মে ০৯, ২০২৪ ১৭:০৯ Asia/Dhaka
  • শান্তির গ্যাস পাইপলাইন: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি চায় ইরান, আমেরিকা চায় উত্তেজনা
    শান্তির গ্যাস পাইপলাইন: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি চায় ইরান, আমেরিকা চায় উত্তেজনা

ভারত ও পাকিস্তানে ইরানি গ্যাস সরবরাহের জন্য নির্মিত পাইপ লাইনকে 'শান্তির গ্যাস পাইপ লাইন' হিসেবে নামকরণের কারণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত এই পাইপ লাইনের মাধ্যমে এই দুই দেশের মধ্যে সংযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখা।

ইরানের প্রেসিডেন্টের পাকিস্তান সফরকে কেন্দ্র করে আবারও দুই দেশের মধ্যে শান্তি পাইপ লাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা না করা নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। ১৯৯০ সাল থেকে আরব আমিরাতসহ আরো কয়েকটি দেশের অংশগ্রহণে ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোর সাথে ইরানের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিস্তারে 'শান্তি পাইপ লাইন' নামে এই বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পাদিত চুক্তির ভিত্তিতে, ইরান ২৫ বছরের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের কাছে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্ধারিত মূল্যে তার গ্যাস বিক্রি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

এর পরের বছরগুলোতে, এমনকি তুর্কমেনিস্তান এবং কাতারও এই বড় প্রকল্পের মাধ্যমে ইরানের সাথে যুক্ত হয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাধাসহ বিভিন্ন কারণে এই সমস্ত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হতে পারেনি।

মূলত, এই লাইনটিকে 'শান্তি' নামকরণের কারণ ছিল যাতে এর মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা সম্ভব হয়। যদিও ওই সময় কাশ্মিরসহ আরো কিছু ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

শান্তির পাইপ লাইন

এই উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে দুই দেশকে একেবারে বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছিল এবং উভয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক ক্লাবে প্রবেশ করে।

ইরান মনে প্রাণে বিশ্বাস করতো যে এই পাইপ লাইন এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। আবার কেউ কেউ মনে করেন যে, এই পাইপ লাইনের নাম 'শান্তি' রাখার প্রয়োজন নেই। কেননা আমেরিকার বিশেষ চাপের কারণে ভারত এই প্রকল্প থেকে সরে এসেছে। আমিরাত এই গ্যাস পাইপ লাইনের জন্য ১০০ কোটি ডলারের প্রাথমিক বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়েছিল। ভারত এই প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ার পর পরিকল্পনা প্রায় কোমায় চলে যায়। ইরান অবশ্য তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবং সদিচ্ছা দেখিয়ে পাকিস্তানের সীমান্ত পর্যন্ত গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। এটা স্পষ্ট যে পাকিস্তান, সামান্য ইচ্ছা  শক্তির মাধ্যমে, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারে এবং এই অঞ্চলে সে তার প্রভাব ও সক্ষমতাকেও কাজে লাগাতে পারে। বিশেষ করে সব পক্ষের জন্য সমান সমান লাভের পরিবেশ তৈরি করে পাকিস্তান বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে।

যাইহোক, অনেক চাড়াই উৎরাই পেরিয়ে আশা করা যায় যে, পাকিস্তান এই গ্যাস পাইপ লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে ফের উদ্যোগী হওয়ার পর ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও তুর্কমেনিস্তানসহ আরো অন্যান্য দেশ এই পাইপলাইনে প্রবেশ করবে যা আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরাট  অবদান রাখবে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ