ইরাকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পার্লামেন্ট নির্বাচন: কারচুপি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ
(last modified Mon, 11 Oct 2021 10:24:57 GMT )
অক্টোবর ১১, ২০২১ ১৬:২৪ Asia/Dhaka

গতকাল থেকে ইরাকে পঞ্চম পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে এবং আজ এ ভোট গ্রহণ শেষ হবে। এ নির্বাচনে প্রায় আড়াই কোটি ভোটার অংশ নিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৭৮৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী, ৯৫৯ জন বিভিন্ন জোটের পক্ষ থেকে এবং ১৫০১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইরাকের পার্লামেন্টে মোট আসন সংখ্যা ৩২৯টি।

ইরাকে এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে তিনটি বিষয় অর্থাৎ নিরাপত্তা বিধান, ভোট কারচুপি রোধ ও সবার অংশ গ্রহণের ওপর বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় ইরাকে এবার নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেক ভালো হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি ছিল নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে সিরিয়ার সীমান্ত এলাকায় উগ্র দায়েশ বা আইএস সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কাকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিল। এ কারণে নিরাপত্তা বাহিনীর আড়াই লাখ সদস্যকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে মোতায়েন করা হয়েছে। ইরাকের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ থেকে বোঝা যায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ চলছে যা কিনা পার্লামেন্ট নির্বাচনে দেশটির সরকারের জন্য বিরাট সাফল্য।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে এবারের সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপি বিষয়ে ব্যাপক আশঙ্কা বিরাজ করছিল। বেশ কয়েকটি দল ও সংগঠন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে কারচুপির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিলেন। ইরাকি পার্লামেন্টের প্রতিনিধি নাদি শাকের এ ব্যাপারে বলেছেন, নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমি

আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে নির্বাচনে অর্থের ব্যাপক প্রভাব। কারণ ভোটারদেরকে অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট কিছু বিশেষ প্রার্থীকে ভোট দিতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এমনকি কোনো কোনো প্রার্থী অনেক আগে থেকেই কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনে জেতার জন্য কাজ শুরু করেছে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমি কিছুদিন আগে এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'কিছু সংখ্যক রাজনীতিবিদ এবং বর্তমান ও সাবেক কিছু পার্লামেন্ট সদস্যের প্রতি সমর্থন দিয়ে অর্থ লগ্নিকারী একটি কুচক্রী মহল স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের ওপর যে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছিল সেটাকে ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে।' নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় ইরাকের প্রধানমন্ত্রী গতমাসে এও বলেছিলেন, নির্বাচনে কারচুপির যেকোনো প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে এবং এটাকে স্বচ্ছ করার জন্য জাতিসংঘের তত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রকৃতপক্ষে, কারচুপি নিয়ে উদ্বেগ নিরসনের জন্যই ইরাক সরকার আন্তর্জাতিক তত্বাবধানে নির্বাচনের আয়োজন করে। প্রায় এক হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নির্বাচন তত্বাবধান করছেন।

এবারের নির্বাচনে আরেকটি যে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে সেটা হচ্ছে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি। বিগত নির্বাচনের তুলনায় এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এ কারণে ইরাকের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ সিস্তানি নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এদিকে, সিস্তানির নেতৃত্বে ইরাকের সর্বোচ্চ ধর্মীয় পরিষদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এখন পর্যন্ত পার্লামেন্ট নির্বাচনে বহু সংখ্যক ভোটার অংশ নিয়েছে। ইরাকে আর্থ-সামাজিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে জনমনে অসন্তোষ দেখা দেয়ায় ভোটার উপস্থিতি কম হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।#   

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ