ইসরাইলের উন্নয়ন নীতি: ৩ লাখ ভারতীয় কৃষকের আত্মহত্যা
-
ইসরাইলের উন্নয়ন নীতি ৩ লাখ ভারতীয় কৃষককে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে
পার্সটুডে-ইসরাইলের উন্নয়ন নীতির কারণে ভারতীয় কৃষি, ঋণ সংকট এবং জমি দখলের মুখোমুখি হয়েছে, যার ফলে লক্ষ লক্ষ কৃষক আত্মহত্যার পথে পা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে।
বিডিএস (Boycott, Divestment and Sanctions) আন্দোলন এক প্রতিবেদনে ঘোষণা করেছে যে গত দুই দশকে, ভারতে ইসরাইলি উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক প্রচারিত নব্য উদারনৈতিক কৃষি মডেল বাস্তবায়নের কারণে প্রায় ৩ লাখ ভারতীয় কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। ফার্সের বরাত দিয়ে পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ), ১৯৫৮ সাল থেকে ইসরাইলের উন্নয়ন কূটনীতিক শাখা হিসেবে কাজ করে আসছে। সাধারণত "বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার প্রতীক" হিসেবে আইডিএ পরিচিত। তবে, বিডিএস আন্দোলন আইডিইএকে ইসরাইলের দখলদারিত্ব এবং বৈষম্যমূলক নীতিগুলোকে বৈধতা দেওয়ার একটি হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করে।
বিডিএস গঠনের পটভূমি এবং কূটনীতির হাতিয়ার হিসেবে মাশাও'র সমালোচনা
ফিলিস্তিনি নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলো দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বিডিএস আন্দোলনের তিনটি প্রধান অক্ষ রয়েছে: বয়কট, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দখল বন্ধ করার জন্য রাজনৈতিক চাপ। এই আন্দোলন মাশাওর মতো সংস্থাগুলোকে টার্গেট করে যাদের বাহ্যিকভাবে মানবিক লক্ষ্য রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তারা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন অর্জনের জন্য ইসরাইলের নরম কূটনীতির অংশ। ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় মাশাওর কর্মকাণ্ড এখন পর্যন্ত ১৪০ টিরও বেশি দেশে পরিচালিত হয়েছে এবং ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি লোককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তবে, বিডিএস এই কর্মকাণ্ডগুলোকে "গ্রিনওয়াশিং" এর একটি রূপ বলে মনে করে; অন্য কথায়, দরিদ্র দেশগুলোতে পরিবেশগত ও কৃষি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইসরাইল একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি উপস্থাপন করে, একই সাথে ফিলিস্তিনি পরিবেশ ও কৃষিকে ধ্বংস করার ইচ্ছা গোপন করে। সমালোচকরা উল্লেখ করেছেন, যদিও ইসরাইল পশ্চিম তীরের ৯০ শতাংশ জল সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ফিলিস্তিনি কূপ ও ক্ষেত ধ্বংস করে, মাশাউ অন্যান্য দেশে ড্রিপ সেচের মতো প্রযুক্তি রপ্তানি করে "ইসরায়েলি উদ্ভাবন" হিসেবে "মরুভূমিকে সমৃদ্ধ করার" একটি ভাবমূর্তি তৈরি করে।
বিডিএস বলেছে যে, এই নীতিগুলো ইসরাইলের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা মোকাবেলা করার কৌশলের অংশ। স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রকৃত চাহিদা পূরণের পরিবর্তে, মাশাউ এমন প্রকল্প বেছে নেয় যা ইসরাইলের জন্য ইতিবাচক প্রচারণা তৈরি করে এবং ইসরাইলি কোম্পানিগুলির জন্য নতুন বাজার খুলে দেয়, যখন গাজার ফিলিস্তিনিরা একটি অবরোধের মধ্যে বাস করে যার ফলে এর জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
ভারতে মাশাউ; আধিপত্যের হাতিয়ার হিসেবে কৃষি প্রভাব
বিডিএস প্রচারণা এবং কোয়ালিশন ফর দ্য বয়কট অফ ইসরাইল একাডেমিক অ্যান্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্স (বিডিএসসিএ) এর একটি প্রতিবেদনে ভারতে মাশাওর কার্যকলাপকে ইসরাইলের কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অংশ হিসেবে দেখা হয়েছে। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া ইন্দো-ইসরাইলি কৃষি কর্মসূচির আওতায় মাশার সহযোগিতায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সেন্টার অফ এক্সিলেন্স (COE) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কেন্দ্রগুলো ভারতীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে নির্মিত এবং ভারত সরকারের তহবিল দিয়ে পরিচালিত হয়। তবে BDS জোর দিয়ে বলে যে এই কেন্দ্রগুলো কৃষকদের কোনও প্রকৃত সুবিধা প্রদান করে না বরং বেশিরভাগই ইসরাইলি প্রচারণার হাতিয়ার, যার মধ্যে ভিডিও এবং প্রতিবেদন তৈরি করা অন্তর্ভুক্ত।#
পার্সটুডে/এনএম/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।