জুলাই ১২, ২০২৩ ১৪:০৭ Asia/Dhaka

ন্যাটোতে সুইডেনের সদস্যপদের বিষয়ে তুরস্কের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে অনেক রাজনৈতিক উত্তেজনার পর অবশেষে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন।

ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টোলটেনবার্গ লিথুয়ানিয়ায় ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এ খবর দিয়ে বলেছেন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট সুইডেনের সদস্যপদ প্রাপ্তির বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তুরস্কের সংসদে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সামরিক ইস্যুতে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে এসে সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আবেদন করে। তুরস্ক তাতে অসম্মতি জানায়। আঙ্কারার অভিযোগ ছিল- সুইডেন বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট এরদোগান আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, তাদের শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ন্যাটোতে সুইডেনের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সম্মতি দেবে না আঙ্কারা। এরপর থেকেই ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো তুরস্ককে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা জোরদার করে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এই বিষয়ে সর্বশেষ যে বক্তব্য রেখেছেন তাহলো- পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তুরস্কের অন্তর্ভুক্তির পথ খুলে দিতে হবে, আর তাহলেই তার দেশের পার্লামেন্ট ন্যাটোতে সুইডেনের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে। এর আগে তিনি সুইডেনে পবিত্র কুরআন অবমাননার ঘটনার কথা উল্লেখ করেও দেশটির ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।

জার্মানি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এরিমধ্যে ঘোষণা করেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে তুরস্কের অন্তর্ভুক্তির আবেদনের সঙ্গে ন্যাটোতে সুইডেনের অন্তর্ভুক্তির আবেদনের কোনো সম্পর্ক নেই।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলো সুইডেনকে দ্রুত ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে চায়।

আঙ্কারার অবস্থান পরিবর্তনের কারণে ন্যাটোতে সুইডেনের অন্তর্ভুক্তির পথে আর বাধা থাকছে না। এ অবস্থায় আঙ্কারা ও মস্কোর সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।

রুশ সরকার গত কয়েক মাসে বহু বার ইউরোপের পূর্বাংশে ন্যাটোর বিস্তৃতির বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিছু দিন আগে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর হিটলার ইউরোপের বিশেষ কিছু দেশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। বর্তমানে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঠিক একই পদ্ধতি অনুসরণ করছে। তারা এখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য একটি আধুনিক জোট গড়ে তুলছে।

লেবাননি বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক ও বিশ্লেষক রাগিদা দারগাম এ সম্পর্কে বলেছেন, ন্যাটোতে সুইডেনের অন্তর্ভুক্তির কারণে বাল্টিক সাগরে রাশিয়া আরও বেশি ঘেরাও হয়ে পড়বে। এই ঘটনা সামরিক, যোগাযোগ ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে হিসাব-নিকাশ পাল্টে দেবে।#

পার্সটুডে/এসএ/১২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ