ইরান পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত হোক: প্রত্যাশা ৭০ ভাগ মানুষের
(last modified Wed, 26 Jun 2024 12:04:29 GMT )
জুন ২৬, ২০২৪ ১৮:০৪ Asia/Dhaka
  • ইরান পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত হোক: প্রত্যাশা ৭০ ভাগ মানুষের

পার্স টুডে : পশ্চিমা দেশগুলোর অব্যাহত চাপ ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ৭০ ভাগেরও বেশি ইরানি চান যে, তাদের দেশ পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত হোক। নতুন এক জরিপে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

২০১৫ সালে বারাক ওবামার শাসনামলে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় জাতিগোষ্ঠীর পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয় যা জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত। কিন্তু  ২০১৮ সালে ওবামার উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেন।

ট্রাম্পের উত্তরসূরি জো বাইডেন ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের আগে প্রচারণায় একাধিকবার আমেরিকাকে পরমাণু সমঝোতায় ফিরিয়ে আনার আগ্রহ প্রকাশ করলেও ক্ষমতাগ্রহণের চার বছর পরও তিনি এ ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা পেশ করেননি। পরমাণু সমঝোতার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এখনও কোনো স্পষ্ট নীতি নেই এবং কোনো যৌক্তিক অবস্থানও নেই।

পার্স টুডে জানিয়েছে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে মার্কিন নীতির সমালোচনা করে "দ্য আমেরিকান কনজারভেটিভ" ম্যাগাজিন লিখেছে, যদি ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা অস্বীকার করে সাফল্যের পরিমাপ সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে এই নীতি ব্যর্থ হয়েছে। কারণ ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে।

নিবন্ধটির লেখক 'এলদার মামেদভ' জোর দিয়ে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর হুমকি অব্যাহত থাকলে ইরান 'পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি' বা এনপিটি ত্যাগ, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শকদের বহিষ্কার এবং পরমাণু অস্ত্র তৈরি সক্ষমতা বাড়াতে বাধ্য হতে পারে।

স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের পদক্ষেপ ইরানের অভিজাত শ্রেণি এবং সাধারণ মানুষের সমর্থন পেতে পারে। কারণ তারা তাদের দেশ এবং অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের অযৌক্তিক জুলম-নিপীড়ন দেখে আসছে। সাম্প্রতিক জরিপ অনুসারে- প্রায় ৭০ শতাংশ ইরানি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তাদের দেশের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সমর্থন করে।

আমেরিকাভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক কেলসি ডেভেনপোর্টের মতে, ইরান যদি পশ্চিমা চাপের প্রতিশোধ নিতে পরমাণু বোমা তৈরির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এটি করতে এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। আর পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে ইরানের ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লাগবে।

লেখক তার নিবন্ধে প্রশ্ন তুলেছেন, ইরান যদি পরমাণু বোমা তৈরি করে তাহলে কি আমেরিকা তা মেনে নেবে নাকি এটি প্রতিরোধে সামরিক পদক্ষেপ নেবে?

"দ্য আমেরিকান কনজারভেটিভ" ম্যাগাজিনের লেখক বলেছেন, প্রথম বিকল্পটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো প্রেসিডেন্টের জন্য রাজনৈতিকভাবে বিবেচনায় অসম্ভব। আর দ্বিতীয় অর্থাৎ সামরিক পদক্ষেপের জন্য একটি পূর্ণ-মাত্রার হামলা প্রয়োজন কারণ ইরান ইরাকের চেয়ে চারগুণ বড় একটি দেশ। যে দেশের সেনাবাহিনী খুব শক্তিশালী এবং মিত্র ও প্রক্সিগুলো সংঠনগুলোর রয়েছে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও বিশাল সামরিক, প্রযুক্তিগত ও মানবশক্তি; যা সাদ্দামের ছিল না।

নিবন্ধে আরও লেখা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতেও দেখা যাচ্ছে যে, ইরানকে বিচ্ছিন্ন করার পশ্চিমা চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে। এ অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভালো হবে জিসিপিওএ-তে পুনরায় যোগদান করা বা একটি বাস্তবসম্মত বিকল্প চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা। এটি ওয়াশিংটনকে জাতীয় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলোর দিকে মনোযোগ দিতে সহায়তা করবে। যা ইরানের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন মেক্সিকোর সাথে সীমান্ত ঠিক করা, ইউক্রেনের যুদ্ধের আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য চাপ দেওয়া এবং আমেরিকার একমাত্র ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের দিকে মনোনিবেশ করা।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।