মার্কিন সাজ-সরঞ্জামের ওপর জাপানি সশস্ত্র বাহিনীর নির্ভরতা ও ইয়েনের ওপর ডলারের কর্তৃত্ব
(last modified Tue, 09 Jul 2024 15:04:34 GMT )
জুলাই ০৯, ২০২৪ ২১:০৪ Asia/Dhaka
  • জাপানের সশস্ত্র বাহিনীর প্যারেড পরিদর্শন করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী
    জাপানের সশস্ত্র বাহিনীর প্যারেড পরিদর্শন করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী

গত চার দশকের মধ্যে মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রা ইয়েনের দাম চলতি বছরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সামরিক খাতে সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের যেসব কর্মসূচি জাপান নিয়েছে সেসব দুর্বল হয়ে পড়েছে।  ডলার নিয়ে টোকিওর মাথা ব্যথা শুরু হল এক স্পর্শকাতর সময়ে। 

পার্সটুডে জানিয়েছে, ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রার দাম কমে যাওয়ায় জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হেলিকপ্টার, সাবমেরিন ও ট্যাংকসহ যেসব সামরিক সাজ-সরঞ্জাম আমদানি করে থাকে সেসবের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। 

২০২২ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা নতুন প্রতিরক্ষা নীতির আওতায় তার দেশের সামরিক ব্যয় দ্বিগুণ করার ঘোষণা দেন। ৫ বছরের মধ্যে ৪৩ ট্রিলিয়ন ইয়েন তথা সে সময়কার হিসেব অনুযায়ী ৩১৯ বিলিয়ন (৩১ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার।

কিশিদা সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির এই ঘটনাকে জাপানের ইতিহাসের যুগান্তকারী ঘটনা বলে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু সে সময় প্রতি এক ডলার সমান ১০৮ ইয়েন হিসাব করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তা ১৬১ ইয়েনে পৌঁছেছে। ফলে ট্যাংক, হেলিকপ্টার ও সাবমেরিনসহ মার্কিন সমরাস্ত্রের দাম অনেক বৃদ্ধি পেল। অবশ্য ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে দেখলে ইয়েন দুর্বল হয়ে পড়ায় জাপানের টয়টা মোটরের মত বড় বড় রপ্তানিকারকদের জন্য জাপানের বাইরে তাদের পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে সস্তা ও প্রতিযোগিতামূলক করাটা সহজ হয়েছে। কিন্তু আমদানিকৃত পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বিষয়টি এখন জাপানের অর্থনীতির জন্য চাপ ও সংকটের কারণ হয়ে পড়েছে।

গত তিন বছরে ইয়েনের দাম কমে যাওয়ায় জাপানে খাদ্য ও জ্বালানী সামগ্রীর মত নিত্য-প্রয়োজনীয় জরুরি পণ্যগুলোর দাম বেড়ে গেছে এবং এর ফলে বেড়ে গেছে জাপানি পরিবারগুলোর ব্যয়ভার।

 নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী গত চার দশকের মধ্যে মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রা ইয়েনের দাম চলতি বছরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সামরিক খাতে সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের যেসব কর্মসূচি জাপান নিয়েছে সেসব দুর্বল হয়ে পড়েছে। এরিমধ্যে জাপান সরকার জঙ্গি-বিমানের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে এবং শিগগিরই অর্ডারের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনা হতে পারে বলে কর্মকর্তারা হুশিয়ারি দিয়েছেন।

জাপান তার সামরিক সাজ-সরঞ্জামের বেশিরভাগই মার্কিন কোম্পানিগুলো থেকে কিনে থাকে। কিন্তু ইয়েনের দাম কমে যাওয়ায় জাপানের ক্রয়-ক্ষমতা ব্যাপক মাত্রায় কমে গেছে। 

জাপানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাতোশি মুরিমুতো বলেছেন, “আমাদের প্রতিরক্ষার সামর্থ্য এবং আমাদের আসল লক্ষ্যের মধ্যে এই মুহূর্তে ব্যবধান রয়েছে। ৫ বছরের মধ্যে জাপানের প্রতিরক্ষা-বাজেটের অর্থ-মূল্য শতকরা ত্রিশ ভাগ কমে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।   #

পার্সটুডে/এমএএইচ/০৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন

 

ট্যাগ