ইরানের বিমানবাহিনী-প্রধানের হুঁশিয়ারি ও আঞ্চলিক শান্তি
(last modified Sat, 11 Jul 2020 12:50:07 GMT )
জুলাই ১১, ২০২০ ১৮:৫০ Asia/Dhaka

ইরানের বিমানবাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ বলেছেন, তার দেশের সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চ মাত্রার সামরিক প্রস্তুতির কারণে শত্রুরা ইসলামী এই দেশের মাটিতে কোনো ধরনের আগ্রাসনের সুযোগ পাবে না। 

ইসলামী ইরানের সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদী দাম্ভিক শক্তিগুলোর বিগত চল্লিশ বছরের শত্রুতার কথা তুলে ধরে তিনি এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

নাসিরজাদেহ ইরানের সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারী ও ইরানকে গোটা পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বলে মন্তব্য করেন। 

ইরান মনে করে ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষা প্রতিবেশী দেশগুলোর সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয়। এরই আলোকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ২০১৯ সালে 'হরমুজের শান্তি' নামের একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। এ থেকে বোঝা যায় ইরান এ অঞ্চলের দেশগুলোকে নিয়েই এ অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষার নীতিতে বিশ্বাসী।

অন্যদিকে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির অন্যতম উদ্দেশ্য হল কৃত্রিম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফায়দা তোলার পাশাপাশি ইসরাইলের নিরাপত্তা জোরদার ও ইরানের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা শক্তিকে, বিশেষ করে দেশটির অত্যাধুনিক ও বিপুল ক্ষেপণাস্ত্র শক্তিকে দুর্বল করা।

তিউনিসিয় বিশ্লেষক লুতফি আলউবাইদির মতে, ইরান আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে মার্কিন সরকার অস্ত্র ব্যবসা জোরদার এবং দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে আরব সরকারগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করা ও কথিত শতাব্দীর চুক্তির আওতায় ইসরাইলি দখলদারিত্ব বিস্তার ও পাকাপোক্ত করাসহ নানা ধরনের অবৈধ ফায়দা হাসিলের পথ সুগম করছে।

পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির আরও এক বড় উদ্দেশ্য হল ইরান-ভীতির আলোকে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষা করাকে আন্তর্জাতিক রূপ দেয়া। একই লক্ষ্যে মার্কিন সরকার এ অঞ্চলে বিশেষ করে হরমুজ প্রণালী এবং ওমান সাগরে নতুন আন্তর্জাতিক আইন চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে ও এই অজুহাতে ওয়াশিংটন গোটা অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতিকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বৈধতা দিতে চায়। এ ছাড়াও মার্কিন সরকার হরমুজ প্রণালীকে টার্গেট করে একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট গঠন করতে চায় এবং হরমুজ প্রণালীতে ইরানের অবস্থান ও উপস্থিতিকে বিশ্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।   

এইসব লক্ষ্যকে সামনে রেখে মার্কিন সরকার ইরানের চারদিকে নানা ধরনের নিরাপত্তার সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।  

কিন্তু বিশ্বের প্রত্যেক সচেতন মানুষের কাছেই এটা স্পষ্ট যে ইরান-আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে মার্কিন সরকার নিজেকে হরমুজ প্রণালীর ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের ত্রাণকর্তা হিসেবে দেখাতে চাইলেও আসলে ওয়াশিংটনই এ অঞ্চলে নিরাপত্তার সংকট সৃষ্টি করছে। অন্য কথায় এটা স্পষ্ট মার্কিন সরকার পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের ত্রাণকর্তা নয় বরং এ অঞ্চলে বহিরাগত দস্যু ও সন্ত্রাসী।

ইরানের বিমান বাহিনীর প্রধানের বক্তব্য এরই আলোকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীও তার দেশের প্রধান শত্রু মার্কিন সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন: কেউ যদি ইরানে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান দশটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হেনে তার জবাব দিবে।    #

পার্সটুডে/এমএইচ/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।       

ট্যাগ