আগস্ট ৩০, ২০২৩ ১৩:৩২ Asia/Dhaka

ব্রিকস গ্রুপে ৬টি নতুন দেশ যুক্ত হওয়ায় ১১টি দেশের এই সংস্থাটি বৈশ্বিক পর্যায়ে একটি নতুন মেরুকরণ তৈরি করবে।

গত সপ্তায় দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের অর্থনৈতিক অঞ্চল স্যান্ডটনে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাশিয়া, চীন, ব্রাজিল ও ভারতের নেতাদের সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ইরান, আর্জেন্টিনা, সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইথিওপিয়াকে এই গ্রুপের সদস্য হিসেবে নেয়ার কথা ঘোষণা করেন। ২০২৪ সালের শুরুতে ওই ৬ নতুন সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই গ্রুপে যোগ দেবেন। এই ঘটনার পর বৈশ্বিক পর্যায়ে ব্রিকসের অবস্থান নিয়ে নানা রকমের বিশ্লেষণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

একটি বিশ্লেষণ হল যে ৬টি নতুন দেশ ব্রিকসে যোগ দিয়েছে  প্রত্যেকটি দেশ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং ব্রিকস গ্রুপের মাধ্যমে বিশ্ব ব্যবস্থায় একটি নতুন মেরুকরণ তৈরি হতে পারে। এমন দৃষ্টিভঙ্গির প্রধান কারণ হল, বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্রিকসের পুরাতন এবং নতুন সদস্যদের একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ রয়েছে অন্যদিকে বিশ্ব ব্যবস্থায় একতরফা রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সবাই। ব্রাজিলের এফজিভি ডিরেইটো এসপি ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ সালেম নাসের বলেছেন, ব্রিকসে যোগদানের আবেদন থেকে প্রমাণ হয় বিশ্বব্যাপী ক্ষমতার ভারসাম্যে ক্রমাগত পরিবর্তন হচ্ছে। ব্রিকস হল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শক্তির একটি নতুন মেরু যা উত্তর আমেরিকার আধিপত্যের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তুর্কি বিশ্লেষক, মেহমেত আলী গুলার বিশ্বাস করেন ব্রিকস হল নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ এবং আমেরিকার শক্তি ও রাজনৈতিক ক্ষমতার যুদ্ধে একটি ভারী আঘাত করেছে৷

আরেকটি দিক হল ব্রিকসের  পুরাতন এবং নতুন উভয় সদস্যই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈশ্বিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাখে। জ্বালানি ক্ষেত্রে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। কেননা সৌদি আরব, রাশিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত। জ্বালানি ক্ষেত্রে এই দেশগুলোর অভিন্ন মতামত পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য নেতিবাচক পরিণতি বয়ে আনতে পারে যা বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলবে। এছাড়া ব্রিকসের সম্প্রসারণ বিশ্ব রপ্তানিতে এই জোটের অংশীদারিত্ব শতকরা ২০,২ ভাগ থেকে বেড়ে ২৫.১ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। গ্লোবাল ব্যাংকিং গ্রুপ গোল্ডম্যান সক্স মনে করে ২০৫০ সালের মধ্যে ব্রিকস-য়ের সদস্য দেশগুলোর অর্থনীতি বিশ্বের ধনী দেশগুলির অর্থনীতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্রিকস জি-সেভেন জোটের প্রতিন্দ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে। জি-সেভেনের সদস্য হলো আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং ব্রিটেন।  বিশ্বের কৌতূহলী দৃষ্টি এখন তাই ব্রিকসের দিকে।#

পার্সটুডে/এনএম/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ