শেষ পর্যন্ত অধিকৃত ফিলিস্তিনে বসতি নির্মাণকেও বৈধতা দিল ট্রাম্প সরকার
-
পশ্চিম তীরে অবৈধ ইহুদি বসতি
আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী ইসরাইলের সব ধরনের অপকর্মের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন ঘোষণা করেছেন। এমনকি আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টরা যেসব ক্ষেত্রে ইসরাইলকে সমর্থন জানাতে দ্বিধা করতেন সেসব ক্ষেত্রেও নির্লজ্জভাবে সমর্থন দিয়েছেন ট্রাম্প। এ কাজে নিজের ইউরোপীয় মিত্রদের পরামর্শকেও উপেক্ষা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সর্বশেষ তেল আবিবের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানাতে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ফিলিস্তিনি ভূমিতে অবৈধভাবে নির্মিত ইহুদি বসতিগুলোকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন। এতদিন জাতিসংঘ, ইউরোপীয় দেশগুলো এবং আমেরিকা এসব বসতিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে আসছিল। পম্পেও দাবি করেন, বসতি নির্মাণ করে ইসরাইল বেআইনি কোনো কাজ করছে না এবং এতে আন্তর্জাতিক আইনও লঙ্ঘিত হচ্ছে না।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার মন্ত্রণালয় ১৯৮৭ সালে পাস করা এ সংক্রান্ত একটি আইন স্থগিত করবে। ওই আইনে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদি উপশহর নির্মাণকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি জনগণ ও প্রতিরোধ সংগঠনগুলো একযোগে আমেরিকার এই নয়া নীতির বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে। ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ আশতিয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, পম্পেও তার বক্তব্যের মাধ্যমে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছেন। নিরাপত্তা পরিষদের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে ইহুদি বসতি নির্মাণকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ’ও বলেছে অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদি বসতি নির্মাণ অবৈধ। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ফেডেরিকা মোগেরিনি আজ (মঙ্গলবার) সকালে বলেছেন, ফিলিস্তিনি ভূমিতে জোর করে ইহুদি বসতি নির্মাণের ব্যাপারে ইউরোপে নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সব ধরনের বসতি নির্মাণ অবৈধ। তিনি এ ধরনের বসতি নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করে ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানান।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ নম্বর প্রস্তাবে অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদি বসতি নির্মাণকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া, ২০১৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এই পরিষদের ২৩৩৪ নম্বর প্রস্তাব পাস হয় যেখানে অধিকৃত ভূখণ্ড তাৎক্ষণিকভাবে বসতি নির্মাণ বন্ধ করার জন্য তেল আবিবের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। জাতিসংঘের দৃষ্টিতে ইসরাইল এসব ভূখণ্ড ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে জবরদখল করেছে এবং দখলীকৃত ভূমিতে যেকোনো ধরনের নির্মাণ কাজ অবৈধ।
কিন্তু আমেরিকার সমর্থন হাতে থাকায় জাতিসংঘের এসব প্রস্তাবকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। তেল আবিব বসতি নির্মাণ করে অধিকৃত ফিলিস্তিনের জনবসতিতে এমনভাবে পরিবর্তন আনতে চায় যাতে একদিন ফিলিস্তিনিরা আর এই ভূখণ্ডকে তাদের মাতৃভূমি বলে দাবি করতে না পারে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের এই অন্যায় ও অবৈধ কর্মকাণ্ডকে এখনই রুখে দেয়া সম্ভব না হলে তারা ভবিষ্যতে এর চেয়ে আরো অনেক বড় অবৈধ কাজ করতেও দ্বিধা করবে না।#
পার্সটুডে/এমএমআই/এআর/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।