নিউইয়র্ক টাইমস: পারস্য উপসাগর সম্পর্কে ট্রাম্পের মন্তব্য ইরানিদের আরও ঐক্যবদ্ধ করেছে
https://parstoday.ir/bn/news/world-i149192-নিউইয়র্ক_টাইমস_পারস্য_উপসাগর_সম্পর্কে_ট্রাম্পের_মন্তব্য_ইরানিদের_আরও_ঐক্যবদ্ধ_করেছে
আমেরিকান সংবাদপত্র দি নিউইয়র্ক টাইমসের মতে,পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুপযুক্ত বক্তব্য ইরানের জনগণকে আরও ঐক্যবদ্ধ করেছে।
(last modified 2025-09-21T15:53:49+00:00 )
মে ১১, ২০২৫ ২৩:০৪ Asia/Dhaka
  • নিউইয়র্ক টাইমস: পারস্য উপসাগর সম্পর্কে ট্রাম্পের মন্তব্য ইরানিদের আরও ঐক্যবদ্ধ করেছে

আমেরিকান সংবাদপত্র দি নিউইয়র্ক টাইমসের মতে,পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুপযুক্ত বক্তব্য ইরানের জনগণকে আরও ঐক্যবদ্ধ করেছে।

নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে লিখেছে, পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে ভ্রমণের আগে ট্রাম্প "পারস্য উপসাগর"র নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছেন। তিনি এমন "অনুপযুক্ত বক্তব্য দিয়েছেন যা ইরানি জনগণকে ক্ষুব্ধ এবং ঐক্যবদ্ধ করেছে।" পার্সটুডে অনুসারে, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে পারস্য উপসাগরের নীল রঙের বিস্তৃতি একই নামে পরিচিত "পার্সিয়ান উপসাগর", ইসলামী বিপ্লবের আগেও ইরানি সরকারগুলো এই জলাশয়ের একমাত্র বৈধ নাম হিসেবে পারস্য উপসাগরকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করেছে তা  উল্লেখ করে আমেরিকান সংবাদপত্রটি লিখেছে,  "দেশে এবং বিদেশে ইরানিরা একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে, এই নামটিকে তাদের জাতীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি মূল অংশ বলে মনে করে। নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে ট্রাম্প একটি জিনিস সহজ করে তুলেছেন। আর তা হলো সমস্ত রাজনৈতিক, আদর্শিক এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীর ইরানিদের মধ্যে ঐক্যের প্রদর্শন। তারা বিবৃতি এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ট্রাম্পের ধারণার নিন্দা করেছেন।  খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে, যখন সাইরাস দ্য গ্রেটের পারস্য রাজবংশ ভারত থেকে পশ্চিম ইউরোপের প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত একটি সাম্রাজ্য শাসন করেছিল তখন থেকে পারস্য উপসাগরের নাম ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়ে আসছে।

এই প্রতিবেদন অনুসারে, প্রাচীন ইরানই এখন আধুনিক ইরান হিসেবে পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে আছে। এর সমগ্র দক্ষিণ উপকূল পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত।

ইসলামী বিপ্লবের আগেও ইরানি সরকারগুলো এই উপসাগরের একমাত্র বৈধ নাম হিসেবে পারস্য উপসাগরকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করেছে উল্লেখ করে আমেরিকান সংবাদপত্রটি লিখেছে,  "দেশে এবং বিদেশে ইরানিরা একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে এবং এই নামটিকে তাদের জাতীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি মূল অংশ বলে মনে করে। নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে ট্রাম্প একটি জিনিস সহজ করে তুলেছেন,  সমস্ত রাজনৈতিক,আদর্শিক এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীর ইরানিদের মধ্যে ঐক্যের প্রদর্শন। তারা বিবৃতি এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ট্রাম্পের ধারণার নিন্দা করেছেন।

ইরানিরা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে?

ট্রাম্পের এই ধারণার নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের সকল শ্রেণীর মানুষ। এমনকি যারা কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন। "এই বিষয়টি রাজনীতির বাইরেও চর্চা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্যালিফোর্নিয়া-আরভাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্সিয়ান স্টাডিজ সেন্টারের ইতিহাসবিদ এবং পরিচালক তৌরাজ দারায়া। ট্রাম্প কি ইরানের সাথে আলোচনা করতে চান, নাকি তিনি ইরানের জাতীয় পরিচয় ধ্বংস করতে চান?

তিনি জোর দিয়ে বলেন যে প্রাচীনকাল থেকেই ইরানিরা তাদের দেশকে "জল এবং স্থল" বলে উল্লেখ করে আসছে। দুটি জলাশয়: দক্ষিণে পারস্য উপসাগর এবং উত্তরে ক্যাস্পিয়ান সাগর - জাতীয়তার প্রতীক হিসেবে ইরানিদের রক্তে গভীরভাবে মিশে আছে।

তেহরানের একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক আহমেদ জেইদাবাদীও X-তে একটি পোস্টে লিখেছেন: "শুধু ট্রাম্পের ইচ্ছা এবং খামখেয়ালির কারণে মেক্সিকো উপসাগর আমেরিকার উপসাগরে পরিণত হবে না, কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যোগ দেবে না, গ্রিনল্যান্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পত্তিতে পরিণত হবে না এবং পারস্য উপসাগরকে একটি মিথ্যা নাম দেওয়া হবে না।"

ইরানের জাতীয় ফুটবল দলও তাদের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম পেজে পারস্য উপসাগরের একটি মানচিত্র এবং জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগ #ForeverPersianGulf দিয়ে এই ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এমনকি ইরানের বিরোধীদলীয় নেতারাও তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

পারস্য উপসাগরের ইতিহাস কী?

"পার্সিয়ান উপসাগর" নামটি ইতিহাস জুড়ে মানচিত্র এবং নথিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাচীন ইরানিদের সময় থেকে যাদের সাম্রাজ্য বিশ্বের একটি বিশাল অংশে আধিপত্য বিস্তার করেছিল সেই গ্রীক এবং ব্রিটিশদের সময় পর্যন্ত।

১৭৬৩ সালে ফরাসি মানচিত্রকার জ্যাক-নিকোলাস ব্লেইন কর্তৃক পারস্য উপসাগরের একটি মানচিত্র। সূত্র: লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস

এর ফলে কি ইরান-মার্কিন পারমাণবিক আলোচনায় প্রভাব পড়বে?

ওমানের মধ্যস্থতায় ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তিন দফা পরোক্ষ আলোচনা করেছে এবং আজ রোববার আবারও তাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

২০১৫ সালে পারমাণবিক আলোচনা দলের সদস্য এবং সাবেক ইরানি কূটনীতিক সাইয়্যেদ হোসেইন মুসাভিয়ান বলেছেন যে ট্রাম্প যদি পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তন করেন তাহলে তা আলোচনার ক্ষতি করবে। ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ দুই পক্ষের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।#

পার্সটুডে/এমবিএ/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।