ওয়াশিংটনে দুই কূটনীতিক নিহত; ইসরাইলি নেতাদের দ্বন্দ্বে রাজনৈতিক সঙ্কট চরমে
-
ইসরাইলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর গোলান
পার্স টুডে: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনে ইসরাইলি দূতাবাসের দুই কর্মীর হত্যাকাণ্ডকে 'ভয়াবহ' বলে অভিহিত করেছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল জিউইশ মিউজিয়াম ও এফবিআই অফিসের কাছে ইসরাইলি দূতাবাসের এক পুরুষ ও এক নারী কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হন।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লিখেছেন, "ওয়াশিংটনের এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড স্পষ্টভাবেই ইহুদিবিদ্বেষের ভিত্তিতে ঘটেছে। এসব ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ হতে হবে! যুক্তরাষ্ট্রে ঘৃণা ও চরমপন্থার কোনো স্থান নেই।"
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে "নজিরবিহীন ও ভয়াবহ" বলে উল্লেখ করে বলেন, "ইহুদিবিদ্বেষ ও ইসরাইলবিরোধী উস্কানির ভয়াবহ দৃষ্টান্ত আমরা আজ দেখলাম। রক্তপাতের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করার ফলাফলও রক্তপাত। আমাদের অবশ্যই একে চূড়ান্তভাবে মোকাবিলা করতে হবে।" তিনি বিশ্বব্যাপী ইসরাইলি কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেন।

ইসরাইলের জাতিসংঘ দূত ড্যানি ড্যানোন একে 'একটি হীন ও ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসী হামলা' বলে অভিহিত করে বলেন, "কূটনীতিক ও ইহুদি সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চরম মাত্রা অতিক্রম করেছে। আমরা নিশ্চিত, মার্কিন কর্তৃপক্ষ এ অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।"
ওয়াশিংটন পুলিশ প্রধান পামেলা স্মিথ এক সংবাদ সম্মেলনে এলিয়াস রদ্রিগেজ নামে ৩০ বছর শিকাগোবাসী এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতারের কথা নিশ্চিত করেন। গ্রেফতারকালে রদ্রিগেজ "ফ্রি প্যালেস্টাইন" (ফিলিস্তিন মুক্ত কর) বলে শ্লোগান দেন। মার্কিন মিডিয়ার খবরে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি গাজাবাসীদের কথা বলে ফিলিস্তিনের পক্ষে এই হামলার দায় স্বীকার করেন।
ইসরাইলি নেতৃত্বের মধ্যে কোন্দল
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসরাইলি নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল তীব্র আকার ধারণ করেছে। জেরুজালেম পোস্টের খবরে বলা হয়, মন্ত্রী আমিহাই এলিয়াহু বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর গোলানকে দায়ী করে বলেন, "এই রক্তের দায় গোলান ও তাঁর সহযোগীদের।" গোলান সম্প্রতি এক মন্তব্যে বলেছিলেন, ইসরাইলি সেনাদের ‘গাজায় ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করে আনন্দ পায়।’

ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির বলেন, "এই হত্যাকারীদের শক্তি আসে কিছু রাজনীতিবিদের কাছ থেকে, যারা আমাদের সৈন্যদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ায়।"
জবাবে গোলান বলেন, "নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার নীতি বিশ্বজুড়ে ইহুদিবিদ্বেষ ও ইসরাইলবিরোধী মনোভাব বাড়াচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী ইহুদিদের জন্য হুমকি।"

সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার চরমপন্থী মন্ত্রীদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, "বেন-গাভির ও স্মোটরিচের মতো সন্ত্রাসীদের থামাতে হবে। তাদের অহংকার ইসরাইলকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।"
ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট ইসহাক হার্জোগ সব পক্ষকে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ইসরাইল নানা ধরনের হুমকির মুখে আছে। এখনই অভ্যন্তরীণ লড়াই থামাতে হবে।"#
পার্সটুডে/এমএআর/২২