জুন ২১, ২০২৪ ১৯:০০ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পালাচ্ছেন পুঁজিপতিরা

পার্সটুডে-গাজার যুদ্ধ ও ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ চলতে থাকায় অধিকৃত ফিলিস্তিন (ইসরাইল) থেকে ইহুদিবাদীদের বিপরীত অভিবাসন ও পুঁজি প্রত্যাহারের ঘটনা নজিরবিহীনভাবে বাড়ছে।

জানা গেছে ২০২৩ সালে অধিকৃত অঞ্চল থেকে পুঁজি বিনিয়োগকারীদের পলায়নের চেষ্টা ২৩২ শতাংশ বেড়েছে। 

বিগত বছরগুলোতে ইসরাইল তার অপরাধযজ্ঞের সাফাই দিয়ে আসার চেষ্টা করেছে। কিন্তু গাজার যুদ্ধ ইসরাইলের আসল চেহারা পশ্চিমা নাগরিকদের কাছেও অতীতের তুলনায় অনেক বেশি স্পষ্ট করায় গত কয়েক দশকে এই প্রথমবারের মত ইসরাইল কোটিপতিদের জন্য দশটি সর্বোচ্চ আকর্ষণীয় স্থান বা লক্ষ্যের তালিকা থেকেও বাদ পড়েছে। 

বিজিনেস ইনসাইডারের ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ২০২৩ সালে অধিকৃত অঞ্চল থেকে পুঁজি বিনিয়োগকারীদের পলায়নের চেষ্টা ২৩২ শতাংশ বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে হেনলি এন্ড পার্টনার্স কোম্পানির রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলমান যুদ্ধ নিরাপদ স্থান হিসেবে ইহুদিবাদী ইসরাইলের চিত্রকে যে শুধু ধ্বংসই করেছে তা নয়, একইসঙ্গে এ যুদ্ধ ইসরাইলের অর্থনৈতিক সাফল্যগুলোর জন্যও হুমকিতে পরিণত হয়েছে।  

অধিকৃত ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ এই কোম্পানির ভোক্তাদের শীর্ষস্থানীয় উপদেষ্টা ড্যানি মার্কনি গাজায় জাতিগত শুদ্ধি অভিযান তথা গণহত্যা অভিযানের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরাইল দিনকে দিন বেশি নিঃসঙ্গ হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, অব্যাহত যুদ্ধ সেইসব ধনী বসতি স্থাপনকারী ইহুদিবাদীদের উদ্বেগকে তীব্রতর করেছে যাদের ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো স্বার্থ রয়েছে ইসরাইলের বাইরে। কারণ অব্যাহত যুদ্ধ তাদের এইসব স্বার্থকে বিপদের মুখোমুখি করেছে। 

গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় কোনো কোনো দেশ তেলআবিবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আর এ বিষয়টি ইসরাইলি পাসপোর্ট নিয়ে সফর করাকে দিনকে দিন বেশি কঠিন ও বিপজ্জনক করে তুলছে ঠিক যেভাবে বর্তমানে নানা স্থানে যাতায়াত ও যোগাযোগ ইহুদিবাদীদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। 

হেনলি এন্ড পার্টনার্স কোম্পানির এই সিনিয়র উপদেষ্টা কোটিপতিদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দশটি বড় স্থান বা লক্ষ্যের তালিকা থেকে ইসরাইলের বাদ পড়ার ঘটনাকে ভূমিকম্প-সমতুল্য ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন। 

গাজার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ ও প্রায় এক লাখ ব্যক্তি আহত হয়েছে। ইসরাইলের গণহত্যামূলক বা জাতিগত শুদ্ধিমূলক হামলাগুলোর কারণে ও নানা ধরনের অবরোধের কারণে গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটের পাশাপাশি, পানি, ওষুধ ও জ্বালানীর সংকটও দেখা দিয়েছে। ফলে গাজার শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের অবস্থা আগের চেয়েও বেশি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। 

[উল্লেখ্য ইহুদিবাদী ইসরাইলের কোম্পানিগুলো ছাড়াও শিশু-ঘাতক এই অবৈধ সরকারের ব্যবসায়িক শরিক বা পার্টনার কোম্পানিগুলোও এখনও বিভিন্ন স্থানে বয়কট ও গণ-নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইসরাইলের প্রতি পক্ষপাতের কারণে গুগলের মত কোম্পানিকেও বর্জনের ডাক দিচ্ছেন ফিলিস্তিনের সমর্থকরা।

ইসরাইলগামী জাহাজ বা ইসরাইলের সহযোগীদের জাহাজগুলোও এখন লোহিত সাগর বা আশপাশের অঞ্চলে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারছে না ইয়েমেনের সামরিক হামলা ও নিষেধাজ্ঞার কারণে। ফলে ইসরাইলের সঙ্গে অর্থনৈতিক যোগাযোগ বা লেনদেন রক্ষা করাও বেশ ব্যয়বহুল ও বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে। ইয়েমেনের সেনারা প্রায়ই ইসরাইলগামী বা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে। ফলে আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে ইসরাইলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হচ্ছে ইসরাইল সম্পর্কিত জাহাজগুলোকে কিংবা আকাশপথে ইসরাইলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। আর এতে করে ইসরাইলের সঙ্গে মালামাল আদান-প্রদানের খরচ বেড়ে যাচ্ছে বহু গুণ। ইসরাইলের হাইফা ও ইলিয়ত বন্দরেও প্রায়ই আঘাত হানছে ইরাক ও ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা। ফলে ইসরাইল ক্রমেই তার বাণিজ্য শরিক ও বাণিজ্য যোগাযোগের সুযোগ-সুবিধাগুলো হারাচ্ছে।]   #

পার্সটুডে/এমএএইচ/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

          
 

ট্যাগ