ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ থামানোর কয়েকটি উপায়
https://parstoday.ir/bn/news/world-i137734
গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান গণহত্যা বা জাতিগত শুদ্ধি অভিযান শুরুর আগে ফিলিস্তিনি জেলেদের দিকে তাজা গুলি নিক্ষেপ করত ইসরাইলি টহল বোটগুলো এবং ফিলিস্তিনি জেলেদের গ্রেফতার করত।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
মে ১৭, ২০২৪ ২০:৫৬ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলের জ্বালানী, পরিবহন ও পণ্য রপ্তানি খাতে নিষেধাজ্ঞা  জরুরি
    ইসরাইলের জ্বালানী, পরিবহন ও পণ্য রপ্তানি খাতে নিষেধাজ্ঞা জরুরি

গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান গণহত্যা বা জাতিগত শুদ্ধি অভিযান শুরুর আগে ফিলিস্তিনি জেলেদের দিকে তাজা গুলি নিক্ষেপ করত ইসরাইলি টহল বোটগুলো এবং ফিলিস্তিনি জেলেদের গ্রেফতার করত।

ইসরাইলি টহল বোটগুলো গাজার উপকূল বা তীরের কাছে টহল দিত অবৈধভাবে যাতে শেভরন কোম্পানির প্লাটফর্মগুলো রক্ষা করা যায়। 

২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ১০০ কোটি লিটার জেট জেপি-৮ জ্বালানি দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় যে জ্বালানীর মূল্য ছিল ৩০০ কোটি ডলার। 

গত বছরের (২০২৩) অক্টোবর মাসে ইসরাইলকে জেট জেপি-৮ দেয়ার জন্য সেখানে পাঠানো হয়েছিল তিনটি মার্কিন ট্যাংকার (তথ্য সূত্র: ডাটা ডেস্ক)। এইসব জ্বালানীর যোগানদাতা হল ভ্যালেরো নামক জ্বালানী শোধনাগার যা রয়েছে ট্যাক্সাস অঙ্গরাজ্যের কর্পাস ক্রিস্টি নামক উপকূলীয় শহরে। অন্য একটি চালান, ওভারসিজ সান কোস্ট নামক জাহাজের মাধ্যমে ভূমধ্যসাগরের পথ ধরে ইসরাইলে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।   ইসরাইলি যুদ্ধ-অপরাধ বন্ধ করতে এই জেট জ্বালানীর যোগান বন্ধ করা ও এসব পরিবহনকারী জাহাজগুলোকে থামিয়ে দেয়া জরুরি। 

স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা বন্দর-শ্রমিকদের মাধ্যমে ও ট্রেড-ইউনিয়নগুলোকে রাজি করিয়ে বন্দরে এইসব জাহাজের নোঙ্গর করা ঠেকিয়ে দিতে পারেন এবং তাতে ইসরাইলের বর্বর হামলা বন্ধের পথ সুগম হবে।

 এ ছাড়াও একই লক্ষ্যে ইসরাইলের জ্বালানী খাতগুলোতে পুঁজি বিনিয়োগ বন্ধ করাও জরুরি। গত এক দশকে ইসরাইল গ্যাস ও ফিলিস্তিনের চুরি করা পানির বড় ধরনের রপ্তানিকারক হওয়ার চেষ্টা করেছে। এইসব প্রকল্পের পেছনে মার্কিন সরকারের মদদ যুক্ত করা হয়েছে যাতে ইসরাইল হয়ে ওঠে বিশ্বের জ্বালানী নিরাপত্তার এক কৌশলগত অঞ্চল এবং এখান থেকে অর্জিত রপ্তানি আয়কে অর্থনৈতিক খাতে ব্যবহার করা যায় ও যা বার্ষিক সামরিক বাজেটকে ২৩ দশমিক চার বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতেও সহায়তা যোগাবে। 

ইসরাইলের জ্বালানী খাতগুলোতে পুঁজি বিনিয়োগ বন্ধ করা

গাজার উপকূলে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ১২টি কোম্পানি কাজ করছিল, যারা এ কাজের অনুমতি পায় ইসরাইলের কাছ থেকে গত অক্টোবর (২০২৩) মাসে, অথচ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এসব অঞ্চল ফিলিস্তিনের অঞ্চল।  এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে বিপি বা ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম, ই এন আই ও ডানা পেট্রোলিয়াম কোম্পানি। এইসব কোম্পানি ইসরাইলের উপনিবেশবাদী অর্থনীতিতে নজিরবিহীন মাত্রায় পুঁজি বিনিয়োগ করেছে। আর এভাবে তারা ফিলিস্তিনের প্রাকৃতিক সম্পদ লুটের চেষ্টায় জড়িত হয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। তাই ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ বন্ধের জন্য এইসব কোম্পানির এ ধরনের অবৈধ পুঁজি-বিনিয়োগ বন্ধ করাও জরুরি।  

এরিমধ্যে ব্রিটেনের একটি গ্রুপ -যার নাম ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্রিটেনের জ্বালানী নিষেধাজ্ঞা- গ্রুপটি ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম কোম্পানিকে টার্গেট করেছে এবং জনগণের মধ্যে 'শেভরন কোম্পানিকে ফিলিস্তিনের বাইরে আনা'- শীর্ষক আন্দোলনের কাজ শুরু করেছে। এসব আন্দোলনে জনমত গড়ে উঠলে ইসরাইলের সঙ্গে এই কোম্পানিগুলোর অবৈধ ও উপনিবেশবাদী সহযোগিতা ফাঁস হওয়ার কারণে তাদের তথা মালিক পক্ষের জন্য রাজনৈতিক ক্ষতি বয়ে আনবে।

ছাত্র ও গণ-আন্দোলনগুলোকে একই লক্ষ্যে ইতালির সরকারি কোম্পানি ইনি, ফ্রান্সের টোটাল ও গ্রিসের এনার্জিন কোম্পানির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে, কারণ এই কোম্পানিগুলো ফিলিস্তিনের সাগর থেকে গ্যাস চুরির চেষ্টা করছে।  একই অবস্থান নিতে হবে ইউরোপীয় জোটের বিরুদ্ধে। কারণ এই জোট ইসরাইল থেকে গ্যাস কিনেছে এবং বিনিময়ে ইসরাইলি গণহত্যার সহায়ক নানা চালান পাঠিয়েছে। ইসরাইলকে অপরাধযজ্ঞ থেকে বিরত রাখতে ইসরাইলি গ্যাসবাহী জাহাজগুলোকে ঠেকিয়ে দিতে হবে যাতে সেগুলো ইউরোপের বন্দরগুলোতে ভিড়তে না পারে।

এ ছাড়াও ইসরাইলের ওপর আরোপ করতে হবে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও ইসরাইলি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা। এইসব লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে ডিজরাপ্ট পাওয়ার নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ। এইসব আন্দোলন এক বৈশ্বিক আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে ক্রমেই। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।