আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্বেগ
তালেবান সরকার আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ করার ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারপরও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক মহল আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান চার্লস মিশেল কিরঘিজস্তানের প্রেসিডেন্ট সাদির জাবারোভের সঙ্গে এক সাক্ষাতে বলেছেন: আফগানিস্তানের সমস্যা সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ তারা আফগানিস্তানে চলমান সমস্যার স্বরূপ ভালোভাবে উপলব্ধি করে। আফগানিস্তান যেন কোনোভাবেই সন্ত্রাসের আস্তানায় পরিণত না হয় সে বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। নিরাপত্তা ইস্যু এবং আফগানিস্তানের ফলে সৃষ্ট হুমকি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে উদ্বেগের গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সুরুশ আমিরি বলেছেন: পশ্চিমা দেশগুলো নিজেরাই আফগানিস্তানে নিরাপত্তাহীনতার সংকট তৈরি করেছে। এখন তারা যে-কোনো উপায়েই হোক নিজেদেরকে এ অঞ্চলের সংকট থেকে মুক্তি দেওয়ার ত্রাণকর্তা সাজতে চায়। এ কারণেই আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠিগুলোর তৎপরতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি পশ্চিমা দেশগুলোর মিডিয়ায় নিত্যদিনের খবরের বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
তবে ইতোমধ্যে যে বিষয়টির প্রতি আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ মহলের দৃষ্টি পড়েছে তা হলো সীমান্ত সমস্যা সমাধানসহ দ্বিপক্ষীয় কিংবা বহুপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে তালেবান সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করা। এ কারণে তালেবান সরকারের ওপর বহুলাংশেই অনাস্থা বেড়ে গেছে সবার। তাজিকিস্তানে সীমান্ত সামরিক ঘাঁটি শক্তিশালী করা এবং 'তাজিকিস্তান মধ্য এশিয়ার সীমান্ত চৌকি' বলে রাশিয়ার কর্মকর্তাদের দেওয়া বক্তব্য এক্ষেত্রে বিবেচনার দাবি রাখে।
আফগানিস্তানের জনগণ আশা করেছিল নয়া তালেবান সরকার তাদের পূর্ববর্তী শাসনামলের ভ্রান্ত আচরণ-যে আচরণের জন্য পতন হয়েছিল-তা থেকে শিক্ষা নেবে। তালেবানি শাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে তারা নতুন এবং জনমুখী নীতি গ্রহণ করবে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক জোরদার করবে। কিন্তু তারা তা করে নি বরং তার বিপরীত নীতিই অনুসরণ করছে। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় আফগানিস্তানের ভবিষ্যত উন্নয়ন সুদূর পরাহত।
বিশিষ্ট রাজনীতি বিশ্লেষক আমিন ফারজাদ এ প্রসঙ্গে বলেছেন: তালেবান গত দুই বছরে কেবলমাত্র প্রতিশ্রুতিই দিয়েছে। এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের জনগণ কিংবা আন্তর্জাতিক সমাজ আফগানিস্তানে সামাজিক কঠোরতা ছাড়া কোনো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হতে দেখে নি।#
পার্সটুডে/এনএম/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।