আল-জোলানি জাতীয় ঐক্য চান নাকি সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড চান?
(last modified Wed, 02 Jul 2025 13:45:56 GMT )
জুলাই ০২, ২০২৫ ১৯:৪৫ Asia/Dhaka
  • আল-জোলানি জাতীয় ঐক্য চান নাকি সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড চান?
    আল-জোলানি জাতীয় ঐক্য চান নাকি সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড চান?

পার্সটুডে: সিরিয়ায় গোলানি সরকারের হাতে আলাভি বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার তদন্ত করেছে রয়টার্স।

সিরিয়ায় গোলানি সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ছয় মাস পর রয়টার্স জানিয়েছে যে মার্চ মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমর্থকদের হাতে ১,৫০০ আলাভি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। পার্সটুডের মতে,নাম বা ধর্মের কারণে প্রায়শই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়া ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন নারী, শিশু এবং বয়স্করা।

প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ১,০০০ যেখানে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা ৭৪৫ বলেছে, যার মধ্যে ১২৫ জন সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং ১৪৮ জন আসাদের অনুগত যোদ্ধা রয়েছে। পরিসংখ্যানের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও উভয় প্রতিবেদনই একটি বিষয়ের উপর জোর দিচ্ছে আর তা হল সাম্প্রদায়িক বা আঞ্চলিক পার্থক্যের ভিত্তিতে এই হত্যাকাণ্ডগুলো করা হয়েছিল।

রয়টার্সের ঘনিষ্ঠ পর্যালোচনা থেকে জানা যায় যে গোলানি সরকারের সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সশস্ত্র ইউনিটের সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট। এই শাসনব্যবস্থায় এখন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এর প্রাক্তন সদস্যরা আধিপত্য বিস্তার করছে, যা আল-কায়েদার একটি শাখা, যদিও এখন বিলুপ্ত এবং তারা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে। এর নেতা আহমেদ আল-শারা দামেস্ক সরকারকে উৎখাত করে জানুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করেন।

নৃশংসতাগুলো কমপক্ষে চল্লিশটি গ্রাম বা পাড়ায় সংঘটিত হয়েছিল যেখানে বেশিরভাগই আলাভি সম্প্রদায়রা ছিল এবং বিভিন্ন বাহিনীর একটি জোট দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। সাবেক এইচটিএস সদস্য, সম্প্রতি নতুন সরকারে যোগদানকারী সুন্নি ব্রিগেড এবং সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইউনিট। ওথমান ব্রিগেড এবং ইউনিট ৪০০ সহ এই বাহিনীর কিছুর বিরুদ্ধে আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অনেক এলাকায়, আক্রমণকারীরা নামের তালিকা নিয়ে এসে আসাদের প্রতি অনুগত বাহিনীর প্রাক্তন সদস্যদের, এমনকি যাদের সম্প্রতি ক্ষমা করা হয়েছিল তাদেরও লক্ষ্য করে। রয়টার্সের প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট উপাধি থাকার কারণে পুরো পরিবারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

এই হত্যাকাণ্ডের পদ্ধতিগুলো অত্যন্ত সহিংস ছিল: মৃত্যুদণ্ড, অঙ্গহানি, জনসাধারণের অবমাননা এবং দৃশ্যের চিত্রগ্রহণ। এই অপরাধে কয়েক ডজন নারী, শিশু, বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিও মারা গেছেন।

কিছু জায়গায়, আলাউই গ্রামগুলো সম্পূর্ণরূপে খালি করে দেওয়া হয়েছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে সুন্নি পরিবারগুলোকে তাদের জায়গায় বসানো হয়েছিল। আক্রমণকারীরা প্রবেশের সময় যে প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেছিল তা ট্র্যাজেডির গভীরতা নির্দেশ করে: "আপনি কি সুন্নি নাকি আলাভি?" হত্যাকাণ্ডের সময় আল-জোলানি আলাউই বিদ্রোহীদের তাদের অস্ত্র রেখে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানান। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি 'জাতীয় ঐক্য'র আহ্বান জানান। তবে, রয়টার্সের মতে,আলাউইদের উপর হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।

পার্সটুডে/এমবিএ/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।