ইহুদিবাদী নেতাদের অবস্থা নাৎসিদের চেয়েও খারাপ
(last modified Tue, 16 Jul 2024 11:24:38 GMT )
জুলাই ১৬, ২০২৪ ১৭:২৪ Asia/Dhaka
  • ইহুদিবাদী নেতাদের অবস্থা নাৎসিদের চেয়েও খারাপ

পার্সটুডে-মিশরের একজন বিশিষ্ট লেখক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক হাসান বাদি বলেছেন: ইরানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদীদের হুমকির অর্থ হল ইহুদিবাদী কর্মকর্তা আত্মহত্যার কথা ভেবেছে এবং অনুভব করছে যে তারা তাদের পতনের কাছাকাছি রয়েছে।

ইরানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর হুমকির সঠিক বিশ্লেষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। পার্সটুডে'র মতে এই বিষয়ে হাসান বাদি ইসরাইলের সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী এভিগডর লিবারম্যানের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী ইরানের বিরুদ্ধে যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন তা থেকে মনে হয়, ইহুদিবাদীরা গভীর সংকটে রয়েছে এবং আমেরিকাসহ ন্যাটোর সমর্থন সত্ত্বেও তারা পতনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। লিবারম্যান সম্প্রতি ইরানের ওপর পারমাণবিক হামলার হুমকি দিয়েছে।

হাসান বাদি আরও বলেন:  

ইরানের বিরুদ্ধে লিবারম্যানের ঐতিহাসিক বক্তব্যের অর্থ হল তেল আবিব ইরানকে ভয় পায়। সেইসাথে ইসরাইলের অভ্যন্তরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর থেকে প্রতিরোধ শক্তির ধারাবাহিক বিজয় নিয়ে তারা গভীরভাবে চিন্তিত।

তিনি বলেন: ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইহুদিবাদী শত্রুর ২টি বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তেল আবিবকে একটি কঠিন শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাটি হলো ইরান কিংবা প্রতিরোধ শক্তির আগুন নিয়ে খেলা করো না।

ইহুদিবাদী ইসরাইল এমন সময় ইরানকে হুমকি দিচ্ছে যখন ওই সরকারের মিডিয়াগুলোই ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে জনবলের অভাব এবং তাদের সেনাদের মন-মানসিক সমস্যার কথা স্বীকার করেছে।

ইহুদিবাদী মিডিয়াগুলোই ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিখ্যাত গোলানি ব্রিগেডের একজন সেনার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে তাদের সেনারা ফলাফলশূন্য গাজা উপত্যকায় এবং লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে উত্তর ফ্রন্টে অনিয়মিত যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, তারা লেবাননের সাথে যুদ্ধে করতে প্রস্তুত নয়। যুদ্ধ চলতে থাকলে সামরিক বাহিনীতে প্রচণ্ড মানসিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

এর আগেও সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছিলো ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠি সেনা সংগ্রহের জন্য ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেছে। কারণ হলো গাজা যুদ্ধে উপস্থিত অনেক সেনাই যুদ্ধপ্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। এমনকি সেনাবাহিনীতে যোগদানের যোগ্য বহু ইহুদিবাদী যুদ্ধে যাবার ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।

এরকম হুমকি থাকা সত্ত্বেও ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠি গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে এবং গাজায় প্রতিরোধ শক্তির কমান্ডারদের হত্যার চেষ্টা চালিয়ে যেতে নতুন নতুন অপরাধ করেই যাচ্ছে।

আঞ্চলিক কৌশলগত বিষয়ের বিশ্লেষক আব্দুল বারী আতওয়ান দৈনিক রাই আল-ইয়াওম পত্রিকার নিউজ ওয়েবসাইটে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। ওই নিবন্ধে তিনি বলেছেন: গাজা উপত্যকায় ৯ মাস ধরে পাশবিকতাপূর্ণ গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানো হয়েছে। এরপরও ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখনও যে-কোনো উপায়ে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মতো কাসসাম ব্রিগেডের সামরিক শাখার অন্তত একজন কমান্ডারকে কিংবা তার উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে অন্তত একজনকে হলেও হত্যা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু তার ওই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে এবং নেতানিয়াহুর কপালে আরও লজ্জাজনক পরাজয় অপেক্ষা করছে।

তেলআবিব দাবি করেছে যে তাদের পাশবিক হামলায় সম্প্রতি কাসসাম ব্রিগেডের ২ নেতা নিহত হয়েছে। একজন কাসাম ব্রিগেডের কমান্ডার মোহাম্মদ আল-জাঈফ খান ইউনূসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় শহীদ হয়েছেন এবং অপরজন খান ইউনূস ব্রিগেডের কমান্ডার রাফে সালামেহ, তিনিও ইসরাইলি সেনাদের হামলায় শহীদ হয়েছেন। অবশ্য তাদের এই বিজয় উদযাপন দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। তেল আবিবের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ, যাদের সক্ষমতা এবং চৌকষ গোয়েন্দাবৃত্তি অত্যন্ত উন্নত পর্যায়ের বলে নেতানিয়াহু সবসময় গর্বের সঙ্গে দাবি করেন, তারা প্রতিরোধ নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে টানা হাজারতম বার ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের কেলেঙ্কারির ঢোল এখন সর্বত্র ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

এই আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ ইঙ্গিত করে বলেছেন: বর্বর ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে দীর্ঘতম এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল যুদ্ধ পরিচালনা করতে প্রতিরোধ বাহিনীর কমান্ডাররা তাদের ভূ-গর্ভস্থ অপারেশন কক্ষে থাকবেন। তিনি আরও বলেন: সেই অপরাধের জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলকে অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে। রাজনৈতিক কিংবা সামরিক কমান্ডার যারাই ওই অপরাধের সঙ্গে শামিল থাকবে, তাদের সকলকেই নিজে নিজ কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দেওয়া হবে। জার্মানির নাৎসি বাহিনী ইহুদিবাদীদের সমপক্ষকে যেরকম শাস্তি দিয়েছিল প্রতিরোধ বাহিনীর কমান্ডারদের দেওয়া শাস্তি হবে তারচেয়েও ভয়ংকর এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধীদের দেওয়া শাস্তির চেয়েও খারাপ।#

পার্সটুডে/এনএম/১৬                       

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ