অক্টোবর ০৫, ২০২৩ ১৪:১৩ Asia/Dhaka

ইসলামাবাদ সরকার পাকিস্তান থেকে অবৈধ আফগান শরণার্থীদের চলে যাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। চলতি মাসের শেষ নাগাদ অবৈধ আফগান শরণার্থীদের পাকিস্তান ছেড়ে যেতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারের সভাপতিত্বে পাকিস্তানের নিরাপত্তা, রাজনৈতিক ও আইন শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে পাকিস্তানের সেনা কমান্ডারসহ সেদেশের রাজনৈতিক ও সামরিক পদস্থ কর্মকতাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকে অবৈধ আফগান শরণার্থীদের ব্যাপারে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগেও পাকিস্তান সরকার অবৈধ আফগান অভিবাসীদের বের করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তালেবানসহ কোনো কোনো মহল প্রতিবাদ জানিয়েছিল। সে কারণেই এবার পাকিস্তান অবৈধ আফগান অভিবাসীদের এ ধরনের আল্টিমেটাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে রাজনৈতিক ও সামরিক উচ্চ-পর্যায়ের জাতীয় বৈঠক করে। অবৈধ আফগানদের পাকিস্তান ত্যাগ করাকে একটি জাতীয় সিদ্ধান্ত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। কেননা পাকিস্তানে অবৈধ আফগান অভিবাসীদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিতে সামাজিক ও নিরাপত্তা সমস্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।  

পাকিস্তানে আফগান শরণার্থী

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে পাকিস্তান তাদের দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে যে-কোনো সিদ্ধান্তই নিতে পারে। কারণ পাকিস্তান সরকার বিশ্বাস করে সে দেশে দশ লাখেরও বেশি অবৈধ অভিবাসীর উপস্থিত রয়েছে তাদের দেশে। এদের উপস্থিতির কারণে মানব ও মাদক পাচার বৃদ্ধি, আত্মঘাতী হামলাসহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সংকটময় পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী বারবার অভিযোগ করে এসেছে যে, আফগানদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবানের হামলার পাশাপাশি আত্মঘাতী হামলায় ওইসব অবৈধ অভিবাসীর অংশগ্রহণ রয়েছে।

পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ বলছে, তেহরিক-ই-তালেবান সন্ত্রাসীরা এবং অন্যান্য সহিংস ব্যক্তিরা বিচিত্র ছদ্মবেশে পাকিস্তানে প্রবেশ করে। কখনো রোগী সেজে কিংবা উদ্বাস্তুদের সঙ্গী হিসেবে তারা ঢুকেছে। এটা যে-কোনো দেশের জন্য খুবই ঝামেলার।

সম্প্রতি পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা বিশেষ করে ধর্মীয় স্থাপনায় হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। কেবল পাকিস্তানই নয় এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও একইরকম হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এরকম বহু কারণে পাকিস্তান এখন অবৈধ আফগান শরণার্থীদের চলে যাবার ব্যাপারে আল্টিমেটাম দিতে বাধ্য হয়েছে।

দুটি বিষয় বিবেচনা করার সময় হয়েছে। প্রথমত আফগানিস্তানে এখন স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা আছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সেখানকার নাগরিকরা এখন আর উদ্বাস্তু কিংবা অভিবাসী হিসেবে বিবেচিত হয় না। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে তালেবানকে আফগানিস্তান নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে।

দ্বিতীয়ত, জাতিসংঘেরও দায়িত্ব হলো আফগান শরণার্থীদের স্বদেশে ফেরার জন্য আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করা।#

পার্সটুডে/এনএম/৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ