ফলে পশ্চিম তীরে ৮৩ শিশু নিহত হয়েছে যা ২০২২ সালের পুরো সময়ের শিশু নিহতের সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি। তিনি বলেন পশ্চিম তীরে ৫৭৬ টিরও বেশি শিশু আহত হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিবেদনে ওই এলাকায় আরও বহুসংখ্যক ফিলিস্তিনি শিশুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইলিরা যে গাজার সাম্প্রতিক যুদ্ধেই শিশুহত্যা করেছে তা নয়। ফিলিস্তিনি শিশুরা সর্বদাই ইহুদিবাদী সেনাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে এবং শিশুহত্যা এই দখলদার শাসকগোষ্ঠীর একটি স্থায়ী প্রবনতা। ২০০০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত অর্থাৎ ২০ বছরে, ইহুদিবাদী সেনারা ৩ হাজার ফিলিস্তিনি শিশু ও কিশোরকে শহীদ করেছে। ইহুদিবাদী ইসরাইল সাম্প্রতিক প্রতিরোধ শক্তির মোকাবেলায় বিস্ময়করভাবে পরাজিতের অবস্থানে থেকে আবারও শিশুহত্যার স্বাভাবিক পন্থা বেছে নিয়েছে।
ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত ৭ অক্টোবর আল-আকসা অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি শিশুরা আশঙ্কাজনক গতিতে মারা যাচ্ছে। সেখানে ৫ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত এবং হাজার হাজার শিশু আহত হয়েছে। ১৭ লক্ষ ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হয়ে গেছে যার অর্ধেকই শিশু। পর্যাপ্ত পানি, খাবার, জ্বালানি ও ওষুধ কিছুই পাচ্ছে না তারা। তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। তাদের পরিবারগুলোও ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।
গাজার শিশুদের ওপর ইহুদিবাদীদের অপরাধ এতটাই গুরুতর এবং অমানবিক যে ইউনিসেফ তার প্রতিবেদনে লিখেছে: যুদ্ধেরও কিছু নিয়ম-কানুন আছে। কোনও শিশুকে প্রয়োজনীয় পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা বা মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। কোনো শিশুকে জিম্মি করা বা সশস্ত্র সংঘাতে তাদেরকে কোনোভাবেই ব্যবহার করা উচিত নয়। হাসপাতাল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই বোমা হামলা থেকে রক্ষা করতে হবে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী এগুলোকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু গাজা উপত্যকায় হিংস্রতা বৃদ্ধির ফলে শিশু ও পরিবারের ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব পড়েছে।
আমেরিকার নেতৃত্বাধীন শিশু ও মানবাধিকারের দাবিদাররা গাজার জনগণ বিশেষ করে শিশুদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদীদের নির্বিচার অপরাধ দেখতে পাচ্ছে না। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে আমেরিকা জিম্মি করে রেখেছে। তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলের শিশু হত্যা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতেও অক্ষম হয়ে পড়েছে।#
পার্সটুডে/এনএম/২৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।